Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ভরা সম্মেলনে কর্মীদের চাকরির আশ্বাস শিশিরের

দিন কয়েক আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, কারও বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ উঠলে দল পাশে থাকবে না, তাড়িয়ে দেবে। এ বার দলেরই বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধেই এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ উঠল।

শিশির অধিকারী

শিশির অধিকারী

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটাশপুর শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:৫৮
Share: Save:

দিন কয়েক আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, কারও বিরুদ্ধে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ উঠলে দল পাশে থাকবে না, তাড়িয়ে দেবে। এ বার দলেরই বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধেই এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ উঠল।

শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের দু’টি ব্লকের যৌথ কর্মিসভায় জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশিরবাবুর ঘোষণা, ‘‘চাকরির লিখিত পরীক্ষায় পাশ করলে দলকে জানাবেন। মৌখিক পরীক্ষায় পরীক্ষক হিসাবে সরকারি প্রতিনিধি হয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের দলের লোকই থাকেন। আপনারা যাতে চাকরিটা পান, সেটা আমরা দেখব।”

প্রত্যাশিত ভাবেই শিশিরবাবুর কথার সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। তারা মনে করছে, এতে স্থানীয় স্তরের তৃণমূল নেতাদের টাকা তোলার রাস্তা সহজ হয়ে গেল। দলীয় সাংসদের এমন ঘোষণায় হাততালিতে ফেটে পড়ে গোটা সম্মেলন-কক্ষ। এ নিয়ে শিশিরবাবুকে পরে ফোনে ধরা হলেও তিনি ওই আশ্বাসে অনড় থাকেন। তিনি বলেন, “যে সব ক্ষেত্রে চাকরি দেওয়ার সুযোগ আছে সেখানে দেব।” এই আশ্বাস কি শুধুই দলীয় কর্মীদের জন্য? শিশিরবাবুর জবাব, “দলের লোক ছাড়া আর কে!” শিশিরবাবুর এই আশ্বাস নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কোনও বক্তব্য অবশ্য পাওয়া যায়নি। তাঁর ফোন বন্ধ ছিল। এসএমএসেরও উত্তর মেলেনি।

আইসিডিএস, জেলা স্তরের নানা নিয়োগ, এমনকী টেট নিয়েও শাসকদলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ নতুন নয়। জেলার বিভিন্ন সভায় এর আগে শিশিরবাবু নিজেও নেতাদের এ নিয়ে সতর্ক করেছেন। এ দিন তাঁর মুখেই এমন কথা কেন?

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, পটাশপুরে দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। এ দিন সম্মেলনে তাই বারবার শিশিরবাবু সকলকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি মঞ্চ থেকে নামতেই তাঁকে ঘিরে নানা অভিযোগ জানাতে থাকেন কর্মীরা। তখন বাধ্য হয়ে ফের মঞ্চে উঠে মাইক হাতে তিনি চাকরির বিষয়টি বলেন।

এ নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনা করতে ছাড়েনি। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘শিশিরবাবু উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এমন বলেছেন।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি মলয় সিংহের কথায়, ‘‘এটাই তৃণমূলের আসল চেহারা। ওরা ভাল সেজে থাকে। আর দলের কর্মীদের দিয়ে টাকা তোলে।’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি আনোয়ার আলির বক্তব্য,

‘‘কর্মীদের তো অধিকারীরা এ ভাবেই চালনা করেন। এতে নতুন কী আছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE