লাল-হলুদ উৎসবে মাততে বান্ধবীকে নিয়ে পৌঁছে গেলেন ডং। শুক্রবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
ভারতীয় ফুটবলে ইতিহাস গড়ে টানা সাত বার কলকাতা লিগ জয়ে কোনও দাগ রাখতে চাইছেন না ডং, মেহতাবরা। অপরাজিত থেকে এ বারের লিগ শেষ করতে চাইছে লাল-হলুদ।
হেপ্টা লিগ জয়ের পরের সকালে উৎসবের মধ্যেও মেহতাব হোসেনের মুখ থেকে তাই বেরিয়েছে, ‘‘সাফল্যের এই সাত বছরের মধ্যে এক বার আমরা লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েও এরিয়ানের কাছে হেরে যাওয়ায় অনেক সমালোচনা হয়েছিল। সেটা ভুলিনি। কাজেই এ বার লিগ জিতে গেলেও কোনও ভাবেই শেষ ম্যাচ হারতে চাই না। অপরাজিত ভাবেই লিগ শেষ করতে চাই।’’ রবিবার ইস্টবেঙ্গলের শেষ ম্যাচ এরিয়ানের সঙ্গে। বারাসতে।
সদস্য-সমর্থকদের মধ্যে মিষ্টি বিলিয়ে টানা ঐতিহাসিক জয়ের তাঁবুতে সেলিব্রেশন শুরু হয়ে গিয়েছিল শুক্রবার সকালেই। সকাল সকালই তাঁবুতে চলে এসেছিলেন সচিব কল্যাণ মজুমদার, সহ-সচিব শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত, অন্যতম শীর্ষ কর্তা দেবব্রত সরকার-সহ অনেক কর্তা। এসেছিলেন ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, সুরজিৎ সেনগুপ্তর মতো ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলারও। সুরজিৎ বলছিলেন, ‘‘আমাদের তৈরি রেকর্ড আমাদের ছেলেরাই ভাঙল। তাই কোনও আফসোস নেই। বরং খুশিই হয়েছি। মেহতাব-ডংরা এ বার আই লিগে ভাল ফল করার চেষ্টা করুক।’’
বর্তমান ফুটবলারদের মধ্যে রাহুল ভেকে, অর্ণব মণ্ডলরা ক্লান্ত থাকায় আসতে পারেননি। পেটের সমস্যায় অনুপস্থিত ছিলেন টানা সাত বছর লাল-হলুদ জার্সি গায়ে খেলা গুরবিন্দর সিংহ। তবে মেহতাব, লালরিন্দিকা, রবার্ট-সহ বাকি ফুটবলাররা হাজির ছিলেন সকাল থেকেই। এঁদের নিয়েই সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ লাল-হলুদ পতাকা তোলেন ক্লাব সচিব। ব্যানার-পোস্টার, লাল-হলুদ আবির নিয়ে হাজির ছিলেন কিছু সদস্য-সমর্থকও। তবে অন্য বছরের মতো উৎসাহ চোখে পড়েনি। সেখানেই ক্লাব কর্তাদের ঘোষণা, আইএসএল শেষ হওয়ার পর প্রথমবার হেক্সার রেকর্ড গড়া ফুটবলারদের সঙ্গে এখনকার ডং-মেহতাবদের সংবর্ধনা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে ক্লাবের অন্যতম শীর্ষ কর্তার মন্তব্য, ‘‘আই লিগের দলে অনেক বদল হবে। তবে সেটা কারা তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’
ডং অবশ্য সে সময় ছিলেন না। ট্র্যাফিক জ্যামে আটকে থাকায় তিনি এলেন নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পরে। তাঁবুতে বসে এর পর তিনিও জানিয়ে দিলেন, ‘অলউইন’ রেকর্ড করে লিগ শেষ করাটা তাঁরও অন্যতম লক্ষ্য। তবে হাঁটুতে চোট থাকায় কোরিয়ান মিডিও অসমে যাবেন কি না, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন নিজেই।
ডংয়ের মতোই দেরিতে তাঁবুতে আসেন মহম্মদ রফিকও। তাঁরও বাঁ পায়ের হাঁটুতে চোট থাকায় লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটছিলেন। দু’জনকেই ড্রেসিংরুমে দীর্ঘক্ষণ দেখার পর ক্লাবের ডাক্তার-কর্তা শান্তিরঞ্জন দাশগুপ্ত জানিয়ে দেন, ‘‘বিশ্রাম নিলেই সপ্তাহ দু’য়েকের মধ্যে মাঠে নামতে পারবেন ডং। রফিকের ব্যাপারে সোমবার বলতে পারব।’’
সোমবার থেকে কলকাতায় আই এসএলের শেষ পর্বের শিবির করছে কেরল ব্লাস্টার্স। মোহনবাগান মাঠে। ফলে মেহতাব-রফিকদের ওই দিন থেকে দেখা যাবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মাঠে। লাল-হলুদের মিডফিল্ড জেনারেল এ দিন নিজেই সে কথা জানিয়ে স্বস্তির সঙ্গে বলছিলেন, ‘‘কলকাতায় শিবির হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি।’’ ডং যদিও প্রথম আইএসএলে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের হয়ে খেললেও গত দু’মরসুম খেলার সুযোগ পাননি কোনও টিমে। বাইরে। এ দিন সেই প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘‘গত বার আটলেটিকোর প্রস্তাব ছিল। কিন্তু চোটের কারণে খেলা হয়নি। এই বছর কী হয় দেখা যাক।’’
রবিবার কলকাতা লিগ শেষ করেই সোমবার বরদলুই ট্রফি খেলতে গুয়াহাটি রওনা দিচ্ছে লাল-হলুদ ব্রিগেড। যেখানে ডং-সহ লাল-হলুদের তিন বিদেশিই যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ক্লাব কর্তারা। চোট থাকলেও ডংকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অক্টোবরের শেষে বাংলাদেশেও টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করছে ইস্টবেঙ্গল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy