Advertisement
২৫ মে ২০২৪
2020 Tokyo Olympics

টোকিয়ো যাওয়া হচ্ছে না শুটার মেহুলি, আয়ুষির

বাংলার দুই প্রতিশ্রুতিমান শুটারকে নিয়ে জাতীয় কোচের কী ভাবনা?

লক্ষ্য: ২০২৪ অলিম্পিক্সের জন্য মেহুলি ও আয়ুষিকে তৈরি করতে চান কোচ।

লক্ষ্য: ২০২৪ অলিম্পিক্সের জন্য মেহুলি ও আয়ুষিকে তৈরি করতে চান কোচ।

কৌশিক দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ০৬:২৬
Share: Save:

টোকিয়ো অলিম্পিক্সের শুটিংয়ে দেখা যাবে না বাংলার কোনও প্রতিনিধিকে। এত দিন একটা ক্ষীণ আশা ছিল মেহুলি ঘোষ, আয়ুষি পোদ্দারকে নিয়ে। অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাওয়ার ফলে যদি কোনও ভাবে দরজা খুলে যায় এই দুই বঙ্গ শুটারের জন্য। কিন্তু জানা যাচ্ছে, ভারতীয় শুটিং সংস্থা অলিম্পিক্সের জন্য দল প্রায় বেছেই ফেলেছে। যে দলে মেহুলি বা আয়ুষি নেই। এই দল নির্বাচনের ব্যাপারটা এত দিনে প্রকাশ্যে আসেনি। তবে এই দু’জন শুটারকে তৈরি করা হবে ২০২৪ অলিম্পিক্সের কথা মাথায় রেখে।

সপ্তাহ দু’য়েক আগে শুটিং ফেডারেশনের পক্ষ থেকে প্রতি ইভেন্টে চার জন করে প্রতিযোগী নিয়ে ‘কোর গ্রুপ’ তৈরি হয়েছিল। সেই কোর গ্রুপে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে মেহুলি বা ৫০মিটার রাইফেল থ্রি পোজিশনসে আয়ুষির নাম রাখা হয়নি। তবে অলিম্পিক্সের চূড়ান্ত দল নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি। যে ব্যাপারটা আনন্দবাজারের কাছে সোমবার জানালেন ভারতের জাতীয় রাইফেল শুটিং কোচ দীপালি দেশপাণ্ডে।

এ দিন ফোনে দীপালি বলছিলেন, ‘‘অলিম্পিক্সের দল আমাদের তৈরি। ২০ মার্চ দিল্লিতে আমাদের একটা মিটিং ছিল। যেখানে নির্বাচিত দল ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু ১৯ তারিখ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল জানান, মিটিং বন্ধ রাখতে। তার পরে তো লকডাউন শুরু হয়ে যায়। একটা দিন পরে সব হলে অলিম্পিক্সের দল ঘোষণা হয়ে যেত।’’

বাংলার দুই প্রতিশ্রুতিমান শুটারকে নিয়ে জাতীয় কোচের কী ভাবনা? তাঁর দুই বঙ্গ ছাত্রীকে নিয়ে দীপালি বলেন, ‘‘মেহুলি, আয়ুষি— দু’জনেই খুব ভাল। প্রচণ্ড পরিশ্রম করে। এ বারের অলিম্পিক্সের তো যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। তবে ওরা দু’জনেই ২০২৪ অলিম্পিক্সের দলে সুযোগ পাওয়ার ব্যাপারে এগিয়ে আছে।’’

কোর গ্রুপে না-থাকার খবরটা আগেই পেয়েছেন আয়ুষি। বঙ্গ তরুণী বলছিলেন, ‘‘প্রথমে একটু খারাপ লেগেছিল ঠিকই, কিন্তু এখন শুধু ট্রেনিংয়ে ফোকাস করছি। যাতে কখনও হঠাৎ কোনও সুযোগ এলে কাজে লাগাতে পারি।’’ মেহুলির নজরও শুধুই ট্রেনিংয়ে। কমনওয়েলথ পদকজয়ী শুটার বলছিলেন, ‘‘জানি না এই বছরে আর কী হবে। আমার চোখ এখন ২০২২ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, এশিয়ান গেমস আর কমনওয়েলথ গেমসে।’’

কোর গ্রুপে দুই প্রতিভাবান শুটারের না-থাকা নিয়ে বঙ্গ শুটিং মহলে আফসোস একটু আছে। মেহুলির প্রশিক্ষক অলিম্পিয়ান জয়দীপ কর্মকার বলছিলেন, ‘‘অলিম্পিক্স র‌্যাঙ্কিং মেনে কোর গ্রুপ হয়েছে। মেহুলি এক চুলের জন্য র‌্যাঙ্কিংয়ে পঞ্চম হয়ে গেল। শুধু যদি আন্তর্জাতিক পারফরম্যান্সের বিচারে র‌্যাঙ্কিং হত, তা হলে মেহুলি কোর গ্রুপে সুযোগ পেত। কিন্তু ঘরোয়া ট্রায়ালের স্কোরকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’’

আয়ুষির বাবা ও কোচ পঙ্কজ পোদ্দার বলছিলেন, ‘‘টোকিয়ো অলিম্পিক্সের কথা সে ভাবে ভাবিনি। চেয়েছিলাম, আয়ুষির র‌্যাঙ্কিংটা ভাল করতে। সেটা হয়েছে।’’ শেষ ছ’টা ৫০ মিটার থ্রি পোজিশনস ইভেন্টে ১২০০-র মধ্যে আয়ুষির স্কোর ১১৬১, ১১৬৮, ১১৬৩, ১১৫৮ এবং ১১৭৪। এর মধ্যে দ্বিতীয় অলিম্পিক্স ট্রায়ালে করা ১১৭৪ পয়েন্ট যে কোনও ভারতীয় জুনিয়র মহিলা শুটারের করা সেরা স্কোর।

দুই কোচ একটা ব্যাপারেই হতাশ। তাঁরা মনে করেন, মেহুলি, আয়ুষির পারফরম্যান্স যখন ভাল হচ্ছে, তখন কোর গ্রুপে রেখে ট্রায়ালে একটা সুযোগ দেওয়াই যেত। চারের বদলে সেরা ছয়কে রাখা যেত। কিন্তু জাতীয় কোচের ব্যাখ্যা, ‘‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত অনেক নিয়ম আমাদের মেনে চলতে হচ্ছে। বড় গ্রুপ হলে সামলানো কঠিন। যে কারণে চারজন করে নেওয়া হয়েছে।’’

টোকিয়ো নয়, মেহুলিদের সামনে এখন ‘বুল’স আই’ হল ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিক্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE