একটা সময় ছিল যখন যুবরাজ সিংহকে দেখা হত টিম ইন্ডিয়ার এক নম্বর ম্যাচউইনার হিসেবে। প্রথম যে বার ভারত অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জিতল, সেই ২০০০ সাল থেকে। ওই বিশ্বকাপে যুবরাজই ছিল টুর্নামেন্টের সেরা। তার পর ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্টুয়ার্ট ব্রডকে এক ওভারে ছ’টা ছক্কা, সে তো ক্রিকেট কিংবদন্তি! ও যখন ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছে, সেই অবস্থাতেও ২০১১ বিশ্বকাপে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট।
সেই যুবরাজ আর এই যুবরাজের মধ্যে একটাই তফাত। যুবরাজ এখনও টিমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, কিন্তু সবচেয়ে বড় ম্যাচউইনার নয়। একা হাতে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা যদি এই টিমে কারও থেকে থাকে তো সেটা অবশ্যই বিরাট কোহালির। আর তাই হয়তো পরপর কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলার পরেও প্রচারের আলো সে ভাবে পাচ্ছে না যুবরাজ। সবটাই চলে যাচ্ছে বিরাটের দিকে। আর এখানেই আমার আপত্তি। ম্যাচ জয়ে যুবরাজের ভূমিকাও যে গুরুত্বপূর্ণ, সেটা ভুলে গেলে চলবে না।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুটো ম্যাচের কথা ভাবুন। প্রথমে ঢাকায় ৮৪ তাড়া করতে গিয়ে ৩২ বলে ১৪ নট আউট, আর শনিবার ইডেনে ২৩ বলে ২৪। দুটো ইনিংসই প্রচণ্ড গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ওই দুটো ইনিংস না থাকলে ভারতের জয় বেশ কঠিন হয়ে যেত। ইডেনে বিশেষ করে শেষের দিকে ওয়াহাব রিয়াজকে ও যে ছক্কাটা মারল, তাতে টিমের উপর চাপ অনেক কমে গেল।
হ্যাঁ, বিরাট এখন যে ফর্মে আছে, যে ভাবে ম্যাচ জেতাচ্ছে, চৌত্রিশের যুবরাজের পক্ষে সেটা করা মুশকিল। এর দুটো কারণ। এক, বয়স আর ফিটনেস ওর সঙ্গে নেই। মনের মধ্যে যত আগ্রাসন থাকুক, যথেষ্ট ফিটনেস না থাকলে মাঠে সেটা দেখানো যাবে না। আর দুই, বহু দিন টিমের বাইরে থাকা। ক্রিকেট, বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি যে গতিতে পাল্টাতে থাকে, বছরদেড়েক পর টিমে ফিরে তার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন।
এত কিছুর পরেও কিন্তু বলা যাবে না যে, এই টিমে যুবরাজের দরকার নেই। দরকার আছে, কারণ ওর মতো করে সাপোর্টিং রোলটা আর কেউ পালন করতে পারবে না। এই যে এক দিক ধরে রেখে কোহালিকে স্বাধীনতা দেওয়া, এটাও তো যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সিনিয়র প্লেয়ার হিসেবে যুবরাজ এটা সবচেয়ে ভাল করতে পারবে। আর ও সেটা করছেও। সঙ্গে প্রয়োজনে বিগ হিটটাও মারছে।
তাই বিরাটকে নিয়ে মাতামাতির মধ্যে যুবরাজকে ভুলে যাবেন না প্লিজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy