হাবাসের মতো ভয়ানক কোচ দেখিনি, কটাক্ষ কাপদেভিয়ার

স্পেনের ফুটবলের সোনালি অধ্যায়ের মহাতারকা তিনি। দু’বছরের ব্যবধানে জিতেছেন ইউরো আর বিশ্বকাপ। সোমবার দুপুরে এক কিট কোম্পানির বিপণনের কাজে এসেছিলেন পার্ক সার্কাসের শপিংমলে। সেখানেই খোলামেলা মেজাজে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাত্‌কার দিলেন স্প্যানিশ সাইডব্যাক হোয়ান কাপদেভিয়া।

প্রশ্ন: অনেকেই বলাবলি করছে মঙ্গলবারের ম্যাচটা লুই গার্সিয়া বনাম কাপদেভিয়ার স্প্যানিশ ডুয়েল!
কাপদেভিয়া: গার্সিয়া খুব বড় ফুটবলার। ঠিক মনে করতে পারছি না, সম্ভবত ২০০৭-’০৮ হবে, স্পেনের জার্সিতে আমরা একসঙ্গে দু’টো ম্যাচ খেলেছিলাম। হয়তো গ্রিসের বিরুদ্ধে। আর এখানে কলকাতা টিমের এক নম্বর পাসার গার্সিয়াই। পুরো টিমকে খেলায়। ওকে আটকাতে না পারলে কিন্তু সমস্যা হবে। কাল (মঙ্গলবার) আমাদের কিছুতেই গোল খাওয়া চলবে না। (হেসে) আমাকেই দায়িত্ব নিতে হবে গার্সিয়াকে সামলানোর জন্য। টিমের সবাই তো তাই চাইছে।

প্র: গার্সিয়াকে আটকালেই বলছেন কলকাতা আটকে যাবে? ফিকরু নিয়ে ভাবছেন না?
কাপদেভিয়া: নিশ্চয়ই ভাবছি। ফিকরু গোলটা চেনে। গার্সিয়ার সঙ্গে আরও দু’জনের উপর নজর রাখতে হবেই। ফিকরু আর বোরহা। ফিকরু রোবাস্ট টাইপ ফুটবলার। ধাক্কাধাক্কি করে। গতিও আছে। হেড করতে ঝাঁপায়। ওকে চোখে চোখে রাখতে হবে। গার্সিয়া-বোরহার মধ্যে একটা কম্বিনেশন আছে। সেটা কার্যকর হতে দেওয়া যাবে না। আর একজন ডেঞ্জারাস ম্যান আছে.....না-না, থাক।

প্র: আরে বলুন না, সেটা কে? অর্ণব? হোফ্রে? বলজিত্‌....
কাপদেভিয়া: না-না, আটলেটিকো কোচ হাবাস। আমি আরাগোনেস, দেল বস্কিকে দেখেছি। ফার্গুসনকে কাছ থেকে দেখেছি, মোরিনহোকে দেখেছি। কাউকে রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে হাবাসের মতো আচরণ করতে দেখিনি। কেউ নিজের ফুটবলারদের তাতানোর জন্য ও রকম অঙ্গভঙ্গি করে না। ভয়ানক লোক। গুয়াহাটিতে গিয়ে যা করছিল! আমার মতে, কোচেদের ও রকম করা ঠিক নয়।

প্র: তা হলে বলছেন হাবাসের বিরুদ্ধেও যুবভারতীতে লড়তে হবে আপনাদের?
কাপদেভিয়া: রিজার্ভ বেঞ্চ সামলানোর জন্য চতুর্থ রেফারি আছেন। তবে হাবাস শাস্তি খাওয়ার পর আর ও রকম কিছু করবে বলে মনে হয় না। এ বার করলে তো....!

প্র: গুয়াহাটিতে হেরেছিলেন। যুবভারতীতে বদলা নেওয়ার ম্যাচ?
কাপদেভিয়া: বদলা নেওয়ার কথা ভাবছি না। ভাবছি ম্যাচটার গুরুত্বের কথা। জেতার কথা। এখনও পর্যন্ত যত ম্যাচ খেলেছি আমার মতে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ এটাই। এ বার আটলেটিকোকে না হারাতে পারলে আমাদের সেমিফাইনাল যাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। তবে যুবভারতীতে সবচেয়ে বড় সমস্যা অ্যাস্ট্রোটার্ফ। আমি নিজে এ রকম সারফেস পছন্দ করি না।

প্রশ্ন: আইএসএলে আপনার টিমেরই গড় বয়স সবচেয়ে কম? এটা নিশ্চয়ই সুবিধা!
কাপদেভিয়া: আইবর, দুর্গা ওরা খুব ভাল ছেলে। দারুণ পরিশ্রম করছে জেতার জন্য। আমরা একটা টিম হিসাবে খেলছি।

প্র: সব টিমের ম্যাচ দেখলেন। ফেভারিট?
কাপদেভিয়া: অবশ্যই চেন্নাইয়ান। খুব ভাল খেলছে টিমটা। তার পর অনেকে আছে। কলকাতা, পুণে, মুম্বইও ভাল খেলছে। সবাই কাছাকাছি।

প্র: আপনি বিশ্বকাপ, ইউরো কাপ জেতা দলের ডিফেন্ডার। আইএসএলে এসে কোন ফরোয়ার্ডকে সামলাতে সমস্যা হয়েছে?
কাপদেভিয়া: এখনও পর্যন্ত দু’জন। ফিকরু আর ডুডু।

প্র: আর বিশ্ব ফুটবলে?
কাপদেভিয়া: এখন হলে বলতাম রোনাল্ডো আর মেসি।

প্র: ২০১০ বিশ্বকাপ জয়ের দিনটার কথা মনে পড়লে কেমন লাগে?
কাপদেভিয়া: আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত সেটা। যে কোনও ফুটবলারের কাছেই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন থাকে। আমারও ছিল। সেটা পূরণ হয়েছিল। সুযোগ পেলেই দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে স্পেনের ম্যাচগুলো রিওয়াইন্ড করে দেখি।

প্র: ভারতে আসার আগে জাভি, ইনিয়েস্তারা কি কিছু বলেছিলেন? ওঁরাও কি আসবেন আইএসএল খেলতে?
কাপদেভিয়া: ওরা শুভেচ্ছা জানিয়েছিল আমার সাফল্যের জন্য। খুব কমই কথা হয় ওদের সঙ্গে। সেটাও আইএসএল নিয়ে নয়। স্পেন ফুটবল নিয়ে। স্পেনকে আবার আমাদের সময়ে ফেরাতে হলে নতুন প্রজন্মের দরকার। সময় লাগবে। আর জাভিদের ভারতে খেলতে আসার কোনও সম্ভাবনা দেখছি না। আমি অন্তত জানি না।