Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

জল সরলেও ঘরে ফিরতে পারেননি বহু

জল সরলেও চার দিন পরেও ঘরে ফিরতে পারেননি লাভপুরের বহু বন্যা দুর্গত পরিবার। বন্যায় কারও ঘর পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। আবার কারও বাড়ির দেওয়াল ধ্বসে গিয়েছে।

লাভপুরের কুঁয়ে নদীর বাঁধ ভাঙায় বিছিন্ন গোকুলবাটি। ভরসা এই একটি নৌকোই। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি।

লাভপুরের কুঁয়ে নদীর বাঁধ ভাঙায় বিছিন্ন গোকুলবাটি। ভরসা এই একটি নৌকোই। ছবি: সোমনাথ মুস্তাফি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
লাভপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৫ ০০:৪৯
Share: Save:

জল সরলেও চার দিন পরেও ঘরে ফিরতে পারেননি লাভপুরের বহু বন্যা দুর্গত পরিবার। বন্যায় কারও ঘর পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। আবার কারও বাড়ির দেওয়াল ধ্বসে গিয়েছে। যে কোনও সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে এই আশংকায় ঘরে ফিরতে পারছেন না তারা। গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ী কেন্দ্র কিংবা স্কুলে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন ওইসব পরিবার। ব্লক প্রশাসনেরই হিসাব অনুযায়ী ৩০ টি ত্রাণ শিবিরে প্রায় ৫০০০ মানুষ রয়েছেন।

অন্য দিকে খয়রাশোলের হিংলো জলাধার থেকে জল ছাড়তে হয়নি গত দু’দিন। তাই সোমবার ও মঙ্গলবার খোলা ছিল রানিগঞ্জ মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের মধ্যে থাকা খয়রাশোলে হিংলো নদীর কজওয়ে। ঝাড়খণ্ডে গত ২৪ ঘন্টায় প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় বুধবার ফের ওই কজওয়ে ভেসে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হল। এসডিও (হিংলো সেচ) সাধান গঙ্গোপাধ্যায় জানান, মঙ্গলবার বিকাল থেকে সাড়ে ১৭ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়তে হয়েছে। ব্লক প্রশাসন ও পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।

গত শনিবার জেলার কুঁয়ে নদীর বাঁধ ভেঙ্গে বন্যা প্লাবিত হয়ে পড়ে লাভপুরের প্রায় ৪০ টি গ্রামের পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার। সেদিন থেকেই অস্থায়ী আশ্রয়ে রয়েছেন তারা। এ দিন অধিকাংশ গ্রামে জল সরে গেলেও ঘরে ফিরতে পারেননি অনেকেই। গোকুলবাটি গ্রামে গিয়ে দেখা গেল তখনও স্কুলে রয়েছেন ১০ পরিবার। রামঘাটি গ্রামের স্কুলে দেখা মিলল ৪ টি পরিবারের। নিজেদের ঘরে কবে ফিরতে পারবেন তা জানেন না তারা। নিজে হাতে রান্না করে সন্তানদের মুখে কবে খাবার তুলে দিতে পারবেন জানেন না গৃহবধূরাও।


লাভপুরের একটি গ্রামের ত্রাণশিবির।—নিজস্ব চিত্র।

গোকুলবাটির অর্চনা গড়াই, বন্দনা মেটে, রামঘাটির সুরবান বিবি, আয়েসা বিবিরা জানান, ‘‘প্রশাসন আমাদের দু’বেলা রান্না করা খাবার সহ শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেছে। বড়দের কোনও অসুবিধা না হলে ছোটদের তো খাবার ব্যাপারে নানা বায়নাক্কা থাকে। জানি না কবে তাদের সেই আবদার মেটাতে পারব।’’

গোকুলবাটির বাবলু সুত্রধর, মনোতোষ মেটে, রামঘাটির সামসুল সেখ, ইসরাইল সেখরা জানান, বাপ ঠাকুরদার তৈরি করা বাড়িতে আমরা থাকতাম। বন্যায় সেই বাড়ি ভেঙ্গে আমরা নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছি। জানি না আদৌ কোনদিন আর নিজেদের বাড়িতে ফেরা হবে কিনা। কারণ নতুন বাড়ি তৈরি করার মতো ক্ষমতা আমাদের নেই। লাভপুরের বিডিও জীবনকৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, ‘‘নিদিষ্ট ফর্মে সঠিক ভাবে আবেদন করলে তিন মাসের মধ্যেই আংশিক এবং পূর্ণ ক্ষতিপূরণ পাবেন ক্ষতিগ্রস্তরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE