Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কমিশন হলফনামা নেবে জেলাশাসকের

রাজ্যে পরবর্তী চার দফার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যথাযথ ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে কি না, জেলাশাসকদের তা হলফনামা দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। প্রতি দফা ভোটের দিনই এই শংসাপত্র কমিশনে পাঠাতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪৩
Share: Save:

রাজ্যে পরবর্তী চার দফার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যথাযথ ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে কি না, জেলাশাসকদের তা হলফনামা দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। প্রতি দফা ভোটের দিনই এই শংসাপত্র কমিশনে পাঠাতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিশেষ পর্যবেক্ষক সুধীরকুমার রাকেশ। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং পর্যবেক্ষকদের নিয়ে শনিবার প্রায় দু’ঘণ্টার ভিডিও-বৈঠকে তিনি এ কথা জানান। সুধীরকুমার আজ, রবিবার যাচ্ছেন মুর্শিদাবাদ। নির্বাচনী প্রস্তুতি দেখার পাশাপাশি সাধারণ ভোটারদের সঙ্গেও কথা বলবেন তিনি।

এ দিনের ওই বৈঠকে সুধীরকুমার বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীকে যথাযথ ভাবে ব্যবহার করতে হবে। পর্যবেক্ষকদের পরামর্শ মেনে যে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর কথা, ভোটের দিন সেই সব বুথে যে বাহিনী পৌঁছেছে, সে কথা হলফনামায় জানাতে হবে জেলাশাসকদের।” বিশেষ পর্যবেক্ষক জানিয়ে দেন, জেলাশাসকদের এ-ও লিখে দিতে হবে, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী যাওয়ার খবর তিনি নিয়েছেন। এর পরেও যদি কোনও অভিযোগ ওঠে, কমিশন তবে কঠোর অবস্থান নেবে।

রাজ্যে প্রথম দফার নির্বাচনে কোচবিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিক ভাবে কাজে না লাগানোতেই বুথ ভাঙচুর, এজেন্টদের মারধর করার মতো ঘটনা ঘটেছে বলে কমিশনের কাছে বিরোধী দলগুলির বিস্তর অভিযোগ জমা পড়েছিল। বহু স্পর্শকাতর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা মেলেনি বলেও অভিযোগ আনেন বিরোধীরা। অথচ ভোট শেষে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্ত জানান, গত বারের চেয়েও বেশি সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল এ বার।

তবে সমস্যাটা হল কোথায়?

কমিশনের কর্তাদের একাংশের মতে, কোচবিহারে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠিক মতো পরিকল্পনা করে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে খামতি হয়ে থাকতে পারে। একই ঘটনা যাতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফার ভোটে না হয় তার জন্যই সুধীরকুমার এ দিনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার উপরে সব চেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন। এ ব্যাপারে জেলাশাসকদের ‘শংসাপত্র’ জমা দেওয়ার কথা বলে কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক বুঝিয়ে দিয়েছেন, পরবর্তী দফাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী ঠিক মতো ব্যবহার না করা নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ শুনতে রাজি নয় কমিশন। যদি এই অভিযোগ ওঠে এবং তার সত্যতা পাওয়া যায়, তবে তার দায় বর্তাবে জেলাশাসকদের উপরে।

এ দিনের ভিডিও-বৈঠকে অংশ নেন এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) এম কে সিংহ, আইজি (আইন-শৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা, ডিজি (সশস্ত্র বাহিনী) রাজ কানোজিয়া। সিইও সুনীল গুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে সুধীরকুমার প্রায় দু’ঘণ্টা আলোচনা করেন।

তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ভোটাররা যাতে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোট দিতে যেতে পারেন, জেলাশাসকদেরই সেটা নিশ্চিত করতে হবে। রাজ্যে ৬টি কেন্দ্রে ভোট রয়েছে ২৪ এপ্রিল। যার মধ্যে বালুরঘাট, দক্ষিণ মালদহ, মুর্শিদাবাদ, জঙ্গিপুরের মতো কেন্দ্রও রয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, রবিবার বা কাল, সোমবারের মধ্যেই প্রতিটি কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছে যাবে।

আর বাহিনী পৌঁছে গেলেই তাদের বসিয়ে না রেখে ভোটের দিন সাতেক আগে থেকেই মহল্লায় মহল্লায় টহলদারি, বাজারে, রাস্তায় তল্লাশির কাজ শুরু করে দেওয়ার কথা বলেছেন সুধীরকুমার। বিশেষ করে যে সব অঞ্চলে নির্বাচনে গোলমালের ইতিহাস রয়েছে বা যে সব এলাকা উত্তেজনাপ্রবণ, সেখানে আগে থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ভোটের দিন কোনও অভিযোগ উঠলে দ্রুত তার প্রতিকার করতে বলেছেন বিশেষ পর্যবেক্ষক। তদন্তে কী পাওয়া গেল এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, অভিযোগকারী ও সংবাদমাধ্যমকে তা জানানোর নির্দেশও দিয়েছেন সুধীরকুমার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

loksabha election central force
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE