Advertisement
১১ মে ২০২৪

আগেও অভিযোগ, পার পেয়েছে হোম-কর্তা

তিওড়ের দুঃস্থ কিশোরীদের হোমের কর্ণধার দিলীপ মহন্তের বিরুদ্ধে পাঁচ বছর আগেও হোমের কিশোরীদের যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল। প্রশাসন সূত্রে খবর, ‌২০১০ সালের মাঝামাঝি সেই অভিযোগ পেয়ে জেলার তৎকালীন সমাজকল্যাণ আধিকারিক মতি চক্রবর্তী ওই হোম থেকে দশম ও একাদশ শ্রেণীর ২০ জন কিশোরীকে বালুরঘাট থেকে মালদহের সরকারি হোমে পাঠিয়ে দেন।

বালুরঘাট আদালতের পথে হিলির হোমের প্রাক্তন সুপার খুশি মণ্ডল। মঙ্গলবার। ছবি: অমিত মহন্ত।

বালুরঘাট আদালতের পথে হিলির হোমের প্রাক্তন সুপার খুশি মণ্ডল। মঙ্গলবার। ছবি: অমিত মহন্ত।

অনুপরতন মোহান্ত
হিলি (দক্ষিণ দিনাজপুর) শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৫ ০৩:২৪
Share: Save:

তিওড়ের দুঃস্থ কিশোরীদের হোমের কর্ণধার দিলীপ মহন্তের বিরুদ্ধে পাঁচ বছর আগেও হোমের কিশোরীদের যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল। প্রশাসন সূত্রে খবর, ‌২০১০ সালের মাঝামাঝি সেই অভিযোগ পেয়ে জেলার তৎকালীন সমাজকল্যাণ আধিকারিক মতি চক্রবর্তী ওই হোম থেকে দশম ও একাদশ শ্রেণীর ২০ জন কিশোরীকে বালুরঘাট থেকে মালদহের সরকারি হোমে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু তারপরেই মতিদেবীকে রাতারাতি বালুরঘাট থেকে হাওড়া হোমে বদলি করে দেওয়া হয়।

মতিদেবী এখন অবসর নিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘হঠাৎ বদলি হয়ে যাওয়ায় দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা তখন নিতে পারিনি।’’ তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায় বলেন, ‘‘দিলীপবাবুর বাবা ধীরেন মহন্ত আরএসপি-র বড় নেতা ছিলেন। আরএসপি-ই দিলীপবাবুকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল।’’ তৎকালীন কারা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ছিলেন আরএসপি নেতা বিশ্বনাথ চৌধুরী। তিনি আরএসপি-র দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সম্পাদকও। তাঁর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘কী হয়েছিল আমার মনে নেই।’’

সোমবার দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে কিশোরীদের ধর্ষণের অভিযোগ করেন হোমের সুপার ভক্তি সরকার লাহা। সেই রাতেই প্রাক্তন সুপার খুশি মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। খুশিদেবীকে এ দিন ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার রাতেই হোমের ৬ কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষাও করানো হয়েছে। মঙ্গলবার বালুরঘাট আদালতের বিচারক ১৬৪ ধরায় তাদের জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। তবে মূল অভিযুক্ত দিলীপবাবুর কোনও হদিস পুলিশ পায়নি। বালুরঘাটের শিবতলিতে তাঁর বাড়িতে তালা।

দিলীপবাবুর মোবাইলও বন্ধ। জেলা পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া জানান, বালুরঘাটের সিআই এই মামলার তদন্ত করছেন। পাশাপাশি ডিএসপি (সদর)-এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দলও গড়া হয়েছে।

এ দিন ওই হোমে গিয়ে কিশোরীদের সঙ্গে কথা বলেন চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসার জয়িতা মুখোপাধ্যায়। শিশু সুরক্ষা কমিটির শিউলি সরকারও আবাসিক ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রের খবর, ২০০৬ সালে হোমটি সরকারি স্বীকৃতি পেয়েছে কিন্তু এখনও পর্যন্ত আবাসিক কোনও ছাত্রীর পরিচয় নথিভুক্ত করা হয়নি।

সরকারি সূত্রের খবর, হোমে ১৫০ জন দুঃস্থ আবাসিক ছাত্রীর থাকার কথা। কিন্তু বিভাগীয় দফতর থেকে পরিদর্শনে কখনওই ১১৩ জন কিংবা ৯৬ জনের বেশি আবাসিকের হদিস মেলেনি। বাকিরা ছুটিতে বাড়ি গিয়েছে বলে হোম থেকে দেওয়া তথ্যের উপর বিশ্বাস করে পরিদর্শকেরা চলে আসেন বলে অভিযোগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE