পরিস্থিতি অনুকূল। কিন্তু লক্ষ্যভেদ পরিশ্রমসাপেক্ষ। রাজ্যে বিজেপি-র সরকার চাইলে সংগঠন মজবুত করতে হবে এবং তার জন্য দলে মহিলা ও সংখ্যালঘু সদস্য বাড়াতে হবে। শনিবার বিজেপি-র রাজ্য দফতরে নেতা-কর্মীদের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় এই পরামর্শই দিলেন কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী বন্দারু দত্তাত্রেয়।
এ দিন দলের দফতরে বন্দারু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি দারুণ এগোচ্ছে। এটা খুশির খবর। কিন্তু আমাদের কর্মীদের গ্রামে গ্রামে যেতে হবে। হিন্দু, মুসলিম, ক্রিশ্চান সকলকেই দলে আনতে হবে। মহিলা এবং মুসলিমদের বেশি করে চাই।” একই সঙ্গে মন্ত্রীর বার্তা, “এক থেকে ১০ হওয়াটাই কঠিন। তার পর ১০ থেকে ২০ বা ২০ থেকে ৩০ হওয়া অত কঠিন নয়।” বন্দারুর ব্যাখ্যা, এ রাজ্যে বামেরা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে। কংগ্রেসের যা হাল, তাতে তারাও বিধানসভা ভোটে চতুর্থ স্থানের উপরে উঠতে পারবে না। ফলত এ রাজ্যে বিজেপি-র সরকার গঠনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। সারদা কাণ্ডে তৃণমূল কোণঠাসা হয়ে পড়ায় এ রাজ্যে কি ২০১৫ সালেই বিধানসভা ভোট হয়ে যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন? বন্দারুর জবাব, “যে কোনও কিছুই ঘটতে পারে।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ওই বক্তব্যে রাজ্য বিজেপি যথেষ্ট উৎসাহিত। দলের রাজ্য নেতৃত্বের বক্তব্য, বিরোধীদের দেওয়া সাম্প্রদায়িক তকমাকে অগ্রাহ্য করে ইদানীং কালে এ রাজ্যে প্রচুর মুসলিম দলে যোগ দিচ্ছেন। বীরভূম জেলায় বিজেপি-তে মুসলিম সদস্য বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। এই মুহূর্তে ১ লক্ষ ৩ হাজার মুসলিম সদস্য রয়েছেন বিজেপি-তে। তার উপর বন্দারুও মুসলিম সদস্য বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়ায় দলের লাভ হবে। বস্তুত, এ রাজ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের কথা মাথায় রেখেই বন্দারু থেকে স্থানীয় নেতা বিজেপি-র সর্ব স্তরে সংখ্যালঘু সদস্য বাড়ানোর এত উদ্যোগ।
বন্দারু এ দিন যখন কলকাতায় বসে সংগঠন মজবুত করার দাওয়াই বাতলান, তখনই পূর্ব মেদিনীপুরে জনসভা থেকে আদি তৃণমূল কর্মীদের বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। তাঁর বার্তা একদা যাঁরা ক্ষমতাসীন বামেদের সঙ্গে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে তৃণমূলের বিস্তার ঘটিয়েছিলেন, সিপিএম থেকে যাওয়া নব্য তৃণমূলদের চাপে তাঁরা এখন দলে ব্রাত্য। এঁদের বিজেপি-তে যোগ দেওয়া উচিত। নন্দীগ্রাম লাগোয়া চণ্ডীপুর বাজারের কালীপদ স্মৃতি ময়দানের জনসভায় রাহুলবাবু বলেন, “সিপিএমের গুন্ডারা, যারা তৃণমূলের মধ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তাদের আমরা দলে ঢুকতে দেব না। সুতরাং, দুর্দিনে তৃণমূল করে যাঁরা দলটাকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, সেই কার্যকর্তারা আমাদের দলে আসুন।”
ওই জেলার নন্দীগ্রাম থেকে ক্ষমতার পথে যাত্রা শুরু করেছিল তৃণমূল। শাসক হওয়ার সাড়ে তিন বছরের মধ্যে পায়ের তলায় জমি হারাচ্ছে তারা। সেই প্রসঙ্গ তুলে রাহুলবাবু বলেন, “এই পূর্ব মেদিনীপুর থেকেই তৃণমূলের জন্ম। আর এখান থেকেই তৃণমূলের কবর কাটা হবে।” শুভেন্দু এবং শিশির অধিকারীর নাম না করে রাহুলবাবুর কটাক্ষ, “এই জেলায় সামনে থেকে যাঁরা নেতৃত্ব দিতেন, সেই সাংসদদের তৃণমূলের সামনের সারিতে দেখা যায় না কেন? তাঁরা আজ ব্যাক বেঞ্চে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy