Advertisement
১৭ মে ২০২৪

রোনাল্ডো-বধ মনে হচ্ছে বেলদের হাতেই

শুক্রবার গভীর রাতে গ্যারেথ বেলদের চমকপ্রদ এবং বিস্ময়কর জয় দেখার পর মনে হচ্ছে, সেটাই হয়তো হবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।

সঞ্জয় সেন
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৬ ০৪:১৯
Share: Save:

শুক্রবার গভীর রাতে গ্যারেথ বেলদের চমকপ্রদ এবং বিস্ময়কর জয় দেখার পর মনে হচ্ছে, সেটাই হয়তো হবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা।

আইসল্যান্ডের রামধনুর বর্ণচ্ছটার মতো পারফরম্যান্স দেখার পর ওয়েলসের এই জয়কে কী বলা যেতে পারে? এটা ভাবতে ভাবতেই অদ্ভুত একটা তৃপ্তি পাচ্ছিলাম। এতগুলো ম্যাচ দেখলাম এ বার। বিশ্বাস করুন এ রকম অ্যাটাকিং এবং ধুন্ধুমার লড়াই একটাও দেখেছি বলে মনে পড়ছে না। প্রথম তিরিশ মিনিট হ্যাজার্ডদের শাসন, আগুনে ফুটবল দেখে মনে হচ্ছিল টিমটা সত্যিই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই এখানে এসেছে। ১-০ এগিয়েও গিয়েছিল বেলজিয়াম ওই সময়। কিন্তু এরপরই সব ওলট পালট। বেল-কানু-র‌্যামসিদের ‘টিম গেম’ দেখাল আধুনিক ফুটবলে তারকা নয়, জেতায় একাত্মতা, আন্তরিকতা। একটা মেসি বা একটা রোনাল্ডো হয়তো দারুণ একটা গোল করে, কিন্তু যোগ্য সঙ্গত না পেলে সবাই ফ্লপ। ১-৩ গোলে ওয়েলসের জেতা ম্যাচটা তাই একটা মাইলস্টোন হিসাবে ইউরোতে জায়গা করে নিতে পারে।

সে জন্যই বেলজিয়ামের স্বর্ণযুগের টিমকে বিধ্বস্ত করা বেলের টিমকে আমি বলব ইউরোপের ঘুমন্ত দৈত্য। যাদের গৌরবের ইতিহাস আটকে ছিল সেই আটান্নর বিশ্বকাপে, সেই টিমটা জেগেছে। কী অসাধারণ ভাবেই না একটা নতুন ইতিহাস তৈরি করে ফেলল ওরা।

উইলমটসের টিমটা তো ক্লাব-সফল ফুটবলারে ভর্তি। দে’ব্রায়ান থেকে উইটসেল, রোমেলু লুকাকু থেকে কুর্তোয়া-সবাই তো নিজের ক্লাবে সেরা। তারা এভাবে এগিয়ে যাওয়ার পরও গুটিয়ে যাবে ভাবিনি। বেলজিয়ামের রক্ষণ তাদের সমস্যায় ফেলবে জানতাম। কোম্পানি টুনার্মেন্টে খেলতে না পারায় রক্ষণে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো লোক ছিল না। বেল-র‌্যামসিরা যখন পাল্টা চাপ দিতে শুরু করল তখন অলডারউইরেল্ড, উইটসেলরা যেভাবে ভয় পেযে পিছোতে শুরু করল তা দেখেই আন্দাজ করছিলাম ডুবে যাবে।

তবে আর্সেনালের র‌্যামসির কর্নার গুলো দেখে আমি মুগ্ধ। কত রকমের সেট পিস। সেটাই অনেকটা শেষ করে দিল হ্যাজার্ডদের। বেল গোল করতে পারেনি ঠিক, তবে ওয়েলসের মাঠের ভিতরের রিমোটটা ছিল কিন্তু ওর হাতেই। শুনলাম এই ম্যাচটার পর মেসি-রোনাল্ডোর সঙ্গে ওর তুলনা শুরু হয়েছে। রোনাল্ডো বনাম বেল—ম্যাচের পর এর উত্তরটা হয়তো পাওয়া যাবে। তবে ওয়েলসের ১-১ করার গোলটার সময় অদ্ভুত একটা স্ট্র্যাটেজি দেখলাম। র‌্যামসি যখন কর্নারটা করছে তখন বেলের সঙ্গে পাঁচ জন ওয়েলস ফুটবলার এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিল। বলটা উড়ে আসতেই বেল ফলস রান নিল। ওর পিছন পিছন বেলজিয়ামের দু’জন ডিফেন্ডার দৌড়ে গেল। নিট ফল, বক্সের ভিতরটা ফাঁকা। উইলিয়ামসও গোলটা করে চলে গেল আনমার্কড অবস্থায়। এটাই তো টিম গেম। স্ট্র্যাটেজি। একসঙ্গে অনুশীলনের ফসল।

বল পজেশন ফুটবলে একটা বড় ফ্যাক্টর। বিপক্ষের মুঠি আলগা করতে এটা দরকার হয়। রোনাল্ডোরা যেটা পারছে না। ওয়েলস যেটা পারল। পর্তুগাল পাঁচটা ম্যাচ নব্বই মিনিটে জেতেনি। বলতে পারেন ভাগ্য তাদের নিয়ে গিয়েছে শেষ চারে। বেলরা কিন্তু উঠল নিজেদের শক্তি আর ক্ষমতা দেখিয়ে।

রোনাল্ডোদের তাই সতর্ক হয়ে নামতে হবে শেষ চারের ম্যাচে। উইলমটের টিম যে ভুলটা করে গেল সেটা করলে কিন্তু পর্তুগালের কপালে দুঃখ আছে। ওয়েলসের একটাই ধাক্কা, কার্ডের জন্য সেমিফাইনালে খেলতে পারবে না সেট পিস মাস্টার র‌্যামসি। এটা কিন্তু বেলদের পক্ষে খারাপ খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gareth Bale Ronaldo Euro 2016
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE