Advertisement
১৬ মে ২০২৪

সব পেয়েছেন, আর কোনও স্বপ্ন দেখছেন না রোনাল্ডো

বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার তিনি। কে বেশি ভাল ফুটবলার— তিনি না লিও মেসি, তা নিয়ে বিশ্ব ফুটবলে তর্ক অব্যাহত। দু’জনে দু’জনকে পাল্লা দিয়ে ব্যালন ডি’অর জেতেন।

মহড়া: এস্প্যানিয়ল ম্যাচের প্রস্তুতিতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।  ছবি: টুইটার

মহড়া: এস্প্যানিয়ল ম্যাচের প্রস্তুতিতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ছবি: টুইটার

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:২০
Share: Save:

ব্যক্তিগত স্তরে এবং ক্লাবের হয়ে প্রচুর ট্রফি জিতেছেন। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো এই প্রথম বলে দিলেন, আর কোনও স্বপ্ন নেই তাঁর। সব স্বপ্নই পূরণ হয়ে গিয়েছে। ‘‘জীবনে এত সব সুন্দর জিনিস জিতেছি যে, আর কোনও স্বপ্ন বাকি নেই আমার,’’ ব্রাজিলের ইউটিউব চ্যানেল ‘দেসিমপেদিদোস’-কে বলেছেন সি আর সেভেন।

শুনে মনে হতে পারে রোনাল্ডোর মধ্যে বোধ হয় আর নতুন কোনও লক্ষ্য পেরনোর তাগিদ বেঁচে নেই। সেটা যে ঠিক নয়, তা তিনি দ্রুত মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘অবশ্যই আমি এখনও জিততে চাই। আমি বিশ্বকাপও জিততে চাই। কিন্তু সে সব যদি না-ও হয়, যদি এখনই কেরিয়ার শেষ হয়ে যায়, তা হলেও আমি খুবই গর্বিত এবং খুশি থাকব।’’ কেন এমন ভাবনা, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘আমি কখনও ভাবিনি এমন দুর্দান্ত কেরিয়ার গড়ে তুলতে পারব।’’

বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার তিনি। কে বেশি ভাল ফুটবলার— তিনি না লিও মেসি, তা নিয়ে বিশ্ব ফুটবলে তর্ক অব্যাহত। দু’জনে দু’জনকে পাল্লা দিয়ে ব্যালন ডি’অর জেতেন। কিন্তু রোনাল্ডো জানেন, তাঁকে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ভক্তরা। এক দল তাঁকে পছন্দ করে, অন্য দল করে না। ‘‘আমি সেটা জানি। কেউ পছন্দ করে, কেউ করে না,’’ বলে চলেন তিনি, ‘‘আমি সব সময় সেই সব লোকদের সঙ্গেই যুক্ত থাকি, যারা আমার ভাল চায়। যারা আমাকে পছন্দ করে।’’ ব্রাজিলীয় চ্যানেলকে এর পর তিনি বলে দেন, ‘‘মার্সেলো আর ক্যাসেমিরো ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, ব্রাজিলে আমাকে অনেকে পছন্দ করে। ভাষাতে মিল থাকাটাও নিশ্চয়ই একটা ব্যাপার। ব্রাজিল আর পর্তুগালের মধ্যে ইতিহাসও রয়েছে। সেই কারণে আমি আরও খুশি হয়েছি এমন কথা শুনে।’’

তিনি নিজে বহু ফুটবলারের প্রেরণা। যে ভাবে নিজেকে কড়া অনুশাসনে রাখেন, যে ভাবে নিজেকে ফিট রেখে চলেছেন, তা দেখে যে কোনও ফুটবলার উদ্বুদ্ধ হতে পারেন। কিন্তু রোনাল্ডোর প্রেরণা কে? সি আর সেভেন বলছেন, ‘‘আমার স্বপ্ন ছিল, পেশাদার ফুটবলার হয়ে ওঠা এবং দেশের হয়ে খেলা। রুই কোস্তা, ফার্নান্দো কুটো এবং লুইস ফিগো-কে দেখে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি। ওঁদের দেখে ভাবতাম, এক দিন যদি এই কিংবদন্তিদের পাশে খেলতে পারি!’’

সব সময়ই কি সেরা হওয়ার লক্ষ্য রেখেছিলেন নিজের সামনে? এই প্রশ্নের উত্তরে রোনাল্ডো যা বলেছেন, তা অবশ্য বিশ্বাস করা কঠিন। বলেছেন, ‘‘না, আমি সব সময় সেটা ভাবতাম না। কারণ, নিজের উপর চাপ তৈরি করে ফেললে হিতে বিপরীত হয়। তখন ভাল হওয়ার চেয়ে খারাফ ফলই বেশি হয়। আমি স্বাভাবিক ভাবে সমস্ত কিছু ঘটতে দেওয়ায় বিশ্বাসী। আমার জীবনে সমস্ত কিছুই সে ভাবে ঘটেছে।’’ তার পরেই দার্শনিকের মতো তাঁর সংযোজন, ‘‘জীবনে তখনই ভাল কিছু ঘটে, যখন ঈশ্বর চান ভাল কিছু ঘটুক।’’ পাঁচটি ব্যালন ডি’অর জেতা তিনি অনেক কম বয়সেই বুঝে গিয়েছিলেন, তাঁর মধ্যে অন্য রকম প্রতিভা রয়েছে। ‘‘আমি জানতাম, নিশ্চয়ই আমার মধ্যে বিশেষ কিছু প্রতিভা রয়েছে কারণ আমি এমন সব জিনিস করতে পারতাম যা অন্যরা করতে পারত না। তা বলে কখনও ব্যালন ডি’অর জিতব, সেটা ভেবে ফেলা সম্ভব ছিল না।’’

বিশ্বের ক্লাব ফুটবলে ধাপে ধাপে তাঁর উত্তরন নিয়েও বলেছেন রোনাল্ডো। ‘‘আমি প্রথমে খেলেছিলাম স্পোর্টিং লিসবনে। সেখান থেকে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড। তার পর রিয়াল মাদ্রিদ। আমার খুব আনন্দ হয়েছিল বড় ক্লাবগুলিতে খেলতে এসে কারণ, আমি বুঝতে পারছিলাম বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের সঙ্গে খেলতে যাচ্ছি।’’ ব্যালন ডি’অর জিততে পারেন, সেই ভাবনাও বড় ক্লাবে আসার পরে তাঁর মনের মধ্যে এসেছিল বলে জানিয়েছেন রোনাল্ডো। ‘‘আমি যখন দেখলাম সেরা ফুটবলারদের সঙ্গে বা বিরুদ্ধে খেলেও আমি ছাপ ফেলতে পারছি, তখনই প্রথম মনে হয়েছিল, আমিও ব্যালন ডি’অর জিততে পারি। সতেরো-আঠেরো বছর বয়সে এসে সেটা হয়েছিল। পাঁচ বছর বয়সে বোঝা সম্ভব ছিল না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE