Advertisement
২২ মে ২০২৪

আইসিসি-র বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ স্বয়ং আইসিসি প্রেসিডেন্টের

এক, দুই বা তিন নয়। বৃহস্পতিবার মেলবোর্নে অন্তত এক ডজন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে নিয়েছেন দুই আম্পায়ার আলিম দার ও ইয়ান গোল্ড— এই মারাত্মক অভিযোগ আর কারও নয়, খোদ আইসিসি প্রেসিডেন্ট মুস্তাফা কামালের। এবং এই নিয়ে তিনি যে আইসিসি-র বিরুদ্ধে তোপ দাগবেন আইসিসি-রই পরবর্তী সভায়, সেই হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন কামাল। “সে জন্য যদি আইসিসি প্রেসিডেন্ট পদও ছাড়তে হয়, ছেড়ে দেব। কিন্তু এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবই।”

বিস্ফোরক অভিযোগ কামালের

বিস্ফোরক অভিযোগ কামালের

কুন্তল চক্রবর্তী
মেলবোর্ন শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০৩:৫৫
Share: Save:

এক, দুই বা তিন নয়। বৃহস্পতিবার মেলবোর্নে অন্তত এক ডজন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অন্যায় ভাবে নিয়েছেন দুই আম্পায়ার আলিম দার ও ইয়ান গোল্ড— এই মারাত্মক অভিযোগ আর কারও নয়, খোদ আইসিসি প্রেসিডেন্ট মুস্তাফা কামালের। এবং এই নিয়ে তিনি যে আইসিসি-র বিরুদ্ধে তোপ দাগবেন আইসিসি-রই পরবর্তী সভায়, সেই হুঁশিয়ারিও দিয়ে রাখলেন কামাল। “সে জন্য যদি আইসিসি প্রেসিডেন্ট পদও ছাড়তে হয়, ছেড়ে দেব। কিন্তু এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবই।”

বৃহস্পতিবার মেলবোর্নে রোহিত শর্মার আউট হওয়ার বলকে আম্পায়ারদের নো ডাকা নিয়েই মূলত আপত্তি বাংলাদেশের। মাহমুদউল্লাহর আউট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ। মেলবোর্নে হোটেলে বসে এ দিন রাগে কাঁপতে কাঁপতে বাংলাদেশ বোর্ডের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট কামাল বলেন,“একটা, দুটো ভুল হলে তবু মেনে নেওয়া যায়। এ তো একের পর এক ভুল। অন্তত একডজন ভুল সিদ্ধান্ত গিয়েছে বাংলাদেশের বিপক্ষে! এ রকম হয় না কি?”

শুধু আম্পায়ারদের ভুল নয়, কামালের অভিযোগ আরও মারাত্মক। তাঁর বক্তব্য, “স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখি জায়ান্ট স্ক্রিনে বারবার ভেসে উঠছে ‘জিতেগা ভাই জিতেগা, ইন্ডিয়া জিতেগা’। আইসিসি সিইও ডেভ রিচার্ডসনকে বললাম, এ সব কী হচ্ছে? ব্যাপারটা দেখুন। রিচার্ডসন বললেন, ‘আপনি ঠিকই বলেছেন। এখুনি এটা বন্ধ করা দরকার।’ কিন্তু কোথায় কী? এর পরেও সারা ম্যাচ জুড়ে জায়ান্ট স্ক্রিনে ওটাই বারবার ভেসে উঠল। এ ভাবে তো বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা মানসিক ভাবে ক্রমশ পিছিয়ে পড়বে। এখানে কি একটা দলই ক্রিকেট খেলতে এসেছে?”

মুখে না বললেও কামালের তির আইসিসি চেয়ারম্যান নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের দিকেই। এ দিন আবার আইসিসি-র পক্ষ থেকে ডেভ রিচার্ডসন সরকারি ভাবে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। বলেছেন, “মুস্তাফা কামালের বিবৃতি খুব দুর্ভাগ্যজনক। আশা করি এগুলো তাঁর ব্যক্তিগত মন্তব্য। আইসিসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে আম্পায়ারদের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ তোলার আগে ভাবা উচিত ছিল। নো বলের সিদ্ধান্তটা ৫০-৫০ ছিল। এবং আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”

সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের খবর, অভিযুক্ত দুই আম্পায়ার নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে কামালের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আইসিসি-র কাছ থেকে এই নিয়ে পরামর্শও নিচ্ছেন ক্ষিপ্ত দার ও গোল্ড। রাতের দিকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতীয় বোর্ডও। বিসিসিআই সচিব অনুরাগ ঠাকুর বলেছেন, “আইসিসি প্রেসিডেন্ট তো আইসিসি-র সভায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছেন। এই প্রশ্নও আইসিসি-র সভায় তোলা উচিত তাঁর।”

ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েও যেন হচ্ছে না। বাংলাদেশের কাগজগুলোর ই-পেপার খুললেই দেখা যাচ্ছে, রীতিমতো ছবি দিয়ে আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্তগুলি তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে। বাংলাদেশ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসানও বলেছেন, “আমরা এই নিয়ে আইসিসি-র কাছে প্রতিবাদপত্র পাঠাব। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এতে ম্যাচটার ফলে কোনও পরিবর্তন হবে না। কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদ তো অবশ্যই করা দরকার।”

তবে বাংলাদেশ বোর্ডের অভিযোগ আইসিসি-র বিরুদ্ধে, ভারতের বিরুদ্ধে নয়। বরং বিশ্বকাপের পর ভারতীয় বোর্ডের প্রেসিডেন্ট জগমোহন ডালমিয়ার সঙ্গে দেখা করে ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট সম্পর্কের উন্নতির পরিকল্পনা করবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন কামাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE