Advertisement
২১ মে ২০২৪
টানা তিন ম্যাচে হার ইস্টবেঙ্গলের

ওপোকুর ‘আজ়োন্তো’ স্টেডিয়ামে

হতাশ: ফের হেরে বিধ্বস্ত ইস্টবেঙ্গলের এনরিকে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

হতাশ: ফের হেরে বিধ্বস্ত ইস্টবেঙ্গলের এনরিকে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:০৭
Share: Save:

দেবাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

গোল করেই দৌড়েছিলেন কর্নারের দিকে। মিনার্ভার উইলিয়াম ওপোকু সেখানে গিয়ে শুরু করলেন অভিনব নৃত্য। তাঁর দেশ ঘানায় যে নাচকে বলে, ‘আজ়োন্তো’।

ম্যাচের পরে সাংবাদিক সম্মেলনে এসে সেই আজ়োন্তোর মহিমা বোঝাচ্ছিলেন ওপোকু। বলছিলেন, ‘‘ঘানার আসামোয়া গিয়ান, সুলে মুন্তারিরা এই নাচ করেন ম্যাচ জিতলে। কলকাতায় এসে ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর আনন্দে আমিও নাচলাম। জানতাম, ওঁদের রক্ষণের চেয়ে আমার গতি বেশি। বল পেলে গোল করবই।’’ সাত ম্যাচে মিনার্ভার পয়েন্ট এখন এগারো।

শতবর্ষের দরজায় কড়া নাড়া যে দলকে হারিয়ে মিনার্ভার এই উচ্ছ্বাস, সেই ইস্টবেঙ্গলের কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস স্পেনের নাগরিক। আই লিগে হারের হ্যাটট্রিক করেও তিনি নির্বিকার চিত্তে বলতে পারেন, ‘‘তিনটে জয় বা তিনটে হার একই ব্যাপার।’’

ইস্টবেঙ্গলের স্পেনীয় কোচ কলকাতায় পা দিয়ে নোট বইতে সুভাষ ভৌমিকের রক্ষণের ভুলভ্রান্তি ধরতেন। দায়িত্ব নিয়ে বলেছিলেন, রক্ষণের ভুল শোধরানোই তাঁর প্রথম কাজ। মালয়েশিয়ায় আবাসিক শিবির করে তা শুধরে আসার পরেও আই লিগে তাঁর দল সেই রক্ষণের ভুলেই খেয়েছে সাত গোল। পাঁচ ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে ইস্টবেঙ্গল আট নম্বরে। কেন এই হাল? জানতে চাইলে আলেসান্দ্রো বলেন, ‘‘ভুল তো হচ্ছেই। রেফারির ভুলও রয়েছে। আমাদের ভুলগুলো সব শোধরানোর

চেষ্টা করছি।’’

কিন্তু তা হচ্ছে কোথায়? আগের আইজল ম্যাচে ডোডোজ়-মাপুইয়া যুগলবন্দি যে ভাবে গোল করে গিয়েছিলেন, এ দিন ৭৮ মিনিটে মইনুদ্দিনের মাইনাস থেকে ওপোকুর করা গোলটিও যেন তার হুবহু প্রতিচ্ছবি। ডান দিক থেকে চুলোভাকে পিছনে ফেলে মইনুদ্দিন যখন বল বাড়িয়েছিলেন, তখন জায়গায় ছিলেন না আলেসান্দ্রোর দুই স্টপার। কোথায় লেফ্টব্যাক মনোজ? গোল ছেড়ে বেরোতে সময়জ্ঞানে ভুল হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল গোলকিপারেরও। এই সুযোগেই ওপোকুর গোল। বিপক্ষে ল্যানসিনের মতো দীর্ঘকায় স্টপার থাকা সত্ত্বেও বোরখা সারাক্ষণ রক্ষণ থেকে বল লম্বা তুলে দিচ্ছিলেন। ফলে বলই পাচ্ছিলেন না এনরিকে।

ইস্টবেঙ্গল কোচ অনুশীলনে যতই ‘পুতুল’ রেখে তিকিতাকা খেলান, ম্যাচে বিপক্ষে রক্তমাংসের মানুষ চলে এলেই কেন তা উধাও? ইস্টবেঙ্গল এ দিন তাদের প্রথম ও একমাত্র কর্নার পেল ৭২ মিনিটে। এতেই স্পষ্ট তাঁর দলের আক্রমণের হাল। শেষ বেলায় এনরিকে-কে তুলে তিনি নামিয়ে দিলেন বিদ্যাসাগরকে। ফলে আরও স্বস্তিতে থাকল বিপক্ষ রক্ষণ।

ইস্টবেঙ্গল কোচ যদিও বলছেন, ‘‘দলটা তৈরি করছি। লিগ এখনও হাত থেকে বেরোয়নি। একটু ভাগ্যও লাগবে।’’ কোচের হাতে কি যথেষ্ট রসদ নেই? না কি তাঁরই ভুলে পিছিয়ে পড়ছে ইস্টবেঙ্গল? উত্তর হয়তো দ্রুতই জানা হয়ে যাবে। যেটা এখনই বলে দেওয়া যায়, তা হচ্ছে, আই লিগের রাস্তা থেকে ফের ক্রমশ পিছু হঠছে কলকাতার দুই প্রধান।

ইস্টবেঙ্গল: উবেইদ সিকে, লালরাম চুলোভা, জনি আকোস্তা, বোরখা গোমেস পেরেস, মনোজ মহম্মদ, কাশিম আইদারা, কমলপ্রীত সিংহ (প্রকাশ সরকার), ইয়ামি লংভা (সামাদ আলি মল্লিক), জবি জাস্টিন, ব্রেন্ডন ভানলালরেমডিকা, এনরিকে এসকুয়েদা (বিদ্যাসাগর সিংহ)।

মিনার্ভা এফসি: অর্শদীপ সিংহ, আকাশদীপ সিংহ, হর্হেভান কাইসেদো রদ্রিগেজ, ল্যানসিন ত্যুরে, সৌভিক দাস, ফিলিপ জোকু, আকাশ সাঙ্গওয়ান (মইনুদ্দিন), আমনদীপ সিংহ, বালা আলহাসান দাহির (জোসেফ এডাফে, মাকান উইঙ্কল ছোটে), থৈবা সিংহ, উইলিয়াম ওপোকু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

East Bengal Minerva Punjab
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE