নেতা: ঘরের মাঠে সিরিজ জয়ের সামনে বিরাট কোহালি। ফাইল চিত্র
ফিরোজ শাহ কোটলার উইকেট এত সবুজ? প্রথম দর্শনে এই প্রশ্নই মনে আসে। সঙ্গে অবশ্য উত্তরটাও হাজির। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর আসছে যে।
যে মাঠের বাইশ গজে অনিল কুম্বলে দুরন্ত ঘূর্ণিতে এক ইনিংসে দশ উইকেট নিয়েছিলেন, যে মাঠে প্রথম ইনিংসের গড় রান প্রায় সাড়ে তিনশো, যেখানে সুনীল গাওস্করের ২৯তম সেঞ্চুরি ও সচিন তেন্ডুলকরের সানির ৩৪ শতকের মাইলস্টোন টপকে যাওয়া, সেই মাঠে সবুজ পিচে রাজত্ব করবেন পেস বোলাররা? বিশ্বাস হচ্ছে না যেন।
নাগপুরে ঘাস দেখে অনেকে ধোঁকা খেয়ে ভেবে নিয়েছিলেন, ওখানেও ইডেনের মতো পেস বোলাররাই দাপাবেন। কিন্তু হয় উল্টোটা। দুই স্পিনার জামথায় ২০-র মধ্যে ১৩টা উইকেট নেন। কোটলার পিচ তেমন ধোঁকা দেবে না তো?
দিল্লিতে আসা বোর্ডের পিচ কমিটির প্রধান দলজিৎ সিংহ অবশ্য বললেন, ‘‘উইকেটের বাঁধন ধরে রাখতে ঘাস ছেড়ে রাখা হয়েছে ঠিকই। ম্যাচের দিন এতটা সবুজ হয়তো নাও দেখতে পারেন। তবে কিছু তো থাকবেই। তা ছাড়া ডিসেম্বরের সকালে এখানে যা পরিবেশ থাকে, তাতে পেস বোলারদের এমনিতেই সুবিধে পাওয়া উচিত। তার ওপর উইকেটে ঘাস থাকলে তো কথাই নেই।’’
আরও পড়ুন: ২২ বছর পরে বিশ্বমঞ্চে নজির গড়ে চানুর সোনা
অর্থাৎ শামি, উমেশ, ইশান্তদের জন্য যে মঞ্চ তৈরিই রয়েছে, প্রাক্তন ক্রিকেটার দলজিতের কথায় এমনই সুর। তবে ইডেনের মতো পেসারদের স্বর্গ যে নয় কোটলা, তেমন ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন তিনি। বলেন, ‘‘ইডেনে যেমন হয়েছে, কোটলায় তা হবে কেন? এখানকার আবহাওয়া, মাটি সবই আলাদা। তাই এই তুলনটা টানা উচিত না।’’
দিল্লি ক্রিকেট সংস্থা আসন্ন টেস্টের চেয়ে অবশ্য ঢের বেশি আচ্ছন্ন বুধবার রাতের অনুষ্ঠান নিয়ে। যেখানে বিরাট কোহালি থেকে বিষাণ সিংহ বেদীর মতো শহরের প্রাক্তন, বর্তমান ক্রিকেট কিংবদন্তিদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে। ডামাডোলে ভরা দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার শহরের ক্রিকেট মহলের এমন মিলনমেলা যে বহুকাল হয়নি। রাজধানীর ক্রিকেট কর্তাদের টেস্ট গ্রহে ঢুকতে তাই একটু দেরীই হল। কিউরেটর অঙ্কিত দত্তকেও দেখতে পাওয়া গেল না এ দিন। বরং দলজিৎই তাঁর ‘প্রক্সি’ দিয়ে দিলেন।
এ দিন অবশ্য ভারতীয় দলের প্র্যাকটিসের ছুটিই ছিল। শ্রীলঙ্কা সকালে নেটে গা ঘামিয়ে যায় কিছুক্ষণ। শোনা যাচ্ছে, নাগপুরে জঘন্য হারের পর শ্রীলঙ্কা শিবিরে চাপা গোলমাল শুরু হয়েছে। যার জেরে সম্ভবত দিল্লির দল থেকে বাদ পড়তে হচ্ছে দলের তিন নম্বর ব্যাটসম্যান ও সহ-অধিনায়ক লাহিরু তিরিমানা-কে। মাঠে ও ড্রেসিংরুমেও অযথা নাকি মাথা গরম করতে দেখা যাচ্ছে ২৮ বছরের এই ব্যাটসম্যানকে। নাগপুরে তাঁর শট নির্বাচন মোটেই পছন্দ হয়নি কোচ-অধিনায়কের। টিম মিটিংয়ে সে কথা তাঁকে বলতে তিনি না কি তর্ক জুড়ে দেন। সে জন্যই হয়তো তাঁকে এই টেস্টে মাঠে না-ও দেখা যেতে পারে। তাঁর জায়গা নিতে পারেন শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়ে ভাল খেলা ধনঞ্জয় ডিসিলভা। যাঁকে নিয়ে অনেক আশা শ্রীলঙ্কার টিম ম্যানেজমেন্টের।
এমনিতেই রঙ্গনা হেরাথকে চোটের জন্য দেশে ফিরিয়ে দেওয়া হল এ দিন। তার ওপর শিবিরে এই গোলমাল। নাগপুরে ব্যর্থ হলেও তিরিমানা কিন্তু ইডেনের সবুজ উইকেটেও ৫১ রান করেছিলেন। কারও কারও ধারণা, কোটলার শীতের সকালে ভারতীয় পেসারদের দাপট তিনিই হয়তো সামলাতে পারতেন। তবে এতে হয়তো ভারতেরই সুবিধে হল কিছুটা। সামনে একজন ২৮ টেস্টের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান থাকা আর আনকোরা একজন ব্যাটসম্যান থাকার মধ্যে তফাত তো আছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy