Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বুদ্ধদেবের হাতেই দলের চাবিকাঠি, জানালেন গৌতম

শরীর অসুস্থ। সর্বত্র মাঠে-ঘাটে দলের কর্মসূচিতে যেতে পারেন না। তবু আলিমুদ্দিনের মগজাস্ত্র যে এখনও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতেই, এ বার তা সরাসরিই বুঝিয়ে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম দেব। তাঁর কথায়, “বুদ্ধদা আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর শরীর নিয়ে আমরা সকলেই উদ্বিগ্ন। তবু শরীর সামলে পার্টিটাকে তিনিই নেতৃত্ব দেবেন।” দলের সম্মেলন পর্ব চলাকালীন গৌতমবাবুর এমন মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:২৪
Share: Save:

শরীর অসুস্থ। সর্বত্র মাঠে-ঘাটে দলের কর্মসূচিতে যেতে পারেন না। তবু আলিমুদ্দিনের মগজাস্ত্র যে এখনও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হাতেই, এ বার তা সরাসরিই বুঝিয়ে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য গৌতম দেব। তাঁর কথায়, “বুদ্ধদা আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাঁর শরীর নিয়ে আমরা সকলেই উদ্বিগ্ন। তবু শরীর সামলে পার্টিটাকে তিনিই নেতৃত্ব দেবেন।” দলের সম্মেলন পর্ব চলাকালীন গৌতমবাবুর এমন মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যা।

সিপিএমে এখন সম্মেলন চলছে জেলায় জেলায়। আগামী মার্চের রাজ্য সম্মেলনে দলের রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে বিমান বসুর বিদায় নেওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। তাঁর জায়গায় নতুন রাজ্য সম্পাদক হিসাবে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র-সহ জনা তিনেক নেতার নাম নিয়ে দলের অন্দরে চর্চা আছে। কয়েক দিন আগে শহিদ মিনারে বিপুল জমায়েত এবং তার আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় একেবারে তৃণমূল স্তরে বহু দিন পরে সিপিএমের কর্মসূচি করে দেখিয়ে রাজ্য সম্পাদকের দৌড়ে ফের ঢুকে পড়েছেন স্বয়ং গৌতমবাবুও। শনিবার একটি টিভি সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব পেলে তিনি কী ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন? কে রাজ্য সম্পাদক হবেন, সেই প্রশ্ন প্রথমে এড়িয়ে যান গৌতমবাবু। তার পরেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সিপিএম আসলে চলছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই।

গৌতমবাবু বলেছেন, “বুদ্ধদা আছেন। জেনে রাখুন, নেতৃত্ব তিনিই দিচ্ছেন।” দলের একাংশের মতে, বিমানবাবু রাজ্য সম্পাদক পদে থাকাকালীনই নেতা হিসাবে যে ভাবে গৌতমবাবু শুধু বুদ্ধবাবুর কথাই বলেছেন, সিপিএম রাজনীতিতে তা অত্যন্ত ইঙ্গিতবহ। গৌতমবাবুর কথায় ইঙ্গিত আছে, পরবর্তী রাজ্য সম্পাদক যে-ই হোন না কেন, দলের চাবিকাঠি থাকবে বুদ্ধবাবুর হাতেই। এবং স্বাভাবিক কারণেই রাজ্য সম্পাদক নির্বাচনেও বুদ্ধবাবুর মতামত নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে।

কয়েক দিন আগে শহিদ মিনারের সমাবেশে উপস্থিত হয়েও শারীরিক কারণে বক্তৃতা করতে পারেননি বুদ্ধবাবু। সদ্য অস্ত্রোপচার সেরে উঠে গৌতমবাবুর উপস্থিতিও ছিল ভিডিও বার্তায়। কিন্তু মাঠে-ময়দানে সে ভাবে দেখা না গেলেও পর্দার অন্তরালে তাঁর সক্রিয়তার প্রমাণ ক’দিন আগেই সিপিএমের অন্দরে রেখেছেন বুদ্ধবাবু। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনের কুকথার জেরে দিল্লিতে সংসদ চত্বরে ধর্নায় তৃণমূলের সঙ্গেই যেতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন লোকসভার সিপিএম সাংসদেরা। মধ্য রাতে কলকাতা

থেকে হস্তক্ষেপ করে বুদ্ধবাবু বলেছিলেন, যে দলে তাপস পালের মতো কীর্তিমান সাংসদ আছেন, তাদের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচির প্রশ্নই ওঠে না। রাজ্য সম্পাদক হলেও বিমানবাবুর ভূমিকা সে দিন বিশেষ চোখে পড়েনি। সেই ঘটনা এবং তার পরে এ দিন গৌতমবাবুর মন্তব্যই ইঙ্গিত দিচ্ছে সিপিএমের মস্তিষ্ক এখনও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

budhadeb bhattachariya goutam dev cpm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE