Advertisement
১৬ মে ২০২৪

চাপ নিলেই সর্বনাশ, বলছেন দুই ‘মজ বুড়ো’

কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে রবিবার দু’দলের জার্সিতে হাজির থাকবেন ডার্বির দুই ‘মজ বুড়ো’।

শিল্টন ও মেহতাব

শিল্টন ও মেহতাব

রতন চক্রবর্তী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৪
Share: Save:

কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে রবিবার দু’দলের জার্সিতে হাজির থাকবেন ডার্বির দুই ‘মজ বুড়ো’।

একজনের ভাঁড়ারে পনেরো বছর টানা খেলে ৫৩ বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা।

অন্য জনের এগারো বছর একই জার্সিতে ৩৩ টি ডার্বি খেলার গৌরব লেপ্টে।

ইস্টবেঙ্গলের মেহতাব হোসেন আর মোহনবাগানের শিল্টন পাল।

একজন লাল-হলুদের এখনও অপরিহার্য মিডফিল্ড জেনারেল। অন্য জন তেরো বছর পর সবুজ-মেরুনের আই লিগ জেতা অধিনায়ক। আপাতত রিজার্ভ বেঞ্চে থাকলেও প্রয়োজন পড়লেই দাঁড়িয়ে যান গোলের নীচে।

পজিশন আলাদা। কোচের কাছে তাদের প্রয়োজনও ভিন্ন। কিন্তু কী আশ্চর্য দু’জনেই মনে করেন, রবিবারের ডার্বি জেতা বা হারার উপর লিগ খেতাব জেতা নির্ভর করবে না। মেহতাব বললেন, ‘‘এটা জিতলে একটু এগবো। আত্মবিশ্বাস বাড়বে। তবে ডার্বি বরাবরই স্পেশ্যাল ওয়ান।’’ আর শিল্টনের মন্তব্য, ‘‘এটা আরও একটা লিগের ম্যাচ। তবে আমরা তো বাংলার ছেলে। ডার্বি না জিতলে ট্রফি জেতার মজাটাই চলে যায়। তাই ওটা জিততেই হবে।’’

কটক ছাড়া শহরের বাইরে ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা শিল্টনের প্রথম হলেও, মেহতাব অনেক বার খেলেছেন। শিলিগুড়ি তো বটেই কটক, দিল্লিতেও। কলকাতা ডার্বি অন্য জায়গায় খেলতে গেলে কেমন লাগে? মানসিকতা কি বদলে যায়? প্রশ্ন শুনে বয়সকে হার মানিয়ে দাপিয়ে খেলা মেহতাবের জবাব, ‘‘শিলিগুড়িতে খেলতে এলে মনে হয় নিজেদের মাঠে খেলছি। মাঠে নামলে কোথায় খেলছি অবশ্য মনে থাকে না।’’ আর ক্লাবের অনুশাসন চালু হওয়ার আগে একান্তে শিল্টন বলে দিয়েছিলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে খেলতে নামলে মনে হয় বাইরের মাঠ। বেঙ্গালুরু বা গোয়ায় যেমন মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে নামি তেমনই নামব রবিবার।’’

বিচার করতে নামলে ইস্টবেঙ্গলের তুলনায় বাগানে বঙ্গসন্তানদের সংখ্যাটা বেশি। এটা কি সঞ্জয় সেনের টিমের বাড়তি সুবিধা। বিশেষ করে ডার্বির মাহাত্ম্যটা তো বাংলার ছেলেদের কাছে বেশি। প্রশ্ন শুনে শিল্টনের মন্তব্য ছিল, ‘‘অবশ্যই। কারণ এই ম্যাচটা না জিতলে পাড়ায় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। যেটা অন্যদের পড়তে হয় না। তবে সনি-কাতসুমিরা অনেক দিন ধরে খেলছে বলে ওরাও বুঝে গিয়েছে ডার্বিটা সদস্য-সমর্থকদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’’ টিএফএ-র প্রাক্তনীর সঙ্গে অবশ্য একমত হয়েও হন না মেহতাব। ‘‘এটা ঠিক আমাদের উপর ডার্বি জেতার চাপটা বেশি থাকে। আবার এটাও ঠিক এই যে নতুন বিদেশিরা আমাদের টিমে খেলছে এরা ডার্বির গুরুত্বটা তেমন বোঝে না বলে চাপমুক্ত হয়ে খেলতে নামবে। এটা বিরাট সুবিধা এ বার আমাদের।’’

মজ বুড়োর গল্পের মতো এঁদের দু’জনের ভাঁড়ারেই রয়েছে প্রচুর ডার্বি-গল্প। ড্রেসিংরুমের নানা ঘটনা এবং রসায়ন তাঁদের নখদর্পণে। দু’জনের মধ্যে সবথেকে বড় মিল দু’জনেই চোট পেয়ে মাঠের বাইরে চলে গেলেও ফের ফিরে এসেছেন। ফিরে এসেছেন ভারতীয় ফুটবলের সবথেকে উত্তেজক মঞ্চে। সেটা থেকেই মেহতাব এবং শিল্টন দু’জনেরই শিলিগুড়ি ডার্বির আগে উপলব্ধি। ‘‘ইস্ট-মোহন ম্যাচে কেউ কখনও ফেভারিট হয় না। সেরা এবং ধারাবাহিক টিমও হেরে যায়। সব ম্যাচ একদিকে আর ডার্বি অন্যদিকে।’’

তা হলে ডার্বি জেতার টিপস কী? কী বলেন দুই ‘মজ বুড়ো’?

‘‘চাপ নিয়ে মাঠে না নেমে। নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলো।’’ মেহতাব এ কথা বলার পর শিল্টনের মুখ থেকেও বেরোয়, ‘‘চাপের মুখে নিজের খেলাটা ভুলে গেলেই সর্বনাশ। জিততেই হবে ধরে নিয়ে মানসিক ভাবে তৈরি হও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mehtab Hossain Shilton Paul Derby
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE