ঘানাকে হারিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফিফার বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেন সুয়ারেজ়। ছবি: টুইটার।
তখনও শেষ হয়নি খেলা। সংযুক্ত সময়ের কয়েক মিনিট বাকি ছিল। ঘানার বিরুদ্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল উরুগুয়ে। তবু হাসি ছিল না লুইস সুয়ারেজ়ের মুখে! উরুগুয়ের তারকা স্ট্রাইকারের মুখে তখন শুধুই হতাশা। চোখে শূন্যতা।
কাভানিরা ব্যবধান বাড়ানোর মরিয়া চেষ্টা করছিলেন মাঠে। তা-ও সময় যত এগোচ্ছিল, তত হতাশায় ডুবে যাচ্ছিলেন সুয়ারেজ়। মুখ লুকোচ্ছিলেন জার্সিতে।
সংযুক্ত সময়ের মেয়াদ যত কমছিল, তত শুকিয়ে যাচ্ছিল সুয়ারেজ়ের মুখ। যেন তাঁর জীবনের সময়ই ক্রমশ কমে আসছে। জীবনই তো! ফুটবলজীবন। জীবনের প্রথম ভালবাসা। যে ফুটবলের জন্য গোটা জীবন উৎসর্গ করে দিয়েছেন। সব ফেলে ছুটেছেন ফুটবল মাঠে। বছরের পর বছর অনুশীলন করেছেন। নিজেকে তৈরি করেছেন। দেশকে তৃতীয় বার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন করার স্বপ্ন বুকে আঁকড়ে এগিয়েছেন। সেই ফুটবল জীবনের শেষ মুহূর্ত আসন্ন! প্রত্যাশার থেকে কিছুটা আগেই।
সুয়ারেজকে আর দেখা যাবে না বিশ্বকাপে। ম্যাচের পর ইনস্টাগ্রামে বিদায় জানালেন বিশ্বকাপকে। সুয়ারেজ় লিখেছেন, ‘‘ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে বিশ্বকাপকে বিদায় জানালাম। শান্তির শুধু এটুকুই, দেশের জন্য আমরা আমাদের সব কিছু দিয়েছি। কেউ সম্মান না করলেও উরুগুয়ান হিসাবে আমরা গর্বিত। উরুগুয়ের সব মানুষকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি মুহূর্তে আমাদের সমর্থন করার জন্য।’’
বিশ্বকাপকে বিদায় জানালেও ফিফার প্রতি ক্ষোভ গোপন করেননি সুয়ারেজ়। তাঁর অভিযোগ, ফিফা সব সময় উরুগুয়ের বিরুদ্ধে। ঘানার বিরুদ্ধে অন্তত দু’টি পেনাল্টি তাঁদের দেওয়া হয়নি বলে দাবি সুয়ারেজ়ের। তিনি বলেছেন, ‘‘এডিনসন কাভানি এবং ডারউইন নুনেজ়কে ঘানা বক্সে ফাউল করার পরেও পেনাল্টি দেওয়া হয়নি। ফিফা সব সময়ই উরুগুয়ের বিরুদ্ধে। ম্যাচের শেষে ইচ্ছে করছিল পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে ধরতে। অথচ ফিফার প্রতিনিধিরা অনুমতি দিলেন না। অথচ ফ্রান্সের এক জনকে বাচ্চাদের নিয়ে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে দেখা গিয়েছে।’’
কাতার বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নিতে হবে ভাবেননি ক্লাব ফুটবলে লিয়োনেল মেসি, নেইমারদের প্রাক্তন সতীর্থ। সুয়ারেজ় বলেছেন, ‘‘আমরা প্রত্যেকে নিজের সেরাটা দিয়েছি। সকলেই ভীষণ হতাশ। অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম আমরা। কিন্তু আমরাই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। পরের রাউন্ডে যেতে না পাওয়ার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।’’ গোলপার্থক্যে ছিটকে যাওয়ায় আরও বেশি হতাশ সুয়ারেজ়। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা সব কিছু দিয়ে ঝাঁপিয়ে ছিলাম। আমরা গোল করেছি। কিন্তু ফলাফল আমাদের হাতে ছিল না। পারফরম্যান্সের পর্যালোচনা করব আমরা। যদিও যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। আর কিছুই বাকি নেই।’’
ঘানার বিরুদ্ধে আর একটা গোল করতে পারলেই দ্বিতীয় রাউন্ডের ছাড়পত্র পেত উরুগুয়ে। সুয়ারেজ় বলেছেন, ‘‘তৃতীয় গোল করার একাধিক সুযোগ আমরা পেয়েছিলাম। ম্যাচের ৮০ মিনিটে আমরা দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার জায়গায় ছিলাম। শেষ দিকে চার-পাঁচটা গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আমরা গোল করতে পারিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy