ফেডারেশন কাপ ফাইনালে সেরা আকর্ষণ হতে পারত তাঁর সঙ্গে সনি নর্দের দ্বৈরথ। চোট মাঠের বাইরে ছিটকে দিয়েছে বেঙ্গালুরু অধিনায়ককে। তবে মেন্টর হিসেবে রবিবাসরীয় বরাবাটিতে থাকবেন তিনি। মহানদীর তীরে মহারণের আগে সুনীল ছেত্রী একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন আনন্দবাজার-কে।
প্রশ্ন: ফেডারেশন কাপ ফাইনালে খেলতে না পারাটা অধিনায়ক হিসেবে কতটা যন্ত্রণার?
সুনীল ছেত্রী: ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। গত চার বছরে আমার বড়সড় কোনও চোট লাগেনি। কিন্তু এই চোটটা আমাকে চার সপ্তাহের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে দিল। আই লিগ আমরা জিততে পারিনি। সামনের বছর এএফসি কাপে যোগ্যতা অর্জনের জন্য ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অথচ আমি মাঠেই নামতে পারব না!
প্র: কটকের প্রচণ্ড গরমে খেলতে গিয়েই চোট লাগল?
সুনীল: অবশ্যই। এই সময় কটকের গরম ও আর্দ্রতা এতটাই বেশি যে, পেশিতে টান লাগতে বাধ্য। এই অবস্থায় বিকেল চারটেয় কড়া রোদের মধ্যে আমাদের ম্যাচ খেলতে হয়েছে। ভাগ্য ভাল যে আরও কেউ চোট পায়নি। সামনেই কিরঘিজস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সের ম্যাচ। ইউজিনসন লিংধো, জেজে লালপেখলুয়া, আনাস এডাথোডিকা, প্রীতম কোটালের মতো জাতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলাররা যদি চোট পেত তা হলে যে কী হতো ভাবলেই শিউরে উঠছি।
প্র: মোহনবাগানের বিরুদ্ধে বেঙ্গালুরু কোচ আলবের্তো রোকা আপনাকে পাচ্ছেন না। কিরঘিজস্তানের বিরুদ্ধে স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন কি তাঁর সেরা অস্ত্রকে পাবেন?
সুনীল: এখনই সেটা বলার মতো জায়গায় নেই। তবে ফেডারেশন কাপ ফাইনালের পরেই মুম্বইয়ে জাতীয় শিবিরে যোগ দিচ্ছি। ওখানে জিজি স্যার (জাতীয় দলের ফিজিওথেরাপিস্ট জিজি জর্জ) আমার চোট পরীক্ষা করবেন। দেখি উনি কী বলেন।
প্র: মরসুম শেষ হয়ে যাচ্ছে। নতুন মরসুমের আগে নিজকে সুস্থ করে তুলতে কী করবেন বিরতিতে?
সুনীল: বিশ্রামের সুযোগ কোথায়? পর-পর জাতীয় দলের ম্যাচ রয়েছে। খুব বেশি হলে দিন পনেরো বিশ্রাম পাব।
প্র: এই মরসুমে পাঁচ বারের সাক্ষাতে দু’বার হেরেছে বেঙ্গালুরু। দু’বার ম্যাচ ড্র হয়েছে। জিতছেন মাত্র এক বারই। ব্যর্থতার কারণ কী?
সুনীল: আই লিগে আমদের ছন্দ না থাকাটা দুর্ভাগ্যের। এএফসি কাপে আমরা এক বার জিতেছি। ওরা এক বার জিতেছে। ফেডারেশন কাপের গ্রুপ লিগে এগিয়ে থেকেও ড্র করেছি। ফুটবলে এরকম হতেই পারে। আমি এটাকে ব্যর্থতা বলে মনে করি না।
প্র: ফেডারেশন কাপ ফাইনালে কী হবে বলে মনে হয়? সুনীলহীন বেঙ্গালুরু কি পারবে ঘুরে দাঁড়াতে?
সুনীল: আইজল এফসি আই লিগ জিতলেও ফেডারেশন কাপ ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ভারতীয় ফুটবলের সেরা দু’টো দল। ফল কী হবে তা বলতে পারব না। ভবিষ্যদ্বাণী করাও সম্ভব নয় কারা এগিয়ে, কারা পিছিয়ে। তবে আকর্ষণীয় একটা ম্যাচ যে হতে চলেছে, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। আর আমার থাকা না থাকাটা বড় ব্যাপার নয়। বাকিরা সকলেই জানে এই ম্যাচটার গুরুত্ব। দলের সঙ্গে না থাকলেও প্রত্যেক দিনই ফোনে ওদের সঙ্গে সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।
প্র: কী বলে উদ্বুদ্ধ করছেন?
সুনীল: বলছি, ভুলে যাও কে আছে বা কে নেই। ভুলে যাও আগের ম্যাচগুলোয় কী হয়েছে। তোমরা যে কারও চেয়ে কম নও, ফাইনালে সেটা প্রমাণ করো। খেলতে না পারলেও আমি তোমাদের সঙ্গেই আছি। ফাইনালে টিমের রিজার্ভ বেঞ্চেও থাকব।
প্র: মোহনবাগানের কোন বিভাগটা সব চেয়ে শক্তিশালী বলে মনে করেন?
সুনীল: অবশ্যই আক্রমণভাগ। সনি নর্দে, ড্যারেল ডাফি, কাতসুমি ইউসা-র মতো ফুটবলার রয়েছে। তার উপর এই মুহূর্তে দুরন্ত ফর্মে বলবন্ত সিংহ। ওদের বিরুদ্ধে সব সময় আমাদের ডিফেন্ডারদের সতর্ক থাকতে হবে। সামান্য ভুল করলেই বিপদ।
প্র: আপনার মতে গত তিন বছরে মোহনবাগানের সাফল্যের মূল কারণ কী?
সুনীল: প্রায় একই দল ধরে রাখার সুফল ওরা পাচ্ছে। ফুটবলারদের ব্যক্তিগত দক্ষতাও মোহনবাগানের সাফল্যের অন্যতম একটা কারণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy