মোহনবাগান টিডির দায়িত্ব থেকে শেষ পর্যন্ত সরে যেতেই হল সুভাষ ভৌমিককে।
বৃহস্পতিবার ক্লাবের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এ-লাইসেন্স না থাকার জন্যই সুভাষকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছে ক্লাব।
সুভাষের জায়গায় ভেসে উঠেছে তিনটি নাম সঞ্জয় সেন, এলকো সাতোরি এবং ট্রেভর জেমস মর্গ্যান। সঞ্জয়ের এ-লাইসেন্স রয়েছে। ইউনাইটেড স্পোর্টসে সাফল্যের সঙ্গে কোচিং করিয়েছেন। মহমেডানের দায়িত্ব নিয়ে আই লিগের মূল পর্বে তুলেছিলেন টিমকে। তা ছাড়া সঞ্জয় এই মুহূর্তে ফাঁকাই রয়েছেন। অঞ্জন মিত্র এ দিন আবার বলেছেন, “১০ ডিসেম্বর আমরা নতুন কোচের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছি।” ক্লাব সচিবের এই মন্তব্যের পর স্বভাবতই সঞ্জয়কে ঘিরেই জল্পনা এখন তুঙ্গে। কারণ, মর্গ্যান আইএসএলের টিম কেরল ব্লাস্টার্সের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে ফাঁকা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এলকোর পক্ষেও এত তাড়াতাড়ি কলকাতায় এসে বাগানের দায়িত্ব নেওয়াটা সমস্যার।
তবে বেশি রাতের খবর, এলকোর সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হয়েছে। ক্লাবের একাংশ ডাচ কোচকে চাইছেন। ইউনাইটেডে কোচিং করিয়ে যাওয়া এলকোর ভিসা সমস্যা না থাকলে এবং ক্লাবের সঙ্গে আর্থিক সমস্যা মিটে গেলে সঞ্জয়ের সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে ঢুকে পড়বেন তিনিও।
ক্লাব সূত্রের খবর, বুধবার রাতে অঞ্জনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন সুভাষ। দু’জনের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনা হয়। তার পরই মোহনবাগানের রীতি মেনে ক্লাবের সঙ্গে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ করেন নিউ আলিপুরের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সুভাষকে ফোনে ধরা হলে তিনি বলে দেন, “এ ব্যাপারে আমি কোনও কথাই বলব না।” সুভাষ এড়িয়ে গেলেও ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্র এ দিন সরকারি ভাবে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দেন, “সুভাষ ভৌমিকের এ-লাইসেন্স নেই। আর এএফসি এ-লাইসেন্স কোচ ছাড়া মেনেও নিচ্ছে না। অনেক চেষ্টা করেছি। তবে এখন আমাদেরও হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে এই ব্যাপারটা। সে জন্যই সুভাষকে সরে যেতে হল।”
তবে এটাও ঘটনা, মোহন টিডি হিসেবে এই ছ’মাসে সে অর্থে সুভাষের কোনও বড় সাফল্যও নেই। কলকাতা লিগ হাতছাড়া হয়েছে। হারতে হয়েছে মরসুমের প্রথম ডার্বি। ভুটানের কিঙ্গ কাপেও ব্যর্থ টিম। এই টুর্নামেন্টে গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে শেখ জামাল ধানমণ্ডির কাছে তো পাঁচ গোল হজম করতে হয়েছে মোহনবাগানকে। সব মিলিয়ে সুভাষের পারফরম্যান্সে যে কর্তারা সন্তুষ্ট ছিলেন, এটাও বলা যাবে না।
মরসুমের শুরুতেই ফেডারেশন জানিয়ে দিয়েছিল, এএফসি-র নিয়মে এ-লাইসেন্স কোচই আই লিগ টিমের দায়িত্ব নিতে পারবে। তা সত্ত্বেও কেন সুভাষকে টিডি করে আনলেন মোহন কর্তারা? এই প্রশ্ন ওঠাটাই তো স্বাভাবিক! অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই বাঙালি কোচের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছিল। সুভাষের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার সময় বাগান কার্তরা দাবিও করেছিলেন, এ-লাইসেন্স নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। সেই মতো ফেডারেশনের মাধ্যমে এএফসি-র কাছে চিঠিও দেওয়া হয়। কিন্তু মোহনবাগানের আর্জি বাতিল করে দেয় এএফসি। ফেডারেশনের মাধ্যমে তারা জানিয়ে দেয়, এ-লাইসেন্স কোচই একমাত্র আই লিগের টিমকে কোচিং করাতে পারবেন। তাই মাঝ মরসুমে নতুন কোচের সন্ধানে গঙ্গা পারের ক্লাব।
কোচের পাশাপাশি বাগানের চতুর্থ বিদেশি নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। তবে সূত্রের খবর, বেলো রজ্জাকের সঙ্গে কথাবার্তা অনেক দূর এগিয়েছে। সব ঠিকঠাক থাকলে হয়তো এই মরসুমেই সবুজ-মেরুন জার্সিতে খেলতে দেখা যাবে ইউনাইটেড স্পোর্টসের প্রাক্তন এই ডিফেন্ডারকে। উল্লেখ্য, ইউনাইটেড স্পোর্টস বাতিল হয়ে যাওয়ার পর কোনও আই লিগ ক্লাব পাননি বেলো। টালিগঞ্জ অগ্রগামীর জার্সিতে কলকাতা লিগ খেলেছিলেন এই নাইজিরিয়ান ডিফেন্ডার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy