Advertisement
২৬ মে ২০২৪
সাগরপাড়ে ব্যর্থ মোহনবাগান

‘রক্ষণ যদি এ রকম খারাপ খেলে শাস্তি পেতেই হবে’

গোয়ার স্টেডিয়ামে যখন হঠাৎ আলো নিভল তার আগেই অন্ধকার নেমে এসেছিল মোহনবাগানে। মরসুমে প্রথমবার গঙ্গাপাড়ের ক্লাবে হতাশা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩০
Share: Save:

গোয়ার স্টেডিয়ামে যখন হঠাৎ আলো নিভল তার আগেই অন্ধকার নেমে এসেছিল মোহনবাগানে। মরসুমে প্রথমবার গঙ্গাপাড়ের ক্লাবে হতাশা। আই লিগ এবং এ এফ সি কাপ মিলিয়ে টানা তেরো ম্যাচ অপরাজেয় থাকার পর হারল সঞ্জয় সেনের টিম। শেষ বার ড্যারেল ডাফিরা হেরেছিলেন কলকাতা লিগে। মহমেডানের কাছে।

ভাস্কোর তিলক ময়দানের গ্যালারি থেকেই দেখা যায় গোয়ার ব্যস্ততম জেটি। প্রতিদিন অসংখ্য জাহাজ আর নৌকো ভিড় করে সেখানে। সেই আরব সাগরের পাড়েই থামল সবুজ-মেরুন নৌকো। ডুবিয়ে দিল ডেরেক পেরিরার চার্চিল ব্রাদার্স। অনামী ছটফটে এবং নানা ক্লাবের বাতিল একদল ছেলেকে দিয়ে দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ এবং শিক্ষিত কোচ দেখালেন তীব্র চাপের মুখে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়। পিছিয়ে পড়েও শুধু অঙ্ক কষে ম্যাচ জিতে ফেরা যায়। সনি নর্দে-কাতসুমিরাই এতদিন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের একমাত্র দল ছিলেন, যাঁরা ছিলেন অপরাজেয়। সেই মুকুট তাঁরা খোঁয়ালেন শনিবার রাতে। ম্যাচের পর বিরক্ত মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়ে বললেন, ‘‘রক্ষণ যদি এরকম খারাপ খেলে তা হলে শাস্তি পেতেই হবে। ইস্টবেঙ্গল, বেঙ্গালুরুও হেরেছে। ঘুরে দাঁড়াতেই হবে।’’ কাতসুমিদের অবশ্য একটা সুবিধা আছে। তাঁরা খেতাবের লড়াইতে থাকা লিগ টেবলের প্রথম দু’টো টিম ইস্টবেঙ্গল ও আইজল এফ সি-র তুলনায় দু’টো ম্যাচ কম খেলেও তিনে।

চার্চিল ব্রাদার্স ২-১ এগিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই অন্ধকার নামে ভাস্কোর স্টেডিয়ামে। বন্ধ হয়ে যায় ম্যাচ। শুধু স্টেডিয়ামে নয়, গোয়ায় ফোন করে জানা গেল পুরো শহরটাতেই এই সময় নেমে এসেছিল অন্ধকার। প্রায় দশ মিনিট পয়ত্রিশ সেকেন্ড খেলা বন্ধ থাকার পর আবার খেলা শুরু হয়। আলো জ্বলার পর সব মিলিয়ে প্রায় কুড়ি মিনিট সময় পেয়েও গোল শোধ করতে পারেননি বলবন্ত সিংহ-ডাফিরা।

বিরতির আগে ১-০ এগিয়ে থাকা মোহনবাগান শেষ পর্যন্ত হেরে গেল। এবং সেটা মূলত পুরোপুরি তাদের নিজেদের রক্ষণের দোষে। এদুয়ার্দো-আনাস— দুই স্টপার এক লাইনে দাঁড়িয়ে গোল খাওয়ালেন। একটা নয়, দুটো। ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোব্যাগোর প্রাক্তন বিশ্বকাপার অ্যান্টনি উলফ বিনা বাধায় যেমন গোল করে গেলেন, সে রকমই চেস্টারপল লিংডোও হেডে গোল করে গেলেন হেলায়। ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজের তোলা বল থেকে। বহুদিন ভারতে খেলা উলফ ১-১ করার পরও প্রীতম-আনাসদের ঘুম ভাঙল না কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল ম্যাচের পর। অসাধারণ ফুটবল খেললেন গোয়ার ভূমিপুত্র ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ। মধুর প্রতিশোধ নিলেন পুরানো দলের বিরুদ্ধে। গোল না করলেও চার্চিলের ম্যাচ জেতার পিভট ছিলেন তিনিই।

মোহনবাগান অবশ্য শুরুটা ভালই করেছিল। ম্যাচটা জেতার জন্য সেরা দলই নামিয়েছিলেন সবুজ-মেরুন কোচ। চার বিদেশি তো বটেই, সঙ্গে প্রীতম, প্রবীর, দেবজিৎ সকলেই ছিলেন। সনির ক্রস থেকেই প্রবীর দুদার্ন্ত হেডে ১-০ করেন। কিন্তু ডেরেক টিমের কোচ হয়ে আসার পর পর পর দুম্যাচে সাত গোল দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে চার্চিল। শনিবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ব্র্যান্ডনের একটা ফ্রি কিক দেবজিৎ ঝাঁপিয়ে পড়ে না বাঁচালে লজ্জা আরও বাড়ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sanjoy Sen Mohun Bagan I-League
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE