এক দিনের সিরিজ শুরুর আগে হাতে পুরো একটা সপ্তাহ পেয়েছে ভারত। এর মধ্যে মিডলসেক্সের সঙ্গে একটা গা-ঘামানোর ম্যাচও খেলেছে। সব মিলিয়ে টেস্ট সিরিজের বিপর্যয় ঝেড়ে ফেলে ঠান্ডা মাথায় নিজেদের সংগঠিত করে তোলার জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছে ধোনিরা। এ বার ওদের নতুন করে শুরু করতে হবে। এমন একটা ফর্ম্যাটে যাতে বিদেশের মাঠে ওরা টেস্ট ক্রিকেটের তুলনায় অনেক বেশি সফল। তাই এক দিনের সিরিজের পাঁচটা ম্যাচে কী হয়, দেখার জন্য আমরা প্রত্যেকে মুখিয়ে আছি।
সফরের মাঝপথেই অবশ্য সাপোর্ট স্টাফ বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে একটা বড়সড় ঝাঁকুনি দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। এই পরিবর্তনটার সঙ্গে দল কত দূর মানিয়ে নিতে পারে, আগামী ক’দিনে সেটা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। সিরিজের মাঝপথে এ ভাবে সাপোর্ট স্টাফ বদলে ফেলা আধুনিক স্পোর্টসে খুব কমই ঘটেছে। কিন্তু বিদেশে ধারাবাহিক ব্যর্থতার জেরে ভারতীয় দলের উপর চাপটা ক্রমশ আরও দমবন্ধ করা হচ্ছিল। কিছু একটা করার জন্য চাপ বাড়ছিল বোর্ডের উপরেও। ক্রিকেট বিশ্ব এ বার দেখতে চাইবে এই পরিবর্তনের ফলে ভারতের পারফরম্যান্সে কী ফারাক হয়!
ইতিহাস অবশ্য বলছে, এমন ঝাঁকুনি খাওয়ার পর ভারত সাধারণত তেড়েফুঁড়ে উঠে ভাল খেলে। আর মিডলসেক্স ম্যাচটা কিন্তু মন্দ খেলেনি কোহলিরা। যদিও মিডলসেক্স পুরো শক্তির টিম নামায়নি। তবু ওই ম্যাচে ভারতীয় দলকে অন্য রকম দেখিয়েছে। এক দিনের টিমে রায়না, রায়াডু, সঞ্জু স্যামসনরা আসায় ড্রেসিংরুমের আবহাওয়ায় একটা বদলও হয়েছে। আশা করি এই বদলটা এক ঝলক টাটকা বাতাসের মতোই গোটা দলকে নতুন করে উদ্দীপ্ত করবে। এক দিনের লড়াইয়ে নামার আগে মুষড়ে পড়া, হতাশ ভাবটা কাটিয়ে উঠে ভারতীয় ড্রেসিংরুমের তরতাজা হয়ে ওঠা এই মুহূর্তে খুব জরুরি।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে খুব সাধারণ খেললেও ভারত কিন্তু বেশ ভাল এক দিনের টিম। ইংল্যান্ডে বিরুদ্ধে সফল হতে গেলে এই টিমের টপ অর্ডার আর সিমারদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে এগিয়ে আসতে হবে। লর্ডসের প্রস্তুতি ম্যাচটায় শিখর ধবন, রোহিত শর্মারা ব্যর্থ হয়েছে। এ বার কিন্তু ওদের দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করার সময় এসেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার অগস্টেই ইংল্যান্ডে শিরশিরে ঠান্ডা ভাবটা বেশি। এক দিনের সিরিজ যত গড়াবে বাতাসে শীতের ছোবলটা তত বাড়বে। এমন আবহাওয়ায় সাদা বলের সিম মুভমেন্ট বেশি হবেই। তাই বিরাট কোহলি আর সুরেশ রায়নাকে যাতে খুব তাড়াতাড়ি ক্রিজে নামতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের।
টপ অর্ডার গেমপ্ল্যান-ই কিন্তু আসল হতে চলেছে। জরুরি হল শুরুতে একটু ধরে খেলা। এই ধরনের কন্ডিশনে হাতে উইকেট থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ শুরুটা মন্থর হলেও দু’টো নতুন বল আর ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশনের কারণে লোয়ার অর্ডার পরের দিকে চালিয়ে খেলে রান তোলার গতি বাড়ানোর অনেক সুযোগ পাবে। তাই বলছি, ধোনিরা ভারতে যে ভাবে খেলে, তার তুলনায় ইংল্যান্ডে খেলার স্ট্র্যাটেজিটা অনেক আলাদা হওয়া দরকার।
গত এক বছরে এক দিনের ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ টিমকে বহু বার তিনশোর বেশি রান তুলতে দিয়েছে ভারত। এটা দুশ্চিন্তার আর একটা জায়গা। ইংল্যান্ডে প্রতিপক্ষকে তিনশো তুলতে দেওয়া মানে কিন্তু নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারা। ইংল্যান্ডের মাঠে তিনশো তোলার পর কোনও টিম সচরাচর হারে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy