Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কমিটি ছোট, নয়া মুখ, সংস্কারে হাত সিপিএমের

ক্ষমতার বাইরে থাকতে থাকতে এ বার সংগঠনে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রক্রিয়ায় আনুষ্ঠানিক ভাবে হাত দিল সিপিএম। নেতৃত্বে নতুন মুখ তুলে আনা, কমিটির কলেবর প্রয়োজন মতো ছোট করা এবং প্রয়োজনে ভোটাভুটি করে কমিটি বেছে নেওয়া সব কাজেই এক সঙ্গে হাত পড়েছে এ বারের সম্মেলনে। এখনও পর্যন্ত সিপিএমের সম্মেলন-পর্ব থেকেই এই ইঙ্গিত স্পষ্ট।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:২৪
Share: Save:

ক্ষমতার বাইরে থাকতে থাকতে এ বার সংগঠনে প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রক্রিয়ায় আনুষ্ঠানিক ভাবে হাত দিল সিপিএম। নেতৃত্বে নতুন মুখ তুলে আনা, কমিটির কলেবর প্রয়োজন মতো ছোট করা এবং প্রয়োজনে ভোটাভুটি করে কমিটি বেছে নেওয়া সব কাজেই এক সঙ্গে হাত পড়েছে এ বারের সম্মেলনে। এখনও পর্যন্ত সিপিএমের সম্মেলন-পর্ব থেকেই এই ইঙ্গিত স্পষ্ট।

রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে তৃণমূলের আক্রমণে বেশ কিছু দিন কোণঠাসা ছিল সিপিএম। বিশেষ করে, নিচু তলায় ছাপ ফেলছিল নিষ্ক্রিয়তা। এর মধ্যেই তাদের ক্ষয় শুরু হয় বিজেপি-র কাছে। নিরাপত্তার আশায় বিজেপি শিবিরে আশ্রয় নিতে শুরু করেছিলেন জেলায় জেলায় কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। যার প্রভাব পড়েছে ভোটব্যাঙ্কে রক্তক্ষরণেও। সারদা-সহ একের পর এক ঘটনায় শাসক তৃণমূল যখন ঘোর বিড়ম্বনায়, সেই সময়েই ফের জমি পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়েছে সিপিএম। লাগাতার রাস্তায় নামার কর্মসূচিতে ভাল সাড়াও মিলছে। এক দিকে যখন জনসমক্ষে একের পর এক কর্মসূচি চলছে, পর্দার অন্তরালে সেই সময়ই ঘটে যাচ্ছে কিছু পরিবর্তন।

এখনও পর্যন্ত তিনটি জেলা সম্মেলন শেষ হয়েছে সিপিএমের। তার মধ্যে দু’টিতেই নতুন জেলা সম্পাদক দায়িত্ব নিয়েছেন। দার্জিলিঙে নতুন সম্পাদক হয়েছেন জীবেশ সরকার এবং উত্তর দিনাজপুরে অপূর্ব সাহা। জীবেশবাবু বেশ কিছু দিন ধরেই দার্জিলিং জেলায় সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। মধ্যচল্লিশের অপূর্ব সেই অর্থে একেবারেই নতুন মুখ। বিদায়ী জেলা সম্পাদক বীরেশ্বর লাহিড়ীর ঘনিষ্ঠ এই নেতা উঠে এসেছেন যুব সংগঠন হয়ে। মালদহ জেলার সম্পাদক অম্বর মিত্র দায়িত্বে এসেছেন গত সম্মেলনের পরে। সেখানে সম্পাদক বদলের প্রশ্ন নেই। কিন্তু উত্তর দিনাজপুরের

মতো মালদহেও জেলা কমিটি নির্বাচিত হয়েছে ভোটাভুটি করে। অতীতে জেলা কমিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নির্বাচনে অনীহা ছিল সিপিএম নেতৃত্বের। এখনও বিশৃঙ্খলা এড়ানোর স্বার্থে সর্বসম্মত কমিটির জন্যই প্রথম চেষ্টা হলেও যেখানে এড়ানো সম্ভব নয়, সেখানে ভোটাভুটি জোর করে আটকাচ্ছে না আলিমুদ্দিন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিপিএমের এই মনোভাব পরিবর্তনের খবর অবশ্য আগেই প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দবাজারে। এসেছিল উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে এক ঝাঁক জেলা সম্পাদক বদলের সম্ভাবনার খবরও। কার্যক্ষেত্রে এখন সেটাই ঘটছে।

উত্তর দিনাজপুর, মালদহে জেলা কমিটি এ বার হয়েছে ৪০ জনের। কমিটির কলেবর ছোট করে দেওয়া হয়েছে আগের চেয়ে। দলীয় সূত্রের খবর, ছোট জেলার ক্ষেত্রে ৪০, মাঝারি জেলায় ৫৫ থেকে ৬০ এবং বড় জেলায় ৭৫ থেকে ৮০ জনের কমিটি করার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “সাংগঠনিক ভাবে জেলাগুলিকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে নিয়ে কমিটির কলেবর আলাদা করে ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে যে সব অভিযোগ ছিল, যথাসম্ভব সে সব মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে।”

বিরোধী শিবিরে থাকতে থাকতেই তো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর সময়!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cpm party meeting
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE