প্রতিমার কাঠামো, প্লাস্টিকে ভরেছে দুর্গাপুরের জলাশয়। —নিজস্ব চিত্র।
বিধায়ক তহবিল থেকে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে হাসপাতালে দেওয়া হয়েছিল ডায়ালসিস মেশিন। কিন্তু প্রায় তিন বছর কেটে গেলেও তা চালু হয়নি। ফলে, এখনও গাঁটের কড়ি খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালসিস করাতে হচ্ছে রোগীদের। সমস্যায় পড়ছেন গরিব রোগীরা। চালু হয়নি পাঁচ শয্যার ডায়ালিসিস ইউনিটও। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, জানুয়ারিতেই ডায়ালিসিস যন্ত্র চালু করা ফেলা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
২০১৩ সালের গোড়ার দিকে দুর্গাপুরের (পূর্ব) বিধায়ক নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের তহবিল থেকে এই হাসপাতালের জন্য বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কেনা হয়। সেই সময়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকায় একটি ডায়ালসিস যন্ত্রও কেনা হয়। কিডনির জটিল রোগে ভোগা মানুষজন যাতে বিনামূল্যে চিকিৎসা করাতে পারেন, সে জন্য এই ব্যবস্থা করেন বিধায়ক। কিন্তু এত দিনেও সেটি চালু করা যায়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, যন্ত্রটি চালানোর জন্য উপযুক্ত কর্মী না থাকার জন্যই সেটি চালু করা যায়নি। ও দিকে, এত দিন পড়ে পড়ে যন্ত্রটির ‘ওয়ার্যান্টি পিরিয়ডও’ পেরিয়ে যায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরে সিদ্ধান্ত হয়, যন্ত্রটি পিপিপি মডেলে চালু করা হবে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনায় বসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায়, হাসপাতালের পরিকাঠামো ব্যবহার করে পাঁচ শয্যার ডায়ালসিস ইউনিট চালাবে বেসরকারি সংস্থা। সে জন্য দরপত্রও ডাকা হয়। কিন্তু সে সবের পরে প্রায় আট মাস পেরিয়ে গেলেও ডায়ালসিস ইউনিট চালু করা যায়নি।
ডায়ালসিস যন্ত্র চালু করতে হাসপাতালের চিকিৎসক ও রোগীদের একাংশ বিভিন্ন সময়ে আবেদন করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। বিধায়ক নিখিলবাবুও সেটি চালু করার জন্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছেন। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে এটি চালুর বিষয়ে আমি সুপারিশ করেছি। তবে তা এখনও চালু করা যায়নি। দ্রুত চালু হলে মানুষের খুব উপকার হবে।’’
সরকারি এই হাসপাতালে ডায়ালসিস না হওয়ায় দুর্গাপুর ও আশপাশের এলাকার অনেক দুঃস্থ পরিবারকেই রোগীদের নিয়ে ডায়ালিসিস করাতে যেতে হয় নানা বেসরকারি হাসপাতালে। কাঁকসার বাসিন্দা, পেশায় গাড়ি চালক সঞ্জীব রুইদাস জানান, তাঁর বাবার বছরখানেক ধরে ডায়ালিসিস করাতে হচ্ছে। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অনেক টাকা খরচ করে তা করাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে এই চিকিৎসা হলে আমাদের মতো মানুষজনের অনেক সুবিধা হয়।’’
হাসপাতাল সুপার দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় তা বাতিল হয়ে যায়। ফের টেন্ডার ডাকা হবে।’’ জানুয়ারির মধ্যে ডায়ালিসিস যন্ত্র চালু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy