সানিয়া-মোদী সাক্ষাৎ। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে, শুক্রবার। ছবি: টুইটার
চলতি সপ্তাহে ডেভিস কাপে ভারতের হেনস্থা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হলেও পরের সপ্তাহে এশিয়াডের টেনিসে ভারতের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে। সানিয়া মির্জা সিদ্ধান্ত বদলে ইনচিওন গেমসে যাচ্ছেন। লিয়েন্ডার পেজ-ও এশিয়াডে তাঁর না-খেলার সিদ্ধান্ত গুরুত্ব সহকারে পুনর্বিবেচনা করছেন বলে এআইটিএ সূত্রের খবর।
বেঙ্গালুরুতে শুধু সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় টেনিস দলের ম্যাচই চলছে না। কোর্টের বাইরে অন্য ম্যাচ নিয়ে ব্যস্ত ভারতীয় টেনিস কর্তারা। শনিবারই এখানে এআইটিএ-র বার্ষিক সাধারণ সভা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের মতোই ভারতীয় টেনিস ফেডারেশনে একমেবাদ্বিতীয়ম শীর্ষকর্তা অনিল খন্না। তফাতের মধ্যে, শ্রীনিবাসনের বিসিসিআই ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার অন্তর্গত নয়। স্বশাসিত ক্রীড়া সংস্থা হিসেবে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকেরও অধীন নয়। কিন্তু ভারতীয় টেনিস প্রশাসনের অধীশ্বর হয়েও অনিল খন্নার উপায় নেই, আইওএ কিংবা কেন্ত্রীয় সরকারকে পুরোপুরি উপেক্ষা করার। যেহেতু জাতীয় টেনিস সংস্থাটা দেশের অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে এবং সেই অ্যাসোসিয়েশন আবার কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের নির্দেশ শুনতে কার্যত বাধ্য। আর এই পরিস্থিতিই সানিয়া এবং লিয়েন্ডারের এশিয়াডে খেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার পিছনে মূল কারণ।
আসলে এশিয়াডে শক্তিশালী টেনিস দল পাঠানোর জন্য ক্রীড়া মন্ত্রকের চাপ গিয়ে পড়েছে আইওএ-র উপর। যেহেতু গত এশিয়ান গেমসে একাধিক সোনা-সহ অনেক পদকজয়ী ভারতীয় টেনিস দলের ইনচিওনেও সাফল্যের সম্ভাবনা আছে। আইওএ সেই চাপের অভিমুখ স্বভাবতই এআইটিএ-র দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। যা নিয়ে আজ দিল্লি আর বেঙ্গালুরুতে একসঙ্গে তোলপাড়।
বার্ষিক সাধারণ সভার জন্য এআইটিএ-র প্রায় সমস্ত কর্তাই এখানে। তাঁদের কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে যা সারমর্ম দাঁড়াচ্ছে; দিল্লিতে এ দিন তাঁর সদ্য গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার করতে গেলে তার ফাঁকেই সানিয়াকে ক্রীড়া মন্ত্রক থেকে কিছু কড়া কথা শুনিয়ে দেওয়া হয়। আইওএ-কেও পরিষ্কার বুঝিয়ে দেওয়া হয়, সানিয়া-লিয়েন্ডার বিহীন দুর্বল টেনিস দল এশিয়াডে গেলে টেনিস দলের ছ’জন কর্মকর্তার তালিকাও ব্যাপক কাটছাঁট করা হবে। সেটা যেন এআইটিএকে সাফ বলে দেওয়া হয়। সরকার একটা দুর্বল দলের সঙ্গে অত জন কর্তার যাওয়ার খরচ বহন করতে পারবে না। যেহেতু কার্যত ওই দলের পদক জেতার ক্ষমতাই নেই। এআইটিএ-র একটি সূত্র এখানে জানালেন, এশিয়াড টেনিস দলের চিকিৎসক ভেস পেজ আর দলের ম্যানেজার নাসিমা মির্জার ইনচিওনগামী টিম থেকে বাদ পড়া একপ্রকার চূড়ান্তও হয়ে যায় দিল্লিতে। যার মাধ্যমে লিয়েন্ডার-সানিয়াকে পরিষ্কার বার্তা, তোমরা এশিয়াড না গেলে তোমাদের বাবা কিংবা মাকেও পাঠানো হবে না।
তার পরেই নাকি ভারতীয় টেনিসের দুই সফলতম ছেলে-মেয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা শুরু করে দেন। সানিয়া আজই ফের এশিয়াড যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন। লিয়েন্ডারও ইনচিওন যাওয়ার ব্যাপারে প্রবল ভাবছেন বলে এ দিন তাঁর ঘনিষ্ঠমহল থেকেই জানা গেল। সানিয়াদের ১৭ সেপ্টেম্বর কোরিয়া রওনা হওয়া আপাতত ঠিক আছে।
এশিয়াড দল-বিতর্ক সমাধানে ব্যস্ত থাকার মধ্যেই শনিবারের বার্ষিক সভার ঘুঁটিও সাজিয়ে ফেলেছে অনিল খন্না গোষ্ঠী। এমনিতে প্রেসিডেন্ট খন্না, পাঁচ ভাইস প্রেসিডেন্ট, সচিব, যুগ্ম-সচিব, কোষাধ্যক্ষ কারওরই এ বার পদের মেয়াদ ফুরোচ্ছে না। ফলে এআইটিএ-র টপ ব্র্যাকেটে কোনও পরিবর্তন ঘটছে না। এক কর্তা জানালেন, শুধু ১২ জনের কাউন্সিল কমিটির জন্য ১৩ জনের মনোনয়ন জমা পড়ায় ভোটাভুটিতে এক জন বাদ পড়বেন। আর উল্লেখ্য, হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়ের এআইটিএ-র সিইও পদে সরকারি ভাবে সিলমোহর পড়তে চলেছে এই বার্ষিক সভায়। এক কর্তা দাবি করলেন, সিইও পদটা ফেডারেশনের গঠনতন্ত্রে আগেই ছিল, ছিল না যে, এটা ম্যানেজারিয়াল পদ। মানে, এই আধিকারিক এআইটিএ থেকে মাইনে পাওয়ার অধিকারী। সেটাও শনিবারের সভায় এআইটিএ-র গঠনতন্ত্রে নতুন করে ঢুকিয়ে নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy