দুরন্ত ইনিংস খেললেন ত্রিপাঠী। ছবি-সোশ্যাল মিডিয়া।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দেখা পাওয়ার জন্য একসময়ে বিশ্ববন্দিত অধিনায়কের রাঁচীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেন তিনি। যদি একঝলক দেখা যায় তাঁকে। তখন তিনি শুধুই ফ্যান। ভাগ্যের চাকা নিজের অজান্তেই ঘুরে গিয়েছিল রাহুল ত্রিপাঠীর। যাঁকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতেন, রাইজিং পুণে সুপারজায়ান্টে খেলার সময়ে সেই ধোনির সঙ্গেই ড্রেসিং রুম শেয়ার করেছিলেন তিনি।
তার পর কেটে গিয়েছে তিন-তিনটে বছর। জার্সির রং বদলে রাহুল ত্রিপাঠী এখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের খেলোয়াড়। বুধবার ওপেনার ত্রিপাঠীর জন্যই ধোনির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে গিয়েছিল একসময়ে। কীভাবে তাঁর ‘সুপারফ্যান’কে দ্রুত ডাগ আউটে ফেরাবেন, সেই চিন্তাই ঘুরপাক খাচ্ছিল ধুরন্ধর অধিনায়কের মস্তিষ্কে।
কলকাতার ওপেনিংটা এ বার ঠিকঠাক হচ্ছিল না। শুভমান গিল ফর্মে থাকলেও সুনীল নারিন নিজের পুরনো ছন্দ হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন। ক্যারিবিয়ান তারকা অতীতের ছায়া। সেই কারণেই ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন আনে কলকাতা। শুভমান গিলের সঙ্গে রাহুল ত্রিপাঠীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কলকাতার হয়ে প্রথম বার ওপেন করতে নেমেই ত্রিপাঠী সুপারহিট।
দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ত্রিপাঠী নেমেছিলেন আট নম্বরে। ২২৮ রান তাড়া করতে নেমে একসময়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল কলকাতার। সেই অবস্থা থেকে ত্রিপাঠী ও ইয়ন মর্গ্যান পাল্টা মারের খেলা শুরু করেছিলেন। ১৬ বলে ৩৬ রান করেছিলেন ত্রিপাঠী। ম্যাচ যখন ঢলে পড়েছিল শ্রেয়াস আইয়ারদের ক্যাম্পে, তখনও আত্মবিশ্বাসে ফুটছিলেন রাহুল ত্রিপাঠী। বুক ঠুকে, শূন্যে হাত ছুড়ে সতীর্থদের বোঝাতে চাইছিলেন, অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন তিনি। সে দিন ভাগ্য সহায় না থাকায় মাথা নীচু করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল ত্রিপাঠীকে। দিল্লির কাছে ১৮ রানে হার মানতে হয়েছিল কেকেআরকে। কিন্তু ওই বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে নড়েচড়ে বসে টিম ম্যানেজমেন্ট।
আরও পড়ুন: ‘মাঁকড়’ নয়, ‘ব্রাউন’ আউট বলছেন গাওস্কর, কেন জানেন?
চেন্নাইয়ের মতো দলের বিরুদ্ধে সুনীল নারিনকে চার নম্বরে পাঠানোর সাহস দেখায় নাইট-শিবির। ওপেন করতে পাঠানো হয় ত্রিপাঠীকে। মাসল-রাসেল, সুনীল নারিন, ইয়ন মরগ্যানের মতো তারকারা যখন দ্রুত ফিরে গেলেন, তখন ধোনির-শিবিরে অস্বস্তি ধরালো রাহুলের ব্যাট। নিলামে ৬০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাঁকে দলে নিয়েছিল কেকেআর। ধোনির দলের বিরুদ্ধে ৫১ বলে ৮১ রানের অসম্ভব দামি ইনিংস খেললেন তিনি। ২৯ বছরের ডাকাবুকো ক্রিকেটারের ইনিংসে সাজানো ছিল আটটি চার ও তিনটি ছক্কা।
বড় ইনিংস আগেও খেলেছেন তিনি। কলকাতার বিরুদ্ধেই ২০১৭ সালের আইপিএলে ৫২ বলে ৯৩ রান করেছিলেন। সেই ইনিংস নিয়ে প্রবল চর্চা হয়েছিল। ক্রিকেটভক্তরা অনেক দিন মনে রেখেছিলেন সেই ইনিংস। আদর্শ ধোনির সামনেই আরও একটা মনে রাখার মতো ইনিংস খেললেন ত্রিপাঠী। সেই দুরন্ত ইনিংসই কলকাতাকে এনে দিল স্বস্তির জয়। তৃপ্তির হাসি দিয়ে রাহুল ত্রিপাঠী বুঝিয়ে দিলেন তিনি আজ দারুণ খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy