সমর্থন: আইজল প্র্যাকটিসে হাজির সমর্থকরা। —নিজস্ব চিত্র।
ভারতীয় ফুটবলের ছবিটা পুরো বদলে দিয়েছে আই লিগ। এ বার লিগ শুরু হওয়ার মুখে মনে হয়েছিল লড়াইটা ত্রিমুখী। কলকাতার ডার্বি কিংবা বেঙ্গালুরু এফসি-র সঙ্গে কলকাতার দুই প্রধানের লড়াই-তেই সীমাবদ্ধ থাকবে লিগের লড়াই। লিগের শেষ প্রান্তে এসে দেখা যাচ্ছে সেই হিসেব মিলল না।
এটা ঠিক যে লিগে কলকাতা ডার্বি বা বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে কলকাতার দুই প্রধানের ম্যাচ আলাদা মাত্রা পেয়েছে। কিন্তু তা কখনও-ই ‘ব্লকবাস্টার ম্যাচ’ হিসেবে গণ্য হয়নি। আই লিগে সে রকম একটা ম্যাচ হতে চলেছে শনিবার আইজলে। যে ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে আইজল এফসি এবং মোহনবাগান। লিগ ম্যাচ হলেও ম্যাচটার মধ্যে একটা ফাইনাল ম্যাচের গন্ধ রয়েছে।
এত দিন উত্তর-পূর্ব ভারতকে দেশের ফুটবলের নার্সারি বলা হত। সেই ছবিটা কিন্তু এ বার পুরোপুরি পাল্টে গিয়েছে। এটা আমার কাছে একই সঙ্গে তৃপ্তির ও গর্বের ব্যাপার। কারণ, এখন উত্তর-পূর্ব ভারতের একটা টিম দেশের সর্বোচ্চ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়নের দাবিদার। আর তাও সেটা কলকাতার শতাব্দীপ্রাচীন টিমের সঙ্গে। এই ব্যাপারটা উত্তর-পূর্বের সমস্ত ফুটবল ক্লাব কর্তারই আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
মোহনবাগান এই ম্যাচের আগে এএফসি কাপের ম্যাচ খেলেছে বুধবার। একই সঙ্গে আই লিগে দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তিও রয়েছে ওদের। আই লিগে এর আগের ম্যাচে পঞ্জাবের মিনার্ভার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে গোল করে জিতেছিল মোহনবাগান। তার পরেই আন্তর্জাতিক ম্যাচে হার। এটা কিন্তু সবুজ-মেরুন শিবিরের কাছে খুব একটা ভাল বার্তা দিচ্ছে না।
মোহনবাগানকে আইজলে মাঠে বল গড়ানোর আগেই পরিবেশ, আবহাওয়া ও বিপক্ষের দর্শক-দের মোকাবিলা করতে হবে। সঙ্গে রয়েছে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রত্যাশা ও চাপ। এক্ষেত্রে মোহনবাগান যদি নিজেদের রক্ষণ সংগঠন ভাল করতে পারে, তা হলে লাভটা ওদের। অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বলতে পারি, রক্ষণ আঁটসাঁট থাকলে প্রতি-আক্রমণে সুযোগ মোহনবাগানের কাছে আসবে। কেবল মাথায় রাখতে হবে শুরুতেই যেন গোল না করে যায় আইজল এফসি।
উল্টো দিকে, আইজল হয়তো ম্যাচের শুরু থেকেই তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে যাবে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। ওদের একমাত্র লক্ষ্য থাকবে যত দ্রুত সম্ভব ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতে তুলে নেওয়া। আর সেটা যত দ্রুত ওরা করতে পারবে তত-ই ছন্দ পাবে ওরা। কারণ, গ্যালারি থেকে ওদের সমর্থকদের জোগানো অনুপ্রেরণা-ও একটা বড় শক্তি আইজলের।
এই ধরনের ম্যাচে অ্যাড্রিনালিন-এর নিঃসরণের ব্যাপারটাও একটা ফ্যাক্টর। আর এখানেই রাশ টানতে হবে আইজল এফসি-কে। মাঠে নেমে অতিরিক্ত উত্তেজনা ক্ষতি করতে পারে ওদের পারফরম্যান্স। ফলে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখাটাও আইজলের ফুটবলারদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
এখন প্রশ্ন, ঘরের মাঠে মোহনবাগানকে হারিয়ে ভারতীয় ফুটবলের লেস্টার সিটি কি হতে পারবে আইজল এফসি? কাজটা কঠিন হতে পারে। কিন্তু অসম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy