দুর্দান্ত ইনিংস খেললেন সূর্যকুমার যাদব। ছবি-সোশ্যাল মিডিয়া।
শারজায় ভয়ঙ্কর রাজস্থান রয়্যালস। পর পর দুটো ম্যাচ এখানে জিতে দারুণ শুরু করেছিলেন স্টিভ স্মিথরা। কিন্তু শারজার বাইরে খেলতে নামলেই ব্যর্থতা তাঁদের সঙ্গী। সেটাই আরও একবার দেখা গেল মঙ্গলবারের আবু ধাবিতে।
রাজস্থানকে এ দিন ৫৭ রানে হারিয়ে আইপিএলের লিগ টেবলে শীর্ষে পৌঁছে গেল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। ৬ ম্যাচ থেকে তাদের সংগ্রহ আট পয়েন্ট। অন্য দিকে টানা তিন ম্যাচ হেরে রাজস্থান নেমে গেল সাত নম্বরে।
আবু ধাবির পিচে ঘাস ছিল। ঘাস থাকলে বোলাররা শুরুর দিকে সাহায্য পান। সেই পিচেই টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রোহিত। সূর্যকুমার যাদবের ৪৭ বলে ৭৯ রানের ইনিংস মুম্বইকে পৌঁছে দেয় ১৯৩ রানে। রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই উইকেট হারাতে থাকে রাজস্থান। প্রথম ছ'ওভারেই তিন উইকেট হারিয়ে একসময়ে পথভ্রষ্ট হয়েছিল স্টিভ স্মিথের দল। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই যশস্বী জয়সওয়ালকে (০) ফেরান ট্রেন্ট বোল্ট। স্টিভ স্মিথ (৬) দলের প্রধান ভরসা। সেই তিনিই যশপ্রীত বুমরার বলে কুইন্টন ডি' ককের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। সঞ্জু স্যামসন শারজার মাঠে ঝড় তুলেছিলেন। এ দিন ব্যর্থ সঞ্জু (০)। বোল্টের শিকার তিনি। মাহিপালের (১১) ক্যাচ শরীর ছুড়ে তালুবন্দি করেন পরিবর্ত ফিল্ডার অনুকূল রায়।
তাসের ঘরের মতো যখন উইকেট পড়ছে রাজস্থানের, তখন দলকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন একমাত্র জস বাটলার। যতক্ষণ তিনি ক্রিজে ছিলেন, ততক্ষণ আশায় বুক বেঁধেছিলেন রাজস্থান-ভক্তরা। কথায় বলে, ক্যাচ ধরো, ম্যাচ জেতো। লং অনে কেইরন পোলার্ডের দুরন্ত ক্যাচ বাটলারের (৪৪ বলে ৭০) ইনিংস শেষ করে দেয়। আর তিনি ফিরতেই লড়াই থেকে হারিয়ে যায় দল। বাকিদের কাছ থেকে দেখা গেল না লড়াই। ১৮.১ ওভারে ১৩৬ রানে শেষ হয়ে গেল রাজস্থান। প্রথম ৬ ওভারেই যদি কোনও দল তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে তা হলে কী ভাবে ম্যাচ জেতা সম্ভব? জেতেওনি রাজস্থান। ট্রেন্ট বোল্ট (২-২৬), যশপ্রীত বুমরা (৪-২০), প্যাটিনসন (২-১৯) সফল। দুর্দান্ত বোলিং করলেও বুমরা ম্যাচের সেরা নন। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হন সূর্যকুমার যাদব।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা মন্দ হয়নি মুম্বইয়ের। কুইন্টন ডি' কক ও রোহিত শর্মা প্রথম উইকেটে ৪৯ রান জোড়েন। মুম্বইয়ের ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন কার্তিক ত্যাগী। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে কার্তিক নজর কেড়েছিলেন। এ দিন নিজের প্রথম ওভারেই কুইন্টন ডি' ককের (২৩) উইকেট তুলে নেন তিনি। ক্রিজে জমে গিয়েছিলেন রোহিত (৩৫)। দশম ওভারে শ্রেয়াস গোপালকে মারতে গিয়ে লং অনে তিনি ধরা পড়েন রাহুল তেওয়াটিয়ার হাতে। পরের বলেই গোপাল ফেরান ঈশান কিষাণকে। খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।
আরও পড়ুন: পিঙ্ক বল টেস্ট দিয়ে শুরু ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ
সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ৪ বলে ২০ রান করেছিলেন ক্রুনাল পাণ্ড্য। সেই কারণে এ দিন তাঁকে পোলার্ড-হার্দিকের আগে পাঠানো হয়েছিল। ক্রুনাল পাণ্ড্য রানের গতি বাড়াতে পারেননি। ১৭ বলে ১২ রান করেন। মুম্বইয়ের রান বাড়ানোর কাজ করেন সূর্যকুমার। জোফ্রা আর্চার, অঙ্কিত রাজপুত, টম কারেনদের ইচ্ছামতো বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে হার্দিক পাণ্ড্যও (১৯ বলে ৩০ রান) মারমুখী ইনিংস খেলেন। সূর্যকুমার লড়াকু ইনিংস না খেললে মুম্বই হয়তো আরও আগেই থেমে যেত। সূর্যের তেজে এ দিন ঝলসে গেল রাজস্থান। পাঁচ বছর পরে রাজস্থানের বিরুদ্ধে জয়ের স্বাদ পেল মুম্বই।
২০১৫ সালে মুম্বই শেষ বার হারিয়েছিল রাজস্থানকে।স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে জড়িত থাকায় তার পরের দু' বছর নির্বাসিত ছিল তারা। ২০১৮ সালে আইপিএলে প্রত্যাবর্তন ঘটে রাজস্থানের। তার পরে রোহিত শর্মার দল আর হারাতে পারেনি রাজস্থানকে। মরুশহরে এত দিন পরে এল তৃপ্তির জয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy