Advertisement
১৮ মে ২০২৪

প্রত্যাবর্তনেও কামাল, আজ ফাইনাল মেরির

অবশেষে সেই ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন সফল হল মেরির। মঙ্গলবার এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে গেলেন মণিপুরের এই বক্সার।

বিজয়ী: এশিয়ান বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে চলছে মেরির দাপট। নিজস্ব চিত্র

বিজয়ী: এশিয়ান বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে চলছে মেরির দাপট। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:২০
Share: Save:

রিংয়ে ফেরার পর গত এক বছরে বুলগেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, আয়ার্ল্যান্ড সফর করেছেন ভারতীয় মহিলা বক্সিং দলের হয়ে। কিন্তু কোথাও ফাইনালে ওঠা হয়নি অলিম্পিক্সে পদকজয়ী প্রথম ভারতীয় মহিলা বক্সার মেরি কমের।

অবশেষে সেই ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন সফল হল মেরির। মঙ্গলবার এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে গেলেন মণিপুরের এই বক্সার। যে টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত চারটি সোনা ও একটি রুপোর পদকের মালিক তিনি। মেরির সঙ্গে ফাইনালে গেলেন গত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে রুপোজয়ী হরিয়ানার বক্সার সনিয়া লাথারও।

ফাইনালে উঠেও আত্মতুষ্টিতে ভাসতে নারাজ মেরি কম। বলছেন, ‘‘এতেই আনন্দে ভেসে গেলে চলবে না। বুধবার ফাইনাল জিতে সোনার পদকটাও দরকার। তার পরে আনন্দ করা যাবে।’’

দশ সদস্যের ভারতীয় শিবিরে এ দিন মেরির মুখে যখন হাসি, তখন তারই সমসাময়িক সরিতাদেবীর মুখে ফাইনালে না ওঠার হতাশা। সেমিফাইনালে উঠলেও ব্রোঞ্জ পদকেই থেমে যেতে হল তাঁকে। মেরির মতোই দীর্ঘদিন অপেশাদার বক্সিংয়ের বাইরে ছিলেন তিনিও। প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন সরিতা এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে এর আগে পাঁচ বার পদক জিতে ফিরেছেন তিনি।

হো চি মিন সিটিতে এ দিন সেমিফাইনাল ম্যাচে ৪৮ কেজি বিভাগে মেরি কমের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাপানের সুবাসা কোমুরা। কোয়ার্টার ফাইনালে মেরি শুরু থেকে আক্রমণাত্মক না হলেও সেমিফাইনালে কিন্তু প্রথম রাউন্ড থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁর জাপানি প্রতিপক্ষের উপর। ফলে শুরু থেকেই আত্মরক্ষার জন্য বেশি ব্যস্ত ছিলেন সুবাসা। ফলে তিন রাউন্ডেই একতরফা ৫-০ জিতে ম্যাচ শেষ করে দেন মেরি। আজ, বুধবার সোনার লড়াইয়ে মেরি কমের প্রতিদ্বন্দ্বী কোরিয়ার হিয়াং মি কিম।

আরও পড়ুন: ‘মেডেল লাও, নকরি পাও’ কোথায় চাকরি? প্রশ্ন সবিতার

প্রত্যাবর্তনের পর প্রথম বার ফাইনালে উঠে নিজের খুশি মনোভাবের কথা যদিও গোপন করেননি মেরি। বলেন, ‘‘প্রত্যাবর্তনের পর প্রথম কোনও টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠলাম। আনন্দ তো হবেই। তবে খুব বেশি আনন্দ করার দিন নয় আজ। কারণ ফাইনাল বাউট এখনও রয়েছে।’’ সঙ্গে সেমিফাইনালে জাপানি প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারানো সম্পর্কে বলেন, ‘‘৫-০ জিতলেও ম্যাচটা সহজ ছিল না। দ্বিতীয় রাউন্ডে পাল্টা আক্রমণ করে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিল প্রতিপক্ষ। রিংয়ে দেশকে সাফল্য এনে দিতে নামি সব সময়। এ বার সামনে ফাইনাল। তার জন্য মনোনিবেশ করছি।’’

মেরির পাশাপাশি এ দিন ৫৭ কেজি বিভাগে ফাইনালে গেলেন সনিয়া লাথার। হরিয়ানার হিসারের রেলকর্মী এই বক্সার এ দিন সেমিফাইনালে হারালেন উজবেকিস্তানের ইয়োদগোরয় মিরজেভাকে। মেরির মতোই এ দিন সনিয়া আক্রমণাত্মক খেলে তিন রাউন্ডেই জিতলেন ৫-০। ফাইনালে তাঁর প্রতিপক্ষ চিনের জুনহুয়া জিন।

ফাইনালে ওঠার পর সনিয়া আত্মবিশ্বাসী মেজাজেই বলে যান, ‘‘এখনও পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে নিজের ছন্দেই এগোতে পেরেছি। এ পর্যন্ত কোনও সমস্যা হয়নি লড়তে গিয়ে। বুধবার ফাইনালের জন্য আমি তৈরি। দেশকে সোনা এনে দেওয়ার জন্য নিজেকে পুরোদমে তৈরি রাখছি।’’

সনিয়া, মেরি ফাইনালে উঠলেও এ দিন সেমিফাইনালে সরিতাদেবী-সহ হারলেন পাঁচ ভারতীয় মহিলা। এদের মধ্যে রয়েছেন, শিক্ষা, প্রিয়ঙ্কা চৌধুরী, লিনা বরগোঁহাই ও সীমা পুনিয়া। ব্রোঞ্জ পদকেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে এদের।

৬৪ কেজি বিভাগের সেমিফাইনালে সরিতা দেবী হেরে গেলেন চিনের ড্যান ডউ-এর কাছে। সরিতা এ দিন প্রথম রাউন্ডে জিতলেও, দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাউন্ডে হেরে যান। শিক্ষা (৫৪ কেজি বিভাগ) হারলেন তাইওয়ানের লিন ইউ-তিংগ-এর কাছে। ৮১ কেজিরও বেশি বিভাগে উজবেকিস্তানের গুজাই ইসমাতোভা-র কাছে হারলেন সীমা পুনিয়া। অন্য ৬৯ কেজি বিভাগে লাভলিনা বরগোঁহাই হেরেছেন কাজাখস্তানের ভ্যালেন্তিনা খালজোভা-র কাছে। ৬০ কেজি বিভাগে প্রয়ঙ্কা চৌধুরী হেরে যান কোরিয়ার ইয়োনজি ওহ-এর কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE