Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

‘গুরু জিদানকেও পিছনে ফেলে দিল শিষ্য রোনাল্ডো’

১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের একাধিক ফুটবলারকে কাটিয়ে দিয়েগো মারাদোনার গোলটাই আমার কাছে সর্বকালের সেরা। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ২০০২ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে বেয়ার লেভারকুসেনের বিরুদ্ধে জিনেদিন জিদানের গোল।

আই এম বিজয়ন
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৪৫
Share: Save:

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম পর্বে জুভেন্তাসের বিরুদ্ধে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বাইসাইকেল কিকে করা গোলটা সর্বকালের সেরা কি না তা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। আমার মতে, সর্বকালের অন্যতম সেরা গোল তো বটেই।

১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের একাধিক ফুটবলারকে কাটিয়ে দিয়েগো মারাদোনার গোলটাই আমার কাছে সর্বকালের সেরা। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ২০০২ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে বেয়ার লেভারকুসেনের বিরুদ্ধে জিনেদিন জিদানের গোল। পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের সাইড ভলিতে গোল করেছিলেন এখনকার রিয়াল মাদ্রিদ ম্যানেজার। মঙ্গলবার রাতে কিন্তু গুরুকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেল শিষ্য। এ রকম গোল রোনাল্ডোর পক্ষেই সম্ভব।

বাইসাইকেল কিকে গোল সব সময়ই আকর্ষণীয়। কিন্তু এই ধরনের গোলের নেপথ্যে যে পরিশ্রমের কাহিনি থাকে, তা হয়তো অনেকেই জানেন না। বাইসাইকেল কিকে গোল করার সময় শরীর শূন্যে ভাসিয়ে রাখতে হয়। প্রধান লড়াইটা তাই বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের সঙ্গে নয়, মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিরুদ্ধে! যাদের উচ্চতা বেশি, তাদের তো এই সমস্যাটা আরও বেশি। আর রোনাল্ডোর উচ্চতা ছয় ফুটের উপরে। দ্বিতীয়ত, কোমরের নমনীয়তা ও মাংসপেশি শক্তিশালী না হলে কখনওই সঠিক ভাবে বাইসাইকেল কিক নেওয়া যায় না। রোনাল্ডোর অবশ্য কখনওই ফিটনেস নিয়ে সমস্যা নেই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে মঙ্গলবার রাতে রোনাল্ডোর গোলটা দেখে আমার নিজের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। ত্রিশূরে তিন বছর বয়স থেকে আমি বাইসাইকেল কিকে গোল করার অনুশীলন করতাম। কখনও বালিতে। কখনও কাদা মাঠে চলত আমার মহড়া। যে-হেতু শরীর শূন্য ভাসিয়ে শট মারতে হয়, তাই কোমর ও পিঠে চোট লাগার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এই কারণেই বালি ও কাদায় অনুশীলন করতাম। নব্বইয়ের দশকে কলকাতায় খেলতে আসার পরে এই অনুশীলনটা করতাম রেস কোর্সের বালিতে। মূলত পায়ের মাংসপেশির জোর বাড়ানোর জন্য সবাই রেসকোর্সে দৌড়তে যেত। কিন্তু আমার লক্ষ্য থাকত বালিতে বাইসাইকেল কিক অনুশীলন করা। তাই সবাই চলে যাওয়ার পরে একা একাই অনুশীলন করতাম। সেই বছরই যুবভারতীতে মোহনবাগানের হয়ে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে বাইসাইকেল কিকে গোল করেছিলাম। তবে রোনাল্ডোর এই গোলটা নিশ্চয়ই আরও কঠিন ছিল। কারণ, ও প্রথমে বলটা পাস দিয়েছিল লুকাস ভাসকোয়েস-কে। জুভেন্তাস গোলরক্ষক জানলুইজি বুফন রিয়াল মিডফিল্ডারের শট বাঁচানোর সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ গতিতে ছয় গজ বক্সের সামনে পৌঁছে গিয়েছিল রোনাল্ডো। তার পরের ঘটনাটা তো গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরাই দেখেছেন। রোনাল্ডোর বাইসাইকেল কিকে বল জড়িয়ে গেল জালে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE