Advertisement
২৯ মে ২০২৪

বার্থেজদের মতো ব্রাজিল এ বার থেকে দুঃস্বপ্নে দেখবে ওচোয়াকেও

দেখতে বসেছিলাম দর্শনীয় গোল। কিন্তু তার বদলে দেখলাম দর্শনীয় সেভ! লড়াইটা হল ব্রাজিল বনাম মেক্সিকান গোলকিপারের। জোয়েল বাতস, বার্থেজ, গয়কোচিয়া, দিনো জফরা আজও ব্রাজিলে হয়তো বিভীষিকা। মঙ্গলবারের পর মেক্সিকো গোলকিপার গুলেরমো ওচোয়াও বোধহয় সেই তালিকায় ঢুকে পড়লেন। একটা নয়, দু’টো নয়, চার-চারটে সেভ। নিশ্চয়ই সবার দেখে এখন অবিশ্বাস্য ঠেকছে।

দুর্ভেদ্য। ব্রাজিলকে প্রায় একাই রুখে দিলেন মেক্সিকোর গোলরক্ষক গুলেরমো ওচোয়া। ছবি: এএফপি

দুর্ভেদ্য। ব্রাজিলকে প্রায় একাই রুখে দিলেন মেক্সিকোর গোলরক্ষক গুলেরমো ওচোয়া। ছবি: এএফপি

সুব্রত পাল
শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৪ ০৪:০৮
Share: Save:

ব্রাজিল-০
মেক্সিকো-০

দেখতে বসেছিলাম দর্শনীয় গোল। কিন্তু তার বদলে দেখলাম দর্শনীয় সেভ! লড়াইটা হল ব্রাজিল বনাম মেক্সিকান গোলকিপারের।

জোয়েল বাতস, বার্থেজ, গয়কোচিয়া, দিনো জফরা আজও ব্রাজিলে হয়তো বিভীষিকা। মঙ্গলবারের পর মেক্সিকো গোলকিপার গুলেরমো ওচোয়াও বোধহয় সেই তালিকায় ঢুকে পড়লেন।

একটা নয়, দু’টো নয়, চার-চারটে সেভ। নিশ্চয়ই সবার দেখে এখন অবিশ্বাস্য ঠেকছে। কেউ নিশ্চয়ই বুঝে উঠতে পারছেন না, কেন এই ছেলেটা ইউরোপের ক্লাবে খেলছে না? ঘটনা হল, চার বছর আগে এই ছেলেটারই কিন্তু ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে যাওয়ার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত যায়নি বলে অনেক ঝামেলাও হয়। ওর বদলে ডি’জিয়া যায়। কিন্তু এ দিন যা পারফরম্যান্স দেখলাম, তাতে রিয়াল বা বার্সার মতো ক্লাবে ডাক পাওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।

এক কথায়, ছেলেটা একা আজ শেষ করে দিল ব্রাজিলকে। ম্যাচটা পুরোটাই হল ওচোয়া বনাম নেইমার-অস্কার। অবিশ্বাস্য রকম খারাপ খেলেও ব্রাজিল আজ ম্যাচটা অন্তত তিন গোলে জেতে, মেক্সিকো গোলের নীচে ওচোয়া না থাকলে। গত শুক্রবার কাসিয়াসের পাঁচ গোল খাওয়ার রিপোর্ট লিখেছিলাম। আজ ওচোয়ার চার গোল বাঁচানোর রিপোর্ট লিখতে হচ্ছে। কাসিয়াসের সঙ্গে তুলনায় যাব না। কাসিয়াস প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু এই ছেলেটার ফ্লাইং, অ্যান্টিসিপেশন, গোল ছেড়ে বেরিয়ে আসা অনবদ্য। নেইমারের হেডটার সময় ভেবে দেখুন, ও কিন্তু জায়গাতেই ছিল না। স্রেফ উড়ে এসে বলটা বাঁচিয়ে দিয়ে চলে গেল। যা দেখার পর টিভি ভাষ্যকাররা সত্তরে গর্ডন ব্যাঙ্কসের সেভের সঙ্গে তুলনা টানলেন। পেলের যে হেড ব্যাঙ্কসের আটকে দেওয়াকে শতাব্দীর সেরা হিসেবে ধরা হয়।

ওচোয়াকে আমি অনেক আগে থেকেই চিনি। ওকে প্রথম দেখি প্যারিস সাঁ জাঁ-র বিরুদ্ধে একটা ম্যাচে। সে দিন অবিশ্বাস্য সব সেভ করেছিল ও। বিশ্বকাপের অনেক আগে থেকেই বন্ধুদের বলেছিলাম এই বিশ্বকাপের সেরা পাঁচ কিপারের মধ্যে থাকবে ওচোয়া। ব্রাজিল ম্যাচে সেটাই হতে দেখলাম। ওর কাছেই আটকে গেল এ বারের বিশ্বকাপের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নরা। গত ম্যাচে ক্যামেরুনের বিরুদ্ধেও দুর্দান্ত একটা সেভ করেছে ওচোয়া।

প্রথম ম্যাচে নেইমার-অস্কাররা প্রথমে গোল খেয়ে গিয়েও ম্যাচে ফিরে আসতে পেরেছিল। মাঝমাঠে পেয়েছিল অপারেট করার জায়গা। এ দিন বুদ্ধি করে সেই জায়গাটাই ব্লক করে দিয়েছিলেন মেক্সিকোর কোচ মিগুয়েল হেরেরা। তিনটে স্টপার আর দুই উইং ব্যাক নিয়ে দল নামিয়েছিলেন ৫-৩-১-১। রক্ষণের আগে ভাজকুয়েজ যার দায়িত্ব ছিল নেইমার-অস্কাররা যেন মাঝমাঠ থেকে গোলমুখে ভয়ঙ্কর দৌড়টা দিতে না পারে। অস্কাররা আক্রমণে এলে রক্ষণে এই ছ’জনের সঙ্গে মেক্সিকোর আরও দুই মিডিও হেরেরা আর গুয়ার্দাদো নেমে আসবে। স্কোলারির মতো কোচ মগজ খাটিয়ে উত্তর কেন বের করতে পারলেন না, জানি না। ৪-২-৩-১ ছকে নামা ব্রাজিলের চার জনের ভূমিকাটাই বুঝলাম না। বিশেষ করে ফ্রেড, জো-র মতো স্ট্রাইকাররা কী ভাবে ব্রাজিল জার্সি পায় বোঝা কঠিন। আমি বুঝে পেলাম না, যে টিমে একটা জো থাকে, সেই একই টিমে একটা রোনাল্ডিনহো, রবিনহো বা কাকা থাকে না?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

fifaworldcup mexico brazil subrata pal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE