ডার্বি হারের পর ট্রেভর জেমস মর্গ্যানকে নিয়ে তীব্র ঝামেলা শুরু হয়েছে ইস্টবেঙ্গলে। কর্তা এবং কোচ ঝামেলা এতটাই তীব্র হয়ে আছড়ে পড়েছে টিম হোটেলে যে ফুটবলাররা কী করবেন ভেবে উঠতে পারছেন না। সোমবার সকালে ইস্টবেঙ্গল হোটেলে গিয়ে দেখা গেল, মর্গ্যান এবং তাঁর সহকারী ওয়ারেন হ্যাকেটের কাছে কেউ ঘেঁষছেনই না, কর্তাদের রোষে পড়ার ভয়ে। কথাও বলছেন না গুরবিন্দর সিংহ, ওয়েডসনরাও।
এই আবহের মধ্যেই বোমা ফাটিয়ে দিলেন লাল-হলুদের দশ বছরের সৈনিক মেহতাব হোসেন। প্রশ্ন তুলে দিলেন বিদেশি ফুটবলারদের দায়বদ্ধতা নিয়ে।
রবিবার রাতে ডার্বি ম্যাচের বিরতির সময় মেহতাবের সঙ্গে তর্কাতর্কি করতে দেখা গিয়েছিল বিদেশি স্টপার ইভান বুকেনিয়াকে। মেহতাব চিৎকার করে বলছিলেন, ‘‘তোমার জন্যই গোল হচ্ছে। জেতার মানসিকতা নিয়ে ঝাঁপাও।’’ সোমবার টিম বাসে ওঠার আগে লাল-হলুদের মিডফিল্ড জেনারেলের মুখ থেকে বেরিয়ে এল আরও চাঁছাছোলা শব্দ। বলে দিলেন, ‘‘ইয়াকুবু, চিডি, র্যান্টি মার্টিন্সরা যে দায়বদ্ধতা দেখিয়ে খেলে গিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলে, এখনকার বিদেশিদের মধ্যে তার ছিঁটেফোটাও নেই। কেউই দায়িত্ব নিয়ে ফুটবল খেলেনি রবিবার। তা হলে আমাদের টিমের এই হাল হতো না। আরে বাবা টাকা নিচ্ছ, তার বদলে ভাল খেলতে তো হবে।’’ পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘মোহনবাগানের চার বিদেশি কী দারুণ খেলেছে বলুন তো। কী দায়বদ্ধতা। ওতেই ওরা বেরিয়ে গেল।’’
বলবন্ত সিংহের কনুইয়ের গুঁতো খেয়ে চোখের কোণে দু’টো সেলাই হয়েছিল মেহতাবের। জীবনের শেষ ডার্বিতে সেই রক্তাক্ত অবস্থাতেই শেষ পর্যন্ত লড়ে গিয়েছেন বঙ্গসন্তান ফুটবলার।
সে জন্যই ডার্বি হারে তাঁর আক্ষেপটা সম্ভবত বেশি। রবিবার বিশ্রী হারের পর ইস্টবেঙ্গলের লালকার্ড দেখা স্ট্রাইকার উইলিস প্লাজা হাসতে হাসতে কানে হেডফোন গুজে বেরোচ্ছিলেন। তা দেখে মাঠের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকা লাল-হলুদ সমর্থকরা প্রচন্ড গালাগালি করতে থাকেন ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোব্যাগোর স্ট্রাইকারকে। সে কথা তুলতেই যেন আরও ঘৃতাহুতি পরে মেহতাবের ক্ষোভের আগুনে। ‘‘আবেগটাই জানে না এই ম্যাচের। ভাবছেই না সমর্থকদের কথা। এঁদের জন্যই ডুবলাম। আর সব গালাগাল খেতে হচ্ছে আমাদের।’’ বলে দিলেন মেহতাব। কোচের সঙ্গে অন্যদের মতো কথা বলেননি দলের সবথেকে সিনিয়র ফুটবলারও। জানা গেল, রবিবার রাতে মর্গ্যানও না কি টিম হোটেলে ফিরে কারও সঙ্গে কথা বলেননি। টিম বাসের অপেক্ষায় এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকা ইস্টবেঙ্গলের ব্রিটিশ কোচকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি কি কলকাতায় গিয়ে কর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন? মর্গ্যান তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে বলে দেন, ‘‘কেন কথা বলব? কী জন্য? মঙ্গলবার থেকে তো অনুশীলন ডেকে দিয়েছি। সেটা হবে। ওদের কথা বলার দরকার থাকলে বলুক।’’ ম্যাচের পর কোনও কর্তা কি আপনাকে ফোন করেছিলেন? মর্গ্যান বলেন, ‘‘যা খবর দেওয়ার ডার্বি ম্যাচে প্রেস কনফারেন্সে বলে দিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy