Advertisement
০২ জুন ২০২৪
IPL 2024

টানা ছ’ম্যাচে জয়, বিরাটরা আইপিএলের প্লে-অফে, শত্রুর মাঠে স্বপ্নভঙ্গ ধোনির চেন্নাইয়ের, হার ২৭ রানে

প্লে-অফে উঠতে হলে চেন্নাই সুপার কিংসকে ১৮ রানের বেশি ব্যবধানে হারাতেই হত। সেটাই করলেন বিরাট কোহলিরা। বেঙ্গালুরুর কাছে হেরে আইপিএল থেকে বিদায় হল মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের।

cricket

ম্যাচ জিতে উল্লাস বিরাট কোহলির। ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৪ ০০:০৩
Share: Save:

ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসকে হারিয়ে আইপিএলের প্লে-অফে উঠল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। পর পর ছ’ম্যাচ জিতে অসাধ্যসাধন করলেন বিরাট কোহলিরা। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২১৮ রান করে বেঙ্গালুরু। কোহলি করেন ৪৭ রান। অর্ধশতরান করেন অধিনায়ক ফাফ ডুপ্লেসি। প্লে-অফে উঠতে হলে চেন্নাই সুপার কিংসকে ২০০ রানের মধ্যে আটকাতে হত বেঙ্গালুরুকে। সেটাই করে দেখান কোহলিদের দলের বোলারেরা। জয়ের ফলে বেঙ্গালুরুর পয়েন্ট হয় ১৪। চেন্নাইয়ের সমান পয়েন্ট হলেও নেট রানরেটের বিচারে প্রথম চার পাকা হয় কোহলিদের। শেষ ম্যাচ হেরে আইপিএল থেকে বিদায় নিতে হল গত বারের চ্যাম্পিয়ন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের।

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। শুরুটা ভাল করেছিলেন বেঙ্গালুরুর দুই ওপেনার কোহলি ও ডুপ্লেসি। প্রথম ওভারের পর হাত খোলেন তাঁরা। কোহলির একটি ছক্কা চিন্নাস্বামীর ছাদে লেগে ফেরে। ৩ ওভারে বেঙ্গালুরুর রান ছিল ৩১। তার পরেই বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। বেশ কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকলেও ওভার কমেনি।

দ্বিতীয় বার খেলা শুরু হওয়ার পরে পিচ থেকে সাহায্য পেতে শুরু করেন স্পিনারেরা। বিশেষ করে মাহিশ থিকশানা ও মিচেল স্যান্টনারের বল বেশ ঘুরছিল। কিছু বল থমকে আসছিল। ফলে পাওয়ার প্লে-র পরের তিন ওভারে রানের গতি কমে যায়। পাওয়ার প্লে-র পরে আবার হাত খোলা শুরু করেন কোহলিরা। পিচে স্পিনারের সাহায্য পেলেও খারাপ বল করেন রবীন্দ্র জাডেজা। তাঁর বলের গতি বেশি ছিল। সেই গতি কাজে লাগিয়ে বড় শট খেলছিলেন কোহলিরা। ধীরে ধীরে নিজের অর্ধশতরানের দিকে এগোচ্ছিলেন কোহলি। কিন্তু ২৯ বলে ৪৭ রান করে স্যান্টনারের বলে আউট হন তিনি। স্যান্টনারের বল ঠিক মতো ব্যাটে-বলে হয়নি। লং অনে ভাল ক্যাচ ধরেন ড্যারিল মিচেল।

কোহলি না পারলেও অর্ধশতরান করেন ডুপ্লেসি। জাডেজার এক ওভারে বেশ কয়েকটি বড় শট খেলেন তিনি। ৫৪ রানের মাথায় দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রান আউট হন তিনি। রজত পাটীদার সোজা শট মেরেছিলেন। স্যান্টনারের হাতে লেগে বল উইকেটে লাগে। ডুপ্লেসি ক্রিজ়ে ব্যাট ঢোকাতে পারলেও ব্যাট হাওয়ায় ছিল। বেশ কিছু ক্ষণ দেখে তৃতীয় আম্পায়ার আউট দেন।

দুই ওপেনার আউট হলেও বেঙ্গালুরুর রানের গতি কমেনি। স্পিনারদের বিরুদ্ধে ভাল খেলছিলেন পাটীদার। ক্যামেরন গ্রিন নিশানা করছিলেন পেসারদের। দু’জনে মিলে দলের রান রেট ওভার প্রতি ১০-এর বেশি রাখছিলেন। ২৩ বলে ৪১ রান করেন পাটীদার। শেষ দিকে দীনেশ কার্তিক (৬ বলে ১৪) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (৫ বলে ১৬)-ও দ্রুত রান করেন।

শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২১৮ রান করে বেঙ্গালুরু। ১৭ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত থাকেন গ্রিন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই আউট হয়ে যান রুতুরাজ। ম্যাক্সওয়েলের বলে ফাইন লেগ অঞ্চলে খেলতে গিয়ে শূন্য রানে ফেরেন তিনি। ড্যারিল মিচেলও রান পাননি। ৪ রান করে আউট হন তিনি। চেন্নাইয়ের ইনিংস সামলান রাচিন রবীন্দ্র ও অজিঙ্ক রাহানে। ভাল খেলছিলেন তাঁরা। বল অনুযায়ী শট মারছিলেন। তাড়াহুড়ো করছিলেন না। জরুরি রান রেট আয়ত্তের মধ্যে রাখছিলেন।

বেঙ্গালুরুকে ম্যাচে ফেরান লকি ফার্গুসন। নিজের প্রথম বলেই ৩৩ রানের মাথায় রাহানেকে আউট করেন তিনি। অন্য দিকে স্বপ্নিল সিংহ ও ম্যাক্সওয়েল চেন্নাইয়ের ব্যাটারদের হাত খুলে খেলার সুযোগ দিচ্ছিলেন না। রানের গতি কমছিল। বড় শট মারা ছাড়া উপায় ছিল না। সেটাই করেন রাচিন। ম্যাক্সওয়েলের এক ওভারে ১৯ রান নেন তিনি। অর্ধশতরানও করেন নিউ জ়িল্যান্ডের এই ব্যাটার।

রাচিন ভাল খেললেও আর এক ব্যাটার শিবম দুবে ব্যাটে-বলে করতে পারছিলেন না। বল নষ্ট করছিলেন তিনি। ম্যাক্সওয়েলের বলে ক্যাচ তোলেন তিনি। মহম্মদ সিরাজ সেই ক্যাচ ছেড়ে দেন। যদিও সেই ওভারেই শিবমের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ৬১ রানের মাথায় রান আউট হন রাচিন। পরের ওভারেই আউট হন শিবম। ১৫ বলে ৭ রান করেন তিনি। ১১৯ রানে ৫ উইকেট পড়ে যায় চেন্নাইয়ের।

জাডেজা ও স্যান্টনার জুটি বাঁধার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্যান্টনারের শট শূন্যে লাফিয়ে তালুবন্দি করেন ডুপ্লেসি। বোঝা যাচ্ছিল এই ম্যাচ জিততে কতটা মরিয়া তাঁরা। স্যান্টনার আউট হতে নামেন ধোনি। প্লে-অফে উঠতে ২৪ বলে ৬৩ রান করতে হত চেন্নাইকে। যশ দয়ালের এক ওভারে ওঠে ১৩ রান। শেষ তিন ওভারে দরকার ছিল ৫০ রান। ধোনি, জাডেজা ক্রিজ়ে থাকায় স্বস্তিতে ছিল না বেঙ্গালুরু। সিরাজ ১৮তম ওভারে দেন ১৫ রান।

শেষ দু’ওভারে চেন্নাইকে করতে হত ৩৫ রান। ধোনি বড় শট খেলতে না পারলেও জাডেজা মারছিলেন। আরও এক বার চেন্নাইয়ের আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তিনি। ফার্গুসনের সেই ওভারে ওঠে ১৮ রান। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৭ রান। বল করছিলেন দয়াল। প্রথম বলেই ছক্কা মারেন ধোনি। বল স্টেডিয়ামের বাইরে বেরিয়ে যায়। যদিও তাতে ঘাবড়াননি দয়াল। পরের বলেই ধোনিকে আউট করেন তিনি। ১৩ বলে ২৫ রান করেন ধোনি। শেষ চার বলে দরকার ছিল ১১ রান। সেটা করতে দেননি দয়াল। বলের গতির হেরফের করে ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৯১ রানে শেষ হয় চেন্নাইয়ের ইনিংস। ৪২ রানে অপরাজিত থেকেও দলকে জেতাতে পারেননি জাডেজা। ২৭ রানে জিতে প্লে-অফে ওঠে বেঙ্গালুরু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

IPL 2024 CSK RCB Virat Kohli MS Dhoni
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE