অনুশীলনে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা।—ফাইল চিত্র।
একটা জয়ই বদলে দিয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। ক্রমবর্ধমান বিতর্ককে আপাতত সরিয়ে রেখে শনিবার চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে বারাসতের বিদ্যাসাগর ক্রীড়াঙ্গনে খেলতে নামছে লাল-হলুদ ব্রিগেড।
চার্চিল ম্যাচে দলে বিশেষ পরিবর্তন আনতে রাজি নন ইস্টবেঙ্গল কোচ। উইনিং কম্বিনেশনে বদল আনতে নারাজ রঞ্জন চৌধুরীরা।
শনিবারের ম্যাচে নামার আগে ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক অর্ণব মণ্ডল বললেন, “শিলং লাজংয়ের বিরুদ্ধে জয়টা খুবই প্রয়োজন ছিল। একটা জয় দলের ফুটবলারদের অনেকটা চাঙ্গা করেছে। তবে, লাজং ম্যাচ অতীত। চার্চিলের বিরুদ্ধে জয়ের জন্যই মাঠে নামব।”
লাল-হলুদের সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরীর গলাতেও চার্চিল ম্যাচের কথা। তিনি বলেন, “ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের চাপ কখনও কমে না। সমর্থকপুষ্ট এই ক্লাবের জয়ই দেখার জন্য অপেক্ষা করে সকলে। ফলে প্রতি ম্যাচই চাপের। প্রত্যাশার এই চাপ নিয়েই প্রতিটি ম্যাচ জিততে হবে।”
তবে, দল জয়ের সরণিতে ফিরলেও ইস্টবেঙ্গল টিম ম্যানেজমেন্টকে চিন্তায় রেখেছে আক্রমণে উইলিস প্লাজা এবং চার্লসের ফর্ম। গোলের সামনে বল পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ প্লাজা-চার্লসরা।
স্ট্রাইকারদের গোল-খরা কাটাতে অভিনব প্র্যাক্টিসও করিয়েছেন খালিদ জামিল।
তবে ভিতর ভিতর স্ট্রাইকারদের নিয়ে চিন্তার চোরাস্রোত থাকলেও দীর্ঘদিন গোলের মধ্যে না থাকা প্লাজার ব্যাপারে এ দিন আশ্বাস দেন অর্ণব।
আরও পড়ুন: পাহাড়েই ধাক্কা মোহনবাগানের
আরও পড়ুন: দল সমস্যায়, টিডি ওয়েস্টউড ব্যস্ত দুবাইয়ে
তাঁর কথায়, “প্লাজা ভাল ফুটবলার। কলকাতা লিগেও ও ভাল খেলেছে। গোলও পেয়েছে। প্লাজা ক্লাস ফুটবলার, গোল পাওয়াটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।”
প্লাজাকে সমর্থন করে পাশে দাঁড়ান রঞ্জনও। তিনি বলেন, “প্লাজা গোল পাচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু অনেক সুযোগ তৈরি করছে ও। গোলের পাসও বাড়াচ্ছে। মেসি-রোনাল্ডোও যদি পর পর তিন ম্যাচে গোল না করে, ওদেরকে নিয়েও কাটাছেঁড়া করা শুরু হয়ে যাবে। প্রতিটি স্ট্রাইকারের জীবনেই এমন সময় আসে। আমরা ওর পাশে আছি। ওকেই এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে হবে।”
এ দিন প্লাজাও বলেন, “আত্মবিশ্বাস আমি হারিয়ে ফেলিনি, কিন্তু ফিনিশিং করতে পারছি না। চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখিনি, আশা করি সামনের ম্যাচেই গোল পাব।”
স্ট্রাইকারদের গোল করার ব্যর্থতার পাশাপাশি গোল হজম করাটাও যেন অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডাররা। তিনটি ম্যাচে চারটি গোল হজম করেছে খালিদ জামিলের দল। গুরবিন্দর সিংহ-সালামরঞ্জন সিংহদের সেন্ট্রাল ডিফেন্সে খেলিয়েও গোল খাওয়া থেকে রেহাই পায়নি ইস্টবেঙ্গল। ফুল ব্যাকেও বার বার পরিবর্তন এসেছে। তবুও দলের গোল হজম করা আটকাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল থিঙ্কট্যাঙ্ক।
চার্চিল ম্যাচের আগে ডিফেন্ডারদের নিয়ে আলাদা ভাবে অনুশীলন করাতেও দেখা যায় খালিদকে। হাতে ধরে ভুলগুলো ধরিয়ে দিচ্ছিলেন গুরবিন্দর-সালামদের।
প্রতি ম্যাচে গোল হজম করার বিষয়ে লাল-হলুদ কোচ অর্ণব বলেন, “যে গোলগুলো আমরা হজম করছি তা সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষণিকের অমনোযোগের জন্য। প্র্যাক্টিসে কঠোর পরিশ্রম করছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটা কাটিয়ে উঠতে হবে।”
তবে রঞ্জন এ দিন ডিফেন্ডারদের আরও দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেন। তিনি বলেন, “আমরা যে গোলগুলি খেয়েছি প্রতিটাই ডেড বল সিচুয়েশন থেকে। কর্নার আর ফ্রি-কিক থেকেই গোল হজম করেছে দল। অর্ণবের অন্তর্ভুক্তি দলের শক্তি বাড়িয়েছে। তবে এডুকে আরও দায়িত্ব নিতে হবে।”
অন্য দিকে, পর পর হারে বিদ্ধস্ত চার্চিল ব্রাদার্স এই ম্যাচ থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে। ইস্টবেঙ্গল মাঠে আজ অনেক ক্ষণ কোচ আলফ্রেডের তত্ত্বাবধানে অনুশীলনও করে গোয়ার দলটি। মাঠ ছাড়ার আগে চার্চিলের কোচ আলফ্রেড বলেন, “পর পর ট্রাভেল করে দল ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। ম্যাচের মাঝে প্রস্তুতির সময়ও ঠিক পাচ্ছি না। তবে, আশা করি ছেলেরা কালকের ম্যাচে লড়াই চালাবে।”ম্যাচের আগের দিন আত্মবিশ্বাসী দেখাল চার্চিলের মূল অস্ত্র কালু ওগবাকেও। কালুর কথায়: “ইস্টবেঙ্গল শক্ত প্রতিপক্ষ। তবে, আমরা লড়াই চালাব। কোনও এক জন প্লেয়ার ওদের শক্তি নয়, গোটা দলটাই শক্তিশালী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy