কোনও অনুষ্ঠান উপলক্ষে নয়। শুধু পরিদর্শনের জন্যই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন আচার্য-রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। সমাবর্তন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কোনও অনুষ্ঠানে আচার্যের উপস্থিতি ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। কিন্তু নিছক পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে তাঁর কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার নজির বিরল।
কাল, বুধবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদবপুর ক্যাম্পাসে যাবেন রাজ্যপাল। তিনি কয়েকটি গবেষণাগার ঘুরে দেখবেন। সেই সঙ্গেই বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল ইনস্ট্রুমেন্টস লিমিটেড (এনআইএল)-এর ক্যাম্পাসটি ঘুরে দেখার কথা আছে তাঁর।
পদাধিকারবলে রাজ্যপাল রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য। কেবল কাগজে-কলমে পদে থাকা নয়, তিনি যে কাজেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির প্রধানের ভূমিকা পালন করবেন, বিভিন্ন সময়ে নিজের আচার-আচরণে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন নারায়ণন। ছাত্র-বিক্ষোভের জেরে কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্যদের ঘেরাও হয়ে থাকার ঘটনায় তিনি যেমন অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন, তেমনই বিভিন্ন সময়ে প্রশংসাও করেছেন তাঁদের অগ্রগতির। আবার হামলার পরে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে সেখানকার ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন রাজ্যপাল। প্রশংসা করেছিলেন প্রেসিডেন্সির তৎকালীন উপাচার্য মালবিকা সরকারের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম কেমন হচ্ছে, তা জানতে উপাচার্যদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে বৈঠকও করছেন নারায়ণন। আজ, মঙ্গলবারেই যেমন কলকাতা, যাদবপুর, বর্ধমান, উত্তরবঙ্গ-সহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে আচার্যের বৈঠক হওয়ার কথা। আর তার এক দিন পরেই তিনি যাচ্ছেন যাদবপুরে।
কেন এই পরিদর্শন?
যাদবপুরের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী সোমবার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য রাজ্যপালকে মৌখিক ভাবে আবেদন জানিয়েছি বেশ কয়েক বার। তাতে সাড়া দিয়েই আসছেন উনি।”
কয়েক দিন আগেই রাজভবন থেকে চিঠি পাঠিয়ে যাদবপুরে রাজ্যপালের পরিদর্শনে আসার কথা বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যাদবপুর-কর্তৃপক্ষ আবার তার ভিত্তিতে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছেন, বুধবার বেলা পৌনে ১২টা থেকে পৌনে ১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা ধরে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখবেন আচার্য-রাজ্যপাল নারায়ণন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, যাদবপুরের অগ্রগতি, উৎকর্ষ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, গবেষণা ইত্যাদির তথ্য জানানো হবে রাজ্যপালকে। যেমন, ২০১৪-’১৫ শিক্ষাবর্ষেই যাদবপুরে স্নাতক স্তরে ভূগোলের পাঠ শুরু হচ্ছে, ২০১৫-য় আইন ও ম্যানেজমেন্ট পঠনপাঠন চালু করার পরিকল্পনা আছে এই সব কিছুই আচার্যকে জানানো হবে। একই সঙ্গে তাঁর কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে জরুরি পরামর্শও চাওয়া হবে।
আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণার কয়েকটি পরীক্ষাগার, যেমন হাইটেনশন ল্যাব, কগনিটিভ সায়েন্স ল্যাব, ন্যানো টেকনোলজি ল্যাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে বাঁশের তৈরি গেস্ট হাউস ইত্যাদি দেখানো হবে রাজ্যপালকে। তার ফাঁকেই বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক সেরে এনআইএল ক্যাম্পাসে যাবেন তিনি। যদিও এক ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে এত কিছু কী করে করা হবে, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের একাংশই সংশয়ে আছেন। তা সত্ত্বেও রাজ্যপালের এই পরিদর্শনকে সফল করতে মরিয়া যাদবপুর-কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy