Advertisement
০২ মে ২০২৪

বিজেপির লক্ষ্য আজ লালবাজার

দলীয় কর্মীদের ‘মিথ্যা মামলা’য় ফাঁসানোর প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার যখন লালবাজার অভিযান করবে বিজেপি, তখনই দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৭ ০৩:৪৪
Share: Save:

দলীয় কর্মীদের ‘মিথ্যা মামলা’য় ফাঁসানোর প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার যখন লালবাজার অভিযান করবে বিজেপি, তখনই দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকের কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজ্য বিজেপি-র আন্দোলন কর্মসূচির দিনই মোদী-মমতার ওই বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী বাম এবং কংগ্রেস। এমনকী, কটাক্ষ করতেও ছাড়েনি তারা। রাজ্য বিজেপি-র যদিও দাবি, তারা মোদী-মমতা বৈঠক নিয়ে ভাবিত নয়। আর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আজকের বৈঠক সম্পূর্ণ প্রশাসনিক কারণে।

দিল্লিতে আজ বেলা তিনটেয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক বঞ্চনা এবং দাবিদাওয়া নিয়ে বৈঠক করবেন মমতা। বুধবার দিল্লি যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘গঙ্গা ভাঙন, অন্য নদী সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে মানুষ কষ্টে রয়েছেন। তা নিয়ে আলোচনা করব। দেওচা পাচামি প্রকল্পের কাজও বন্ধ হয়ে রয়েছে। কেন্দ্রের কাছ থেকে অনেক টাকা পাওনাও রয়েছে। তা ছাড়া, যখনই দিল্লি যাই, তখনই সৌজন্যের খাতিরে এবং কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করি।’’ ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী বিষয়ে সর্বসম্মতি নিয়েও মোদীর সঙ্গে বৈঠকে কথা বলতে পারেন মমতা।

আরও পড়ুন: পরীক্ষায় পুলিশ, বিজেপিও

বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে মোটেই আস্থা রাখতে পারছে না। বিরোধী দলের সচেতক মনোজ চক্রবর্তীর তির্যক মন্তব্য, ‘‘এক বৃন্তে দু’টি কুসুম— মোদী আর দিদি! নরসিংহ রাও, অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং মনমোহন সিংহ— তিন মন্ত্রিসভাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকেছেন। এটা নতুন কিছু নয়। যখন যাকে দরকার, তখন তার হাতই উনি ধরেন।’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পারিষদ বর্গ ছাড়াই মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি যাচ্ছেন। এখান থেকেই স্পষ্ট— ডাল মে জাদাই কালা হ্যায়! রাজ্যের জন্য দরবার করতে গেলে অর্থমন্ত্রী ও অন্যান্য পারিষদ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যেতেন।’’

মোদী-মমতা বৈঠকের আবহে কলকাতায় আজ লালবাজার অভিযানের সময় দলীয় কর্মীদের মনোবলও ধাক্কা খেতে পারে বলে রাজ্য বিজেপিতে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিজেপির একাংশের মতে, যত বার তৃণমূল ও রাজ্য সরকার-বিরোধী লড়াইয়ের জন্য রাজ্যের নেতা-কর্মীরা কোমর বাঁধেন, তত বারই কেন্দ্রের বিভিন্ন বাধ্যবাধকতায় আগুনে জল পড়ে যায়। এর আগেও সারদা, রোজভ্যালি এবং নারদ কেলেঙ্কারি নিয়ে যখনই রাজ্য বিজেপি সুর চড়িয়েছে, তখনই দিল্লিতে মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মমতা। এতে বিরোধীরা বারে বারেই মোদী-মমতা সখ্যের অভিযোগ তোলার সুযোগ পেয়েছে। রাজ্য বিজেপি-র একাংশের আশঙ্কা, এ রকম বার বার হলে তৃণমূল-বিরোধী মানুষের আস্থা অর্জন করা তাদের পক্ষে কঠিন হবে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই আশঙ্কার তত্ত্ব উড়িয়ে বলেন, ‘‘দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে ভাবিত নই। আমাদের কাজ তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই। আমরা সেটা করে মানুষের ভরসা অর্জন করেছি। তার উপর দাঁড়িয়ে লালবাজার অভিযান হচ্ছে।’’ বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের বক্তব্য, ‘‘আমরা উন্নয়ন নিয়ে রাজনীতি করি না। তাই প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু রাজ্যে তৃণমূলকে জমি আমরা ছাড়ব না। তাই এই লালবাজার অভিযান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Lalbazar Protest Rally
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE