বিশ্বকাপে হারের পর কী বললেন এমবাপে? ছবি: রয়টার্স
বিশ্বকাপের ফাইনালে হ্যাটট্রিক। গোটা প্রতিযোগিতায় আটটি গোল। তার পরেও খালি হাতে বিশ্বকাপের মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হচ্ছে! কিলিয়ান এমবাপের থেকে দুঃখী মানুষ এই মুহূর্তে হয়তো পৃথিবীতে আর কেউ নেই। বিশ্বকাপ ট্রফির পাশ দিয়ে মাথা নীচু করে তাঁর হেঁটে বেরিয়ে যাওয়ার দৃশ্য মনে করিয়ে দিয়েছে ১৬ বছর আগের জ়িনেদিন জ়িদানকে। রবিবার রাতের লুসাইল স্টেডিয়াম দেখতে পেল এমবাপেকেও।
ফাইনালের পর যথারীতি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি এমবাপে। তবে ম্যাচের প্রায় ১৭ ঘণ্টা পরে তিনটি শব্দে নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনি। সমাজমাধ্যমে এমবাপে লিখেছেন, “আমরা ফিরে আসব।” ২০১৮-য় রাশিয়া বিশ্বকাপে ১৯ বছর বয়সেই ট্রফির স্বাদ পেয়েছিলেন এমবাপে। এ বারও প্রায় একার হাতে দলকে জিতিয়ে দিয়েছিলেন। অল্পের জন্য কাপ এবং ঠোঁটের দূরত্ব রয়ে গিয়েছে। এমবাপের এই বার্তায় অনেকেই মনে করছেন, আগামী বছর আবার বিশ্বকাপের জন্য নতুন উদ্যমে ঝাঁপাবেন এমবাপে। এমনিতে তাঁর যা বয়স তাতে ছন্দ ধরে রাখতে পারলে আগামী অন্তত তিনটি বিশ্বকাপে খেলতে পারেন। তা হলে ভেঙে দিতে পারেন একাধিক নজিরও।
Nous reviendrons. 🙏🏽 pic.twitter.com/Ni2WhO6Tgd
— Kylian Mbappé (@KMbappe) December 19, 2022
রবিবারের ম্যাচে প্রথমার্ধে এমবাপেকে আটকে রেখেছিল আর্জেন্টিনা। তাঁর প্রধান অস্ত্র প্রান্ত ধরে দৌড়। যে গতিতে তিনি দৌড়ন তার সঙ্গে একমাত্র উসেইন বোল্টের দৌড়ের তুলনা হয়। সেই দৌড় বন্ধ করার জন্য মোলিনা ও ম্যাক অ্যালিস্টারকে রেখেছিলেন আর্জেন্টিনার কোচ লিয়োনেল স্কালোনি। ফলে বার বার আটকে যাচ্ছিলেন তিনি। ফরাসি কোচ দিদিয়ের দেশঁ অলিভিয়ের জিহুকে তুলে নেওয়ায় প্রধান স্ট্রাইকারের ভূমিকায় চলে যান এমবাপে। ফলে আরও বেশি নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। প্রথমার্ধে মাত্র এক বার আর্জেন্টিনার বক্সে ঢুকতে পেরেছিলেন এমবাপে।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে খেলা যত গড়াল তত ম্যাচে দাপট দেখাতে শুরু করলেন এমবাপে। বয়সের ছাপ কোথায় হয়তো দেখা গেল মেসির খেলায়। বল ধরছিলেন। কিন্তু সে ভাবে আক্রমণ তৈরি করতে পারছিলেন না। অন্য দিকে এমবাপে নিজের পছন্দের জায়গায় খেলা শুরু করতেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন। বক্সের মধ্যে ওটামেন্ডি ফাউল করায় পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। জোরালো শটে গোল করেন এমবাপে। দু’মিনিট পরেই বক্সের মধ্যে থেকে ডান পায়ের দুরন্ত শটে ফ্রান্সের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন এমবাপে। চলন্ত বলে তিনি যে শট মারলেন তা এ বারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোল। নির্ধারিত সময়ের শেষ ১০ মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত ফ্রান্স। এমবাপের জোরালো শট একটুর জন্য বাইরে বেরিয়ে যায়।
অতিরিক্ত সময়ে মেসির গোলে আর্জেন্টিনা আবার এগিয়ে গেলে মনে হচ্ছিল ফ্রান্সের হার নিশ্চিত। কিন্তু তখনও মাঠে ছিলেন এমবাপে। বক্সের বাইরে থেকে গোল লক্ষ্য করে শট মারেন তিনি। বক্সের মধ্যে সেই বল পারেদেসের হাতে লাগায় পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। আরও এক বার পেনাল্টি থেকে গোল করেন এমবাপে। সেই সঙ্গে মেসিকে টপকে বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি ৮ গোল হয়ে যায় তাঁর। কিন্তু তার পরেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিততে পারল না ফ্রান্স। টাইব্রেকার থেকে এমবাপে আবার গোল করলেও তাঁর দলের দুই সতীর্থের শট বাঁচিয়ে দেন এমিলিয়ানো মার্তিনেস। শেষ পর্যন্ত চোখের জলের বিশ্বকাপ ছাড়তে হল তাঁকে। তবে নিজের দ্বিতীয় বিশ্বকাপেই বিশ্বের সেরাদের তালিকায় ঢুকে পড়লেন এমবাপে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy