—প্রতীকী ছবি।
সুপ্রিম কোর্টের চরম হুঁশিয়ারির পরেও লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী গঠনতন্ত্রের সংশোধন নিয়ে ভারতীয় বোর্ড পাল্টা যুদ্ধের পথেই যাচ্ছে। শনিবার বোর্ডের বিশেষ সাধারণ বৈঠকে লোঢা প্রস্তাবিত কিছু সুপারিশ গ্রহণ করা হলেও যেগুলো নিয়ে বিতর্ক চলছে, সেগুলো না মানার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী ৬ তারিখ, সুপ্রিম কোর্টে লোঢা কমিশনের বিশেষ বিশেষ কিছু সুপারিশের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানোর রাস্তায় যেতে পারে বোর্ড।
এক রাজ্য এক ভোট থেকে শুরু করে তিন বছরের ‘কুলিং অফ পিরিয়ড’-এর বিরোধিতা করবে বোর্ড। লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তিন সদস্যের নির্বাচন কমিটিও মানছে না বিসিসিআই। তাদের যুক্তি এত বড় দেশে পাঁচ সদস্যের কমিটি ছাড়া নির্বাচক প্যানেলের কাজ সামলানো যাবে না। শোনা যাচ্ছে, শনিবারের ছ’ঘণ্টার বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে প্রতিটি সুপারিশ নিয়ে আলাদা করে আলোচনা করা হয় ও ভোটাভুটি হয়। তাতে বোর্ড কর্তাদের পক্ষেই নাকি মত দিয়েছেন বেশির ভাগ সদস্য। সিএবি-র প্রতিনিধিত্ব করেন অন্যতম যুগ্মসচিব সুবীর গঙ্গোপাধ্যায়।
জানা গিয়েছে, বৈঠকে এক বোর্ডকর্তা বলেন, মুম্বই চল্লিশ বার রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর তাদের ভোট থাকবে না? প্রশাসকদের বয়সসীমা নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব হন এক বর্ষীয়ান ক্রিকেট কর্তা। তাঁর বক্তব্য, সত্তর বছরের পর কেউ ক্রিকেট প্রশাসনে থাকতে পারবে না, এই নির্দেশে তো মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। কিন্তু শোনা যাচ্ছে, সত্তর বছরের ব্যাপারটা বিশেষ আমল পাচ্ছে না বোর্ডে।
শনিবার বৈঠকের পর বোর্ড প্রেসিডেন্ট অনুরাগ ঠাকুর বলেছেন, ‘‘লোঢা কমিটির অনেক সুপারিশই গ্রহণ করেছেন বিসিসিআইয়ের বিশেষ সাধারণ সভার সদস্যরা। কিছু সুপারিশ সদস্যরা গ্রহণ করেননি। কারণ তাঁদের মনে হয়েছে সেগুলো কার্যকর করা সম্ভব নয়। তাতে আইনগত জটিলতা আর বাস্তব সমস্যা রয়েছে। সদস্যরা এ ব্যাপারে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। এ নিয়ে বিশদ রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্ট আর লোঢা কমিটিতে জমা দেওয়া হবে।’’
বোর্ড প্রেসিডেন্ট আরও বলেছেন, ‘‘বোর্ডের গঠনতন্ত্র দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে যে সদস্যরাই বোর্ডের আসল ভিত্তি। অনুরাগ ঠাকুর আর অজয় শিরকের ভূমিকা এখানে শুধু বৈঠক ডাকা। লোঢা কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করা হবে, না হবে না সেটা সদস্যদের উপর নির্ভর করছে। আমরা সদস্যদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম। সদস্যরা তাঁদের মতামত দিয়েছেন।’’
সুপারিশ কার্যকর না করার জন্য বুধবার বোর্ড সুপ্রিম কোর্টের প্রবল তিরস্কারের মুখে পড়েছিল। সে দিনই লোঢা কমিটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট বোর্ডের কাছে যার জবাব ৬ অক্টোবরের মধ্যে চেয়েছিল। সেই জবাবই এখন তৈরি করছে বিসিসিআই। আদালতে বলা হবে, আমরা অনেক কিছুই তো মেনে নিচ্ছি, তা হলে যেগুলো নিয়ে সমস্যা হচ্ছে, সেগুলো পুনর্বিবেচনা করা হোক।
শনিবার বিবৃতিতে বোর্ড জানিয়েছে, সচিব অজয় শিরকের প্রস্তাবিত নতুন সংশোধনী খসড়া মেনে নিয়েছে বিশেষ সাধারণ সভার সব সদস্যই। লোঢা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী যেখানে অ্যাপেক্স কাউন্সিল ও আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলে কম্পট্রোলার ও অডিটর জেনারেলের প্রতিনিধিকে রাখার কথা বলা হয়েছিল। সঙ্গে সুপারিশ অনুযায়ী অ্যাপেক্স কাউন্সিল গঠনের বদলের সিদ্ধান্তও হয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি সুপারিশ মানা হলেও মনে করা হচ্ছে সেগুলো সে রকম গুরুত্বপূর্ণ নয়। যে যে সুপারিশে লোঢা কমিটির সঙ্গে বোর্ডের সংঘাত চরমে, সেগুলো নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট শেষ পর্যন্ত কী বলে সেটা এখন দেখতে চাইছে বোর্ডের শীর্ষকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy