মনোজরা নিজেদের দলের শক্তির দিকেই নজর দিচ্ছেন। —ফাইল চিত্র
রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে বাংলা বনাম মধ্যপ্রদেশ। গত বারের মতো এ বারও চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের দলের বিরুদ্ধে খেলবেন মনোজ তিওয়ারিরা। তবে বিপক্ষ নিয়ে ভাবছে না বাংলা। মনোজরা নিজেদের দলের শক্তির দিকেই নজর দিচ্ছেন। গত বারের দলের সঙ্গে এ বারের বাংলা দলের তফাত রয়েছে। কোচ বদলে গিয়েছে, অধিনায়কও বদলেছে। তাই বাংলা দলও পুরনো ম্যাচের কথা ভাবছে না। বাংলার সেমিফাইনাল হবে ইনদওরে। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু সেই ম্যাচ।
গত বার সেমিফাইনালে বাংলা হেরে যায় মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে। এ বার আবার সামনে মধ্যপ্রদেশ। যে দলে রয়েছেন রজত পটীদার, আবেশ খান, আদিত্য শ্রীবাস্তবের মতো ক্রিকেটাররা। রয়েছেন কোচ পণ্ডিত। বাংলার সহকারী কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, “আমরা নিজেদের দল নিয়ে ভাবছি। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে আমরা গত বার খেলেছি। জানি ওরা কেমন খেলে। চেনা দল। ওদের কোচ পণ্ডিত। কিন্তু তিনি তো মাঠে নেমে খেলবেন না। আমরা তাই নিজেদের দল নিয়েই ভাবছি। মধ্যপ্রদেশকে নিয়ে নয়।”
বাংলা দলে রয়েছেন এ বারের রঞ্জিতে ৬ ম্যাচে ৭৩৮ রান করা অভিমন্যু ঈশ্বরন। রয়েছে তিনটি শতরান। গড় ৯২.২৫। রয়েছেন ৮ ম্যাচে ৩১টি উইকেট নেওয়া আকাশ দীপ। তাঁদের সঙ্গে দলে রয়েছেন অভিজ্ঞ মনোজ তিওয়ারি, অনুষ্টুপ মজুমদাররা। বাংলার পেস আক্রমণ সামলাতে রয়েছেন মুকেশ কুমার, ঈশান পোড়েলরা। রয়েছেন অলরাউন্ডার শাহবাজ় আহমেদ। সৌরাশিস বললেন, “আমাদের দলের প্রতিটি বিভাগের ক্রিকেটাররা ছন্দে রয়েছে। অভিমন্যু, সুদীপ, অনুষ্টুপরা রান পাচ্ছে। দুই আকাশ, মুকেশ, ঈশানরা উইকেট নিচ্ছে। সঙ্গে শাহবাজ় রয়েছে। ব্যাটে, বলে ও ধারাবাহিক ভাবে সফল।”
যদিও চিন্তা রয়েছে একটি জায়গায়। বাংলার ওপেনিং জুটি। একাধিক ক্রিকেটারকে খেলানো হলেও কেউ রান পাননি। সেমিফাইনালে তাই দলের আবার জুড়ে দেওয়া হল করণ লালকে। যিনি গ্রুপ পর্বে ওপেন করেছিলেন বাংলার হয়ে। তবে সেটা নিয়ে বিশেষ ভাবছে না বাংলা। কারণ ওপেনার সমস্যা ঢেকে দিচ্ছেন মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা। সৌরাশিস উচ্ছ্বসিত আকাশ ঘটককে নিয়ে। তরুণ অলরাউন্ডার সম্পর্কে বাংলার সহকারী কোচ বললেন, “আকাশ অনূর্ধ্ব-২৫ দলে ভাল খেলেছিল। লক্ষ্মীরতন শুক্ল ওকে দলে নিয়ে আসে। সুযোগ কাজে লাগিয়েছে আকাশ ঘটক। আগামী দিনে অলরাউন্ডার হিসাবে ও দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।”
পর পর তিনটি রঞ্জির সেমিফাইনালে উঠল বাংলা। ২০১৯-২০ সালে ফাইনালে হারতে হয়েছিল সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। ২০২০-২১ সালে করোনার জন্য রঞ্জি হয়নি। এ বার আবার সেমিফাইনালে। সৌরাশিস বললেন, “লাল বলের ক্রিকেটে দেশের সব থেকে ধারাবাহিক দল বাংলা। আমরা সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলেছি। ট্রফি আসেনি। কিন্তু আমরা ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলেছি। গত বার সেমিফাইনালে মধ্যপ্রদেশ আমাদের কিছু চমক দিয়েছিল। কিন্তু এ বার আমরা জানি ওদের দলে কী কী শক্তি আছে। আমাদের দলেও পাল্টা উত্তর দেওয়ার মতো ক্ষমতা রয়েছে।”
রবিবার ইনদওর যাবে বাংলা দল। কোয়ার্টার ফাইনাল জিতেও সেই দলে কোনও উচ্ছ্বাস ছিল না। কোচ লক্ষ্মী বলেন, “এখনও অনেকটা পথ বাকি। মনোজ দলটাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। নিজেদের উপর বিশ্বাসটাই দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দলের সকলে খুব ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে। সেমিফাইনালের জন্য আমরা তৈরি।” সৌরাশিস বললেন, “আমাদের ছেলেরা জানে যে লক্ষ্যপূরণ হয়নি। ট্রফিটাকে পাখির চোখ করে নিয়েছে ছেলেরা। সেই লক্ষ্যে না পৌঁছনো পর্যন্ত ওরা থামবে না। শুক্রবার অনেকে এসে শুভেচ্ছা জানাচ্ছিল ক্রিকেটারদের। কিন্তু কেউ সেই আনন্দে গা ভাসিয়ে দেয়নি।”
মনোজ জানিয়ে দিয়েছেন যে এটাই তাঁর শেষ রঞ্জি। সেই ট্রফি তিনি জিতে ক্রিকেট কেরিয়ার শেষ করতে চান। মনোজ বলেন, “আমাদের একটা স্বপ্ন, রঞ্জি ট্রফি জেতা। আরও ভাল খেলার জায়গা সব সময় রয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যে ভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়। আমরা সেই ভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy