ব্যর্থ: বাংলার ভরসা ছিলেন যে দু’জন। মনোজ তিওয়ারি এবং সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ের কেউই সামলাতে পারলেন না দিল্লির বোলিং। ফাইল চিত্র
নব্বই সালের বাংলা-দিল্লি ঐতিহাসিক রঞ্জি ফাইনালে পরাজিতদের দলে ছিলেন ওঁরা দু’জন।
সেই কে পি ভাস্কর এবং মনোজ প্রভাকর গত দু’দিন বাংলা দল নিয়ে খুব বেশি মুখ খোলেননি। মঙ্গলবার বাংলাকে হারিয়ে রঞ্জি ফাইনালে ওঠার দিনে কথা ফুটল দু’জনের মুখেই।
দিল্লি কোচ কে পি ভাস্কর সরাসরি প্রশ্নই তুলে দিলেন বাংলার একজন বোলার কম নিয়ে সেমিফাইনালে খেলতে নামার রণনীতি নিয়ে। আর মনোজ প্রভাকর তুলে দিলেন টেকনিকের প্রশ্ন।
ম্যাচ শেষে ভাস্কর বলছিলেন, ‘‘মনে তো হল বাংলা একজন বোলার কম নিয়ে ব্যাটসম্যান বাড়িয়ে খেলতে নেমেছিল। কী ভেবেছিল ওরা? শামিদের দিয়ে আমাদের গুঁড়িয়ে তার পরে ব্যাটসম্যানদের নিয়ে ম্যাচ বার করে নেবে?’’
তার পরে ফের বললেন, ‘‘শামি তো আজ প্রায় চল্লিশ ওভার বল করে ম্যাচটা বাংলার দিকে টেনে এনেছিল। কিন্তু ও আর ডিন্ডা ক্লান্ত হয়ে পড়লে আরও একজন বোলার যাতে চাপটা তৈরি করতে পারে, সে ব্যাপারটা মাথায় রাখা উচিত ছিল বাংলার।’’
সেমিফাইনালে শামি ও ডিন্ডা ছাড়া বাংলার তৃতীয় পেসার ছিলেন বি. অমিত। যিনি আবার নজর দিয়েছিলেন নেতিবাচক বোলিংয়ে। যে সুযোগ পুরোদমে নিয়েছে দিল্লি শিবির।
আর দিল্লির বোলিং কোচ মনোজ প্রভাকর বলছিলেন, ‘‘বাংলার দ্বিতীয় ইনিংসে মাঠে নামার সময় ছেলেদের বলে দিয়েছিলাম, রান না আটকাতে পারলে বল উপরের দিকে তুলে দে। ওরা জানে না বল কী ভাবে ছাড়তে হয়। ওরা মারতে গিয়ে আউট হবেই। আর তাতেই কাজ হয়েছে। পিচে যে জুজু ছিল না, তা দেখিয়ে দিয়েছে গম্ভীররা।’’
তবে ম্যাচ জিতে বাংলাকে নিয়ে দিল্লির কোচেরা তীর্যক মন্তব্য করলেও, গোটা দল এ দিন মেতেছিল ম্যাচের নায়ক নভোদীপ সাইনিকে নিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকাগামী ভারতীয় দলের সঙ্গেই যাঁর দিন কয়েকের মধ্যে উড়ে যাওয়ার কথা ছিল জন্টি রোডসের দেশে। তবে টিমের সদস্য হিসেবে নয়। নেট বোলার হিসেবে। কিন্তু এ দিন নভোদীপ বলে দিলেন, তিনি যাচ্ছেন না। ‘‘গম্ভীর ভাইয়ার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তিনিই আমাকে বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় যেতে হবে না তোকে। বরং রঞ্জি সেমিফাইনাল খেল। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেললে একদিন টেস্ট বোলার হয়েই জাতীয় দলের হয়ে যেতে পারবি। নেট বোলার হিসেবে নয়। এটা শুনে আর দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার কথা ভাবিনি।’’
হরিয়ানার ছেলের উঠে আসার গল্পও বেশ চমকপ্রদ। দাদু কর্ণ সিংহ আজাদ হিন্দ ফৌজে গাড়ি চালক ছিলেন। এখনও তিনি জীবিত। বয়স ৯৪। নভোদীপের সেই দাদু এ দিন তাঁর ম্যাচ সেরা হওয়া দেখেছেন টিভিতে। যা জেনে বেশ আনন্দিত গত পাঁচ বছর ধরে দিল্লির হয়ে খেলা এই তরুণ বোলার। বলছেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই দাদু উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। আজ তিনি আমাকে ম্যাচ সেরা হতে দেখেছেন। এটা সত্যিই বড় প্রাপ্তি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy