Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Kalyan Chaubey

বঙ্গ ফুটবল কর্তাদের তোপ কল্যাণের

দেশের ফুটবল নিয়ামক সংস্থার শীর্ষ পদে বাংলার প্রাক্তন গোলরক্ষক। অথচ চব্বিশ ঘণ্টা আগে কোচ ইগর স্তিমাচের ঘোষিত ২৪ জনের দলে এক জনও বাঙালি ফুটবলার নেই।

লক্ষ্য: বাংলায় ফুটবলের সুদিন ফেরাতে চান কল্যাণ। নিজস্ব চিত্র

লক্ষ্য: বাংলায় ফুটবলের সুদিন ফেরাতে চান কল্যাণ। নিজস্ব চিত্র

শুভজিৎ মজুমদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:২৬
Share: Save:

ফুটবল মাঠ থেকে রাজনীতির অলিন্দ হয়ে মাত্র সপ্তাহ দু’য়েক আগেই ভাইচুং ভুটিয়াকে বিপুল ভোটে হারিয়ে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি হয়েছেন কল্যাণ চৌবে। যখন খেলতেন, দলের দুর্গ সামলাতেন। এ বার কাঁধে তুলে নিয়েছেন ভারতীয় ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব।

ফুটবলার থেকে প্রশাসনের শীর্ষ পদে— কতটা কঠিন ছিল এই যাত্রাপথ? শনিবার সন্ধ্যায় সল্টলেকের এক পাঁচতারা হোটেলে এআইএফএফ-র নতুন সভাপতির কথায়, ‘‘দীর্ঘ এই যাত্রা খুবই কঠিন ও সংঘর্ষপূর্ণ ছিল। ভাবিনি কখনও এই জায়গায় আসব।’’ খেলোয়াড় জীবনে উপেক্ষা ও বঞ্চনার যন্ত্রণাই যে তাঁর মনের মধ্যে ফুটবল প্রশাসনে আসার বীজ বপন করে দিয়েছিল, খোলাখুলি জানালেন কল্যাণ। বললেন, ‘‘যখন খেলতাম, তখন খুব রাগ হত ফেডারেশনের উপরে। সন্তোষ ট্রফি খেলতে যেতে হত ট্রেনের সাধারণ কামরায়। খড়গপুরে রেলের প্রতিযোগিতায় খেলতে গিয়ে প্রায় ৪২ ডিগ্রি গরমের মধ্যে কারশেডে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনের কামরার মধ্যে থাকতে হত। তখন মনে হত যদি পরিবর্তন আনতে হয়, তা হলে সেখানে পৌঁছতে পারলে ভাল হয়। মাঝে মধ্যে এই অলীক স্বপ্ন দেখতাম না, তা নয়। যদিও ফেডারেশনের নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার বাহাত্তর ঘণ্টা আগেও প্রস্তুত ছিলাম নাসভাপতি হওয়ার জন্য।’’

ফেডারেশনের সভাপতি হওয়ার জন্য প্রস্তুত না থাকলেও নির্বাচিত হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ভারতীয় ফুটবলের উন্নতিতে সবচেয়ে আগে কী পদক্ষেপ করা উচিত, তার রূপরেখা তৈরি করেফেলেছেন কল্যাণ। বললেন, ‘‘আমাদের এই বিশাল দেশে প্রতি ২০০ কিলোমিটার অন্তর ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি দেখতে পাওয়া যায়। তাই রাতারাতি কোনও পরিকল্পনা এনে সব কিছু বদলে ফেলা যায় না। আমরা ১০০ দিনের একটা পরিকল্পনা করেছি। রাজ্য সংস্থাগুলির প্রতিনিধিরা ফুটবলের উন্নতিতে কী পরিকল্পনা করেছেন, তা জানাবেন। তার পরে কেন্দ্র, রাজ্য সরকার, সাই ও রাজ্যের ফুটবল সংস্থাগুলিকে একসঙ্গে নিয়ে এগোতে চাই।’’

দেশের ফুটবল নিয়ামক সংস্থার শীর্ষ পদে বাংলার প্রাক্তন গোলরক্ষক। অথচ চব্বিশ ঘণ্টা আগে কোচ ইগর স্তিমাচের ঘোষিত ২৪ জনের দলে এক জনও বাঙালি ফুটবলার নেই। জাতীয় কোচের সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে কল্যাণ কাঠগড়ায় তুললেন, বাংলার ফুটবল কর্তাদেরই। বললেন, ‘‘এটাই ভবিতব্য ছিল। গত দশ বছর ধরে সন্তোষ ট্রফি, বিভিন্ন বয়স ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় বাংলার কত ফুটবলার প্রতিনিধিত্ব করছে? ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান-সহ অন্যান্য ক্লাবগুলিতে বাঙালি ছেলেরা কী করছে? আইএসএলে কলকাতার দুই প্রধান যোগ দেওয়ার পরে কত জন বাঙালি ফুটবলার খেলার সুযোগ পেয়েছে? বাংলার ফুটবলারের সংখ্যা যে ক্রমহ্রাসমান, সে দিকে কারও নজরই ছিল না। দীর্ঘ অবহেলার ফল ভোগ করতে হচ্ছে।’’ এর জন্য দায়ী কারা? কল্যাণের স্পষ্ট জবাব, ‘‘বাংলার ফুটবল যাঁরা চালাচ্ছেন। আইএফএ থেকে ক্লাব কর্তারা— প্রত্যেকেই সমান দায়ী।’’ বাংলার ফুটবলে সুদিন ফেরানোর মন্ত্র কী? ‘‘আবার শূন্য থেকে শুরু করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalyan Chaubey bhaichung bhutia IFA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE