টেবল টেনিস প্লেয়ার সৌম্যজিৎ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। পুলিশের কাছে সেই অভিযোগের আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই টেবল টেনিস খেলোয়াড় সৌম্যজিৎ ঘোষ-কে নির্বাসিত করল টেবল টেনিস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া (টিটিএফআই)।
শুক্রবারই তারা জানিয়ে দিল, যত দিন না শিলিগুড়ির এই খেলোয়াড় অভিযোগমুক্ত হচ্ছেন, তত দিন শাস্তি বহাল থাকবে। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর-এর পরিপ্রেক্ষিতে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে সৌম্যজিৎ-কে। আসন্ন কমনওয়েলথ গেমসে ভারতীয় টেবল টেনিস দল থেকে বাদও দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে টিটিএফআই জানিয়ে দিয়েছে, ‘নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশি তদন্ত শেষ হওয়া এবং আদালতের রায় না জানা পর্যন্ত সৌম্যজিৎ ঘোষ-কে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাসনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে টেবল টেনিস ফেডারেশন-এর এগজিকিউটিভ বোর্ড। নির্বাসন চলাকালীন জাতীয়, আন্তর্জাতিক কোনও টুর্নামেন্টেই খেলতে পারবেন না সৌম্যজিৎ।’
যাঁর বিরুদ্ধে এই কড়া পদক্ষেপ টিটিএফআই-এর, সেই সৌম্যজিৎ এই মুহূর্তে রয়েছেন জার্মানিতে। সেখানেই কমনওয়েলথ গেমসের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু টেবল টেনিস ফেডারেশনের এই সিদ্ধান্তের ফলে আসন্ন কমনওয়েলথ গেমসে নামতে পারবেন না তিনি। এ দিন জার্মানিতে সৌম্যজিতের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তিনি কোনও উত্তর দেননি। হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ও ফোন করা হলেও তিনি তা এড়িয়ে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন
দুর্নীতির অভিযোগ-মুক্ত শামি, আজ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাসিন
তবে যিনি এই অভিযোগ এনেছেন, বারাসতের সেই তরুণী এ দিন মেডিক্যাল পরীক্ষার পরে বলেন, ‘‘অভিযোগের সত্যতা প্রমাণে আমি সব রকম পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত। ও (সৌম্যজিৎ) যাতে আর কোনও মেয়ের এমন ক্ষতি না করতে পারে তার জন্য শাস্তি চাই।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আমি খবর পেয়েছি ভারতীয় টেবল টেনিস সংস্থা ওকে নির্বাসিত করেছে। অনেকেই আমার পাশে রয়েছেন দেখে আরও সাহস পাচ্ছি।’’
এ দিন বারাসত জেলা হাসপাতালে নাবালিকার রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। হাসপাতাল সুপার সুব্রত মণ্ডল এ দিন বলেন, ‘‘ওই নাবালিকার ডাক্তারি পরীক্ষার পাশাপাশি রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাও প্রয়োজনে করা হবে।’’
হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এ দিন জানিয়েছেন, নাবালিকার রক্তের কোষ নির্ণয়ের জন্য সেরোলজি এবং গ্রুপ পরীক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি নাবালিকার আলট্রাসনোগ্রাফিও করা হবে। প্রয়োজনে নাবালিকা যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, অর্থাৎ সৌম্যজিতেরও একই ধরনের পরীক্ষা করা হতে পারে।
কেন?
এ দিন বারাসত হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, ওই নাবালিকার গর্ভপাত করানো হয়েছিল কি না তা জানার চেষ্টা হবে এই পরীক্ষার মাধ্যমে। সঙ্গে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই ব্যক্তির সঙ্গে যৌন সংসর্গের ফলেই ওই নাবালিকা গর্ভবতী হয়েছিলেন কি না তাও জানার চেষ্টা করা হবে।
উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘থানায় দায়ের করা তরুণীর অভিযোগ এবং তাঁর গোপন জবানবন্দির সত্যতা যাচাইয়ে কাজ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy