উজ্জ্বল: যেন পুরনো সেই ওয়েন রুনি। এভার্টনের হয়ে হ্যাটট্রিক ও বিস্ময় গোলের উচ্ছ্বাস। ছবি: গেটি ইমেজেস
এভার্টন ৪ : ওয়েস্ট হ্যাম ০
গুডিসন পার্কে বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন স্যাম অ্যালার্ডিস। তাঁর চোখের সামনেই সময়কে পিছনে ফেলে দিয়ে ছুটছিলেন ওয়েন রুনি। অসাধারণ হ্যাটট্রিকে নতুন ম্যানেজারকে স্বাগত জানালেন তিনি।
যদি কেউ ভুলে গিয়ে থাকেন, ওয়েন রুনি এখন আর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলেন না। অনেক দিন ধরে খবরেও নেই। তিনি যে ফিরে গিয়েছেন পুরনো ক্লাব এভার্টনে। যে ক্লাবের জার্সিতে একটা সময় তাঁর আবির্ভাব ঘটেছিল এক প্রতিশ্রুতিমান ফুটবলার হিসেবে।
ওয়েস্ট হ্যামকে ৪-০ হারাল এভার্টন। তিনটি গোল করে হ্যাটট্রিক রুনির। যেন পুরনো সেই ঝলক। এর মধ্যে একটি বিস্ময় গোলও রয়েছে, যেটাকে স্বয়ং রুনি বলছেন, তাঁর জীবনের সেরা। এই জয়ের ফলে লিগ টেবলে তলার দিকে ধুঁকতে থাকা এভার্টনের অবস্থাও কিছুটা ফিরল। তারা উঠে এলে ১৩তম স্থানে। কিন্তু সে সবকে ছাপিয়ে সকলের মুখে ঘুরল বিস্ময় গোলের কথা।
৬৬ মিনিটের মাথায় প্রায় মাঝমাঠ থেকে শটে গোল করেন রুনি। প্রতিপক্ষ গোলকিপার জো হার্ট সম্পূর্ণ বোকা বনে যান তাঁর আচমকা শটে। খেলার পরে রুনি বলে যান, ‘‘আমার মনে হয় না এর চেয়ে ভাল শট আর কখনও নিয়েছি বলে। হয়তো এটাই আমার জীবনের অন্যতম সেরা গোল। হতে পারে। আমি জানি না।’’ অনেক দিন পরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ফের শিরোনাম পেয়ে বেশ আবেগপ্রবণই হয়ে পড়েছিলেন রুনি। কে ভুলতে পারবে, এভার্টনের বিস্ময় বালক হিসেবেই যে প্রথম নজর কাড়তে শুরু করেন তিনি। সেদিনের বিস্ময় বালক স্যার আলেক্স ফার্গুসনের চোখে পড়ে হয়ে ওঠেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের সেরা অস্ত্র। এ বছরেই মোরিনহোর ম্যান ইউ তাঁকে ছেড়ে দেয়। রুনি ফিরে যান এভার্টনে। তার পর থেকে খুব বেশি কিছু করতে উঠতে পারেননি। অবশেষে হ্যাটট্রিক এবং বিস্ময় গোলে পুরনো রুনির ঝলক।
যদিও ম্যাচের পরে তাঁর মুখে নিজের হ্যাটট্রিক বা বিস্ময় গোলের চেয়ে বেশি করে শোনা গেল দলগত প্রাপ্তির কথা। ‘‘আমরা যে একটাও গোল খাইনি, সেটা দারুণ ব্যাপার,’’ বলে গেলেন রুনি। বারবার প্রশংসা করলেন বিদায়ী কোচ ডেভিড উন্সওয়ার্থের। বললেন, ‘‘ক্লাবের খুব কঠিন একটা সময়ে উনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। আদ্যপ্রান্ত এভার্টনের লোক উনি। আমি খুশি যে, এই ফলটা ওঁকে উপহার দেওয়া গিয়েছে।’’ উন্সওয়ার্থ বললেন, ‘‘আমাদের ফুটবলাররা দারুণ মনোভাব দেখিয়েছে। ভয়ডরহীন ফুটবল খেলেছে ওরা। আমাদের দলটা এ রকম ফুটবল খেলতে পারে। গোটা মরসুমে আমরা যোগ্যতা অনুযায়ী খেলতে পারিনি।’’
রুনির সঙ্গে ম্যাচের আগে তিনি আলোচনা করেছিলেন বলেও জানালেন এভার্টন ম্যানেজার। দু’জনে মিলে ঠিক করেন, একটু নীচ থেকে খেললেই উপকার হবে রুনির। ‘‘এখনও দুর্দান্ত ফুটবল মস্তিষ্ক ওয়েনের। যে গোলটা ও করল, সেটা শুধু ওর পক্ষেই করা সম্ভব। যে মুহূর্তে বলটা ওর বুট থেকে বেরোল, তখনই যেন গোলের ঠিকানা লেখা হয়ে গিয়েছে।’’ তার পরেই বহু যুদ্ধের ঘোড়ার উদ্দেশে তাঁর সেরা প্রশংসা, ‘‘ওয়েন দেখিয়ে দিল, এখনও ফুটবলকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।’’
হারিয়ে যেতে যেতে দমকা বাতাসের মতো হঠাৎই যেন ফুটবল বসন্তের হাওয়া ফিরে এসেছিল ওয়েন রুনির জীবনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy