Advertisement
১৬ মে ২০২৪
সুপার কাপ ডার্বির মাঝে কাঁটা এখন শুধু সুনীল

ডুডুর গোলে ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল

লাল-হলুদ শিবিরের দাবি অন্তত সে রকমই। তীব্র চাপে পড়ে যাওয়া দলকে গোল করে সুপার কাপের ফাইনালে তোলার পরে সে জন্যই ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকারকে উচ্ছ্বসিত হতে দেখা গেল না।

নির্লিপ্ত: সতীর্থরা উচ্ছ্বাস দেখালেও গোল করে ভাবলেশহীন ডুডু। সোমবার ভুবনেশ্বরে। ছবি: এআইএফএফ

নির্লিপ্ত: সতীর্থরা উচ্ছ্বাস দেখালেও গোল করে ভাবলেশহীন ডুডু। সোমবার ভুবনেশ্বরে। ছবি: এআইএফএফ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৬
Share: Save:

ইস্টবেঙ্গল ১ : এফ সি গোয়া ০

ডুডু ওমাগবেমি কি গোল করে তাঁর সমর্থকদের বিরুদ্ধে পুষে রাখা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন?

লাল-হলুদ শিবিরের দাবি অন্তত সে রকমই। তীব্র চাপে পড়ে যাওয়া দলকে গোল করে সুপার কাপের ফাইনালে তোলার পরে সে জন্যই ইস্টবেঙ্গল স্ট্রাইকারকে উচ্ছ্বসিত হতে দেখা গেল না। যা তাঁর স্বভাববিরুদ্ধ।

দ্বিতীয়ার্ধের ৭৮ মিনিটে ডুডু গোলটা করলেন বাজপাখির কায়দায় ছোঁ মেরে। ইউসা কাতসুমির বাড়ানো বল এফ সি গোয়ার স্টপার মহম্মদ আলি ও গোলকিপার লক্ষ্মীকান্ত কাট্টিমণির মাঝখান দিয়ে যাওয়ার সময়ই ধাওয়া করে এসে গোলে পাঠান ডুডু। বল তখন কাট্টিমণির বাড়ানো হাতের ফুট খানেক দূরে ছিল।

ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে চাতক পাখির মতো গোলের আশায় বসে থাকা কয়েকশো লাল-হলুদ সমর্থক যখন ডুডুর নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছেন, উচ্ছ্বাসে ওড়াচ্ছেন ক্লাবের পতাকা, তখন ডুডুকে দেখা গেল উল্টোদিকে হাঁটতে। এবং সেটা একেবারে নির্বিকার মুখে। কেন এমন করলেন ডুডু? ইস্টবেঙ্গলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক ফোনে বললেন, ‘‘আমি ওকে ম্যাচের আগে তাতানোর জন্য বলেছিলাম, ‘তুমি আজ গোল পাবে এবং তার পর উচ্ছ্বাস দেখাবে না।’ আসলে আগের আইজল ম্যাচে গোল করতে না পারায় সমর্থকরা কিছু বলেছিল হয়তো। তাতে ও একটু রেগে গিয়েছিল। সেই রাগটা তো কাজে লাগাতে হবে।’’ ডুডুর বক্তব্য অবশ্য পাওয়া যায়নি। কারণ ম্যাচের পরে পায়ে ব্যান্ডেজ বেঁধে তিনি সোজা চলে যান ড্রেসিংরুমে। হোটেলে ফিরে সামান্য কিছু খেয়ে চলে যান ঘরে। বারবার ফোন করলেও ডুডু ফোন ধরেননি। গোলের দু’মিনিট পর অবশ্য পেশিতে চোটের জন্য বসে যান লাল-হলুদ স্ট্রাইকার। তাঁর জায়গায় নামেন আনসুমানা ক্রোমা।

গোল করার পর ক্ষোভ এবং রাগ দেখালেও ডুডুই শেষ পর্যন্ত হয়ে গেলেন এ দিনের নায়ক। আইএসএলের ক্লাব এফ সি গোয়ার অর্ধেক ফুটবলার ছিলেন না এদিনের সেমিফাইনালে। লালকার্ড এবং জোড়া হলুদ কার্ডের জন্য পাঁচ জন ফুটবলার ছাড়াই নেমেছিল ডেরিক পেরিরার দল। ডুডুর গোলের আগে আল আমনারা সেই সুযোগ নিতে পারেননি। একের পর এক সুযোগ নষ্ট করে জয়ের রাস্তা কঠিন করে তুলেছিল ইস্টবেঙ্গল। আল আমনা, ডুডু এবং কাতসুমি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। প্রথম কুড়ি মিনিটের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের ২-০ এগিয়ে যাওয়ার কথা। ম্যাচের পর কোচ খালিদ জামিলও বলে দিলেন, ‘‘গোয়ার পাঁচ জন ফুটবলার ছিল না। আমরা চেয়েছিলাম শুরুতেই গোল তুলে নিতে। সেটা যখন হচ্ছিল না তখন প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন ছিলাম। যাক শেষ পর্যন্ত ফাইনালে ওঠা গিয়েছে।’’ ডুডুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ খালিদ বললেন, ‘‘ডুডু বরাবরই সুযোগসন্ধানী। ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েছে।’’

আজ মঙ্গলবার মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরুর ম্যাচ রয়েছে। ওই ম্যাচে যে দল জিতবে তাদের সঙ্গেই খেলতে হবে ফাইনাল। কাকে প্রতিপক্ষ চাইছেন খালিদ? লাল-হলুদ কোচের জবাব, ‘‘কে জিতবে জানি না। তবে আমরা তৈরি।’’ এ দিন অবশ্য ঘুরিয়ে খালিদকে কটাক্ষ করেছেন সুভাষ। বলে দিয়েছেন, ‘‘আই লিগে আমাদের কোনও পরিকল্পনা ছিল না। তাই ব্যর্থ হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। সুপার কাপে সেটা হয়েছে বলেই দল ফাইনালে।’’ কিন্তু হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়া ডুডু কি খেলবেন? মাঠে সুভাষ বলেছেন, ‘‘অনিশ্চিত।’’ রাতে ফোনে বললেন, ‘‘দু’দিন বিশ্রাম নিলে সুস্থ হয়ে যাবে। খেলবে।’’

ইস্টবেঙ্গল এ দিন পাঁচ বিদেশি নিয়েই নেমেছে। গোয়া নেমেছিল দু’জন নিয়ে। গোয়া কোচ মাঝমাঠে ফুটবলার বাড়িয়ে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন খালিদের দলকে। তাদের কোরোমিনাসের শট বিপক্ষের গোল লাইন থেকে ফেরে। খেলা শেষ হওয়ার কয়েক মিনিট আগে অবশ্য লালকার্ড দেখেন গোয়ার ফুটবলার এদু বেদিয়া।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE