দেশজ ফুটবল গুন্ডাদের তাণ্ডবের জেরে ইউরো থেকে বহিষ্কারের হুমকিতে গভীর উদ্বেগে ইংল্যান্ড শিবির।
এ দিন, ফরাসি আদালত দুই ব্রিটিশ সমর্থককে জেলে পাঠানোর পর যে উদ্বেগ আরও গভীর হয়েছে। উগ্র সমর্থকদের সংযত করার চেষ্টায় মরিয়া আবেদন করেছেন ইংল্যান্ড কোচ রয় হজসন এবং অধিনায়ক ওয়েন রুনি। বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘‘দয়া করে সংযত হন। আপনাদের আচরণে আমাদের মাথার উপর বহিষ্কারের খাঁড়া ঝুলছে। গোটা টিম আতঙ্কিত। ইউরোয় পৌঁছনোর জন্য আমরা অসম্ভব পরিশ্রম করেছি। টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে চাই। এমন কোনও কাজ করবেন না যার মূল্য টিমকে চোকাতে হয়।’’
ব্রিটিশ ফুটবল গুন্ডাদের চেয়েও অবশ্য ফরাসি প্রশাসনের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ গভীর করেছে প্রায় দেড়শো রুশ সমর্থক। যারা মাঠ থেকে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালায়। পলাতকদের চিহ্নিত করতে এখন সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করছে পুলিশ।
শনিবারের ইংল্যান্ড-রাশিয়া ম্যাচে অন্তত বারো হাজার রুশ সমর্থক ছিলেন। যাঁদের অনেকেই ম্যাচের শেষে ইংল্যান্ড সমর্থকদের উপর চড়াও হয়ে নির্বিচারে মারধর করেন। হিংসায় কম করে পঁয়ত্রিশ জন আহত হন, যার মধ্যে এক জন মাথায় উপুর্যুপরি রডের বাড়ি খেয়ে কোমায় চলে গিয়েছেন। পুলিশ কুড়ি জনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু ধৃতদের মধ্যে বেড়া ডিঙিয়ে মাঠে ঢুকে পড়া দু’জনকে বাদ দিলে বাকি আর কোনও রুশ সমর্থক নেই। সবাই পালিয়ে যান। ধৃত দু’জনকে অবিলম্বে রাশিয়া ফেরত পাঠাচ্ছে ফ্রান্স।
সোমবার ধৃতদের বিচার শুরু হয়। পুলিশের উপর হামলার দায়ে এ দিনই আলেকজান্ডার বুথ এবং ইয়ান হেপওয়ার্থ নামে দুই ব্রিটিশের দুই এবং তিন মাসের জেল হয়। এঁদের আগামী দু’বছর ফ্রান্সে ঢুকতেও দেওয়া হবে না। কাঠগড়ায় তোলা হয় তিন ফরাসি এবং এক অস্ট্রীয়কেও।
রাশিয়ার পরের ম্যাচ বুধবার লিলেতে, স্লোভাকিয়ার বিরুদ্ধে। যার মাত্র ২৪ মাইল দূরের লেনস-এ মঙ্গলবার ওয়েলস বনাম ইংল্যান্ড। ফলে আরও হিংসার আশঙ্কায় ফরাসি পুলিশ। যে সব সমর্থকদের কাছে ম্যাচের বা ফ্যান জোনের টিকিট নেই, তাদের ওই এলাকা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। ব্রিটেন জানিয়েছে, প্রয়োজনে তারা বাড়তি পুলিশ বাহিনী পাঠাতে তৈরি।
শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে রুশ ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে গতকালই জানিয়েছিল উয়েফা। তবে শাস্তির মুখে দাঁড়িয়েও ‘আল্ট্রা’দের জন্য সমর্থন রাশিয়ায়। রুশ ক্রীড়ামন্ত্রী ভিতালি মুতকো রাশিয়ার বিরুদ্ধে উয়েফার শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগকে ‘যথাযথ’ বললেও রুশ পার্লামেন্টের সদস্য ইগর লেবেদেভের মুখে উল্টো সুর। বলেছেন, ‘‘সমর্থকরা একটু মারপিট করেছে তো কী! যা হয়েছে সেটা ফরাসি পুলিশের অকর্মণ্যতা। সমর্থকদের দোষ নয়। আমি বলব, ওয়েল ডান বয়েজ। চালিয়ে যাও।’’
এরই মধ্যে রাশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের শাস্তি ঠিক করতে উয়েফার শৃঙ্খলা কমিটি বসছে মঙ্গলবার। রাশিয়ার জন্য কী শাস্তি অপেক্ষা করছে, সেখানেই ঠিক হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy