যুবরাজ সিংহ। ফাইল ছবি।
ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা সময় জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন যুবরাজ সিংহ। ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং ২০১১ এক দিনের বিশ্বকাপ জয়ে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। কিন্তু তাঁকে কখনও জাতীয় দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয়নি। কেন ভারতের অধিনায়ক হতে পারেননি, সে কথা নিজেই জানিয়েছেন প্রাক্তন অলরাউন্ডার।
এক দিনের দলের সহ-অধিনায়ক থাকা সত্ত্বেও ২০০৭ টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে অধিনায়ক করেন নির্বাচকরা। যুবরাজ মনে করেন, গ্রেগ চ্যাপেল ভারতীয় দলের কোচ থাকাকালীন সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার জন্যই নেতৃত্ব পাননি।
২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ভারতীয় দলের কোচ ছিলেন গ্রেগ। সে সময় তাঁর সঙ্গে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং সচিন তেন্ডুলকরের মতবিরোধ তৈরি হয়। ভারতীয় দলে যুবরাজ এই দুই ক্রিকেটারেরই ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। সে কারণেই তাঁকে অধিনায়ক করা হয়নি বলে মনে করেন তিনি।
সচিন নিজের আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘‘গ্রেগ যে ভাবে দল চালাতে চেয়েছিলেন, তা মানতে পারেনি দলের একাধিক সিনিয়র ক্রিকেটার। বিশ্বকাপের মাত্র এক মাস আগে ব্যাটিং অর্ডারে ব্যাপক রদবদল করেছিলেন। যেটা দলের সকলকেই অত্যন্ত প্রভাবিত করেছিল।’’ এ প্রসঙ্গে যুবরাজ জানিয়েছেন, গ্রেগের সেই সিদ্ধান্ত দলের মধ্যে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি করেছিল। সে সময় তাঁর অবস্থানের জন্যই ভারতের পূর্ণ সময়ের অধিনায়ক হতে পারেননি তিনি।
প্রাক্তন ক্রিকেটার সঞ্জয় মঞ্জরেকরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুবরাজ বলেছেন, ‘‘আমারই অধিনায়ক হওয়ার কথা ছিল। তখনই গ্রেগ ওই ঘটনা ঘটান। গ্রেগ বা সচিনের মধ্যে এক জনকে বেছে নিতেই হত। আমিই সম্ভবত দলের এক মাত্র সদস্য ছিলাম যে সতীর্থের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম। যেটা দলের অনেকে এবং বোর্ডের কিছু কর্তাও পছন্দ করেননি। তখনই তাঁরা ঠিক করেন আমার বদলে অন্য কাউকে অধিনায়ক করলে ভাল হবে। সে সময় আমি এ রকমই শুনেছিলাম। এটাই সত্যি কি না সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। যদিও আমাকে হঠাৎ করেই সহ অধিনায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বীরেন্দ্র সহবাগও দলে ছিল না। তাই মাহিকেই অধিনায়ক বেছে নেওয়া হয়েছিল ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য। আমি অধিনায়ক হব এ রকম আশা কিন্তু আমার ছিল।’’
যুবরাজ আরও বলেছেন, ‘‘বীরু সিনিয়র ছিল। কিন্তু ও ইংল্যান্ড সফরের দলে ছিল না। রাহুল দ্রাবিড় অধিনায়ক ছিল। আমি এক দিনের দলের সহ-অধিনায়ক ছিলাম। তাই আমার নেতৃত্ব পাওয়াই স্বাভাবিক ছিল। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সেই সুযোগটা পাইনি। সিদ্ধান্ত আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল। সে জন্য আমার অবশ্য কোনও আক্ষেপ নেই। এখনও যদি তেমন কোনও ঘটনা ঘটে, তা হলেও আমি সতীর্থের পাশেই দাঁড়াব।’’
দেশের অধিনায়ক হওয়া বিরাট সম্মানের মেনে নিয়েছেন যুবরাজ। সেই সম্মান না পেলেও আক্ষেপ নেই প্রাক্তন ক্রিকেটারের। যুবরাজ বলেছেন, ‘‘এক দিনের দলের অধিনায়ক হিসেবে ধোনি বেশ ভাল কাজ করছিল। আমিও সে সময় ঘনঘন আহত হচ্ছিলাম। অধিনায়ক হলেও আমাকে চোটের জন্য দলের বাইরে যেতেই হত। সবকিছুই বোধহয় ভালর জন্যই হয়। তাই আমার কোনও আক্ষেপ নেই ভারতের অধিনায়ক না হতে পারার জন্য। অবশ্যই এটা বিরাট সম্মানের। কিন্তু সব সময় সতীর্থদের পাশেই থাকব। সে জন্য আমাকে খারাপ বলা হলেও কিছু যায় আসে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy