শ্বশুরবাড়িতে স্বাভাবিক সম্পর্কে অশান্তির আগুন লেগেছিল। বছরখানেক আগে তাই বেরিয়ে এসেছিলেন মহুয়া চট্টোপাধ্যায় (৩২)। বাপের বাড়িতে শেষ রাতের আগুনে মৃত্যু হল তাঁর। সেই সঙ্গে বন্ধ ঘরে পুড়ে মারা গেলেন তাঁর মা নমিতা মুখোপাধ্যায় (৬২) এবং দাদা মানস মুখোপাধ্যায়। দক্ষিণ শহরতলির বিষ্ণুপুর-উকিলপাড়ার ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন একটি শিশু-সহ ছ’জন।
পুলিশি সূত্রের খবর, মুখোপাধ্যায় পরিবারের কর্তা প্রফুল্লবাবু ও তাঁর স্ত্রী নমিতাদেবী দু’জনেই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তেতলা বাড়িতে ছেলে, বৌমা ও নাতি-নাতনিদের নিয়ে থাকেন। শ্বশুরবাড়িতে বনিবনা না-হওয়ায় প্রায় এক বছর ধরে বাপের বাড়িতে রয়েছেন মহুয়াদেবীও। সম্প্রতি প্রফুল্লবাবুর অন্য মেয়ে মিঠু অধিকারীও বাবা-মায়ের কাছে এসেছিলেন। সোমবার রাতে দোতলায় দু’টি পাশাপাশি ঘরের একটিতে শুয়ে ছিলেন মহুয়াদেবী। অন্যটিতে প্রফুল্লবাবু ও নমিতাদেবী। দাদু-ঠাকুরমার সঙ্গে শুয়ে ছিল নাতি সন্দীপন ও নাতনি উপাসনা। তেতলায় একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন প্রফুল্লবাবুর ছেলে মানস এবং বৌমা পলি। পাশের ঘরে ছিলেন মিঠুদেবী।
মঙ্গলবার সকালে ওই বাড়ির দোতলার ঘর থেকে ধোঁয়া ও আগুন বেরোতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ ও দমকলে খবর দেন। কিন্তু দমকল এসে সদর দরজার তালা ভাঙতে হিমশিম খেয়ে যায়। এমনকী বাড়ির ভিতরেও একের পর এক ভারী তালা লাগানো ছিল। সেই সব তালার বাধা ভেঙে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে বেগ পেতে হয় দমকল ও পুলিশকর্মীদের। শেষ পর্যন্ত সব তালা ভেঙে ঢুকে পুলিশ দোতলার ঘর থেকে মহুয়াদেবীর দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে। বাকিদেরও উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যায় সেখানেই মারা যান নমিতাদেবী ও মানসবাবু। পরিবারের অন্যদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
কী ভাবে আগুন লেগেছিল, তা জানা যায়নি। আরও কয়েকটি প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
এত বড় অগ্নিকাণ্ড ঘিরে আদৌ চেঁচামেচি-আর্তনাদ হয়েছিল কি? হয়ে থাকলে রাতেই পড়শিরা ব্যাপারটা টের পেলেন না কেন?
যদি চিৎকার না-হয়ে থাকে, সেটাও কি খুব স্বাভাবিক? নিরাপত্তার জন্য বাড়িতে তালা লাগানো হয়েই থাকে। কিন্তু সকলে বাড়িতে থাকাকালীন অত ভারী ভারী তালা কেন, সেটাও প্রহেলিকার মতো ঠেকছে পুলিশের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy