শুধু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়কিবাজির মতো ছোটা নয়। সময়ের সঙ্গে নিজেকেও বদলে ফেলেছেন অনেকটা।
উত্তরবঙ্গে ধস নামার খবর যখন কাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে এল, সেই সময় তিনি মুর্শিদাবাদে। তৎক্ষণাৎ গোটা সরকারিতন্ত্রকে চাগিয়ে তুলে নিজে যেমন ছুটেছেন দার্জিলিঙের পথে, তেমনই প্রতিমুহূর্তে টুইটে জানিয়ে গিয়েছেন সেই সময়কার হাল হকিকত। ক’জন প্রাণ হারিয়েছেন, কত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে, তিনি কী পদক্ষেপ করছেন— সবকিছুই জানিয়ে গিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। আজ সকাল থেকেও ছ’ ঘন্টার বেশি পথ পেরিয়ে মিরিকে পৌঁছেছেন। মিরিক যাওয়ার রাস্তা ধসে বন্ধ থাকায় অন্য পথে দিয়ে ঘুরে গিয়েছেন। ত্রাণ শিবিরে গিয়েছেন। নিজের হাতে ত্রাণ দিয়েছেন। মৃত ও আহতদের পরিবারদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
কিন্তু এরই মধ্যে প্রতিটি ধাপে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সব কিছু জানিয়ে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। গতকাল থেকে টুইটারের পর আজ সন্ধ্যায় ফেসবুকেও তিনি অবগত করিয়েছেন সাম্প্রতিকতম গতিবিধি। দুর্গতদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকার ছবিও পোস্ট করেছেন সেখানে। অন্য দলের নেতারা তো বটেই, এমনকী খোদ তৃণমূল শিবিরের নেতারাও মনে করছেন, সময়ের সঙ্গে অনেকটাই নিজেকে বদলে ফেলেছেন ‘দিদি’। মমতার পূর্বসূরী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কোনও দিনই তেমন মোবাইল-বান্ধব ছিলেন না। কিন্তু আজকাল অনেক রাজনৈতিক নেতাই উপলব্ধি করছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার এক ব্যাপক প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে।
এমন নয়, মমতা আগে মোবাইল-বান্ধব ছিলেন না। কিন্তু এখন যে ভাবে তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতেও সক্রিয় হচ্ছেন, তাতে স্পষ্ট এর প্রাসঙ্গিকতার বিষয়টি অনুধাবন করছেন তিনি। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তৃণমূল নেতা ডেরেক-ও-ব্রায়েন বলেন, ‘‘উনি কিন্তু সবটাই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে করছেন। এবং নিজেই করছেন।’’ লোকসভা নির্বাচনের সময়ে এই সোশ্যাল মিডিয়াকে বড় করে হাতিয়ার করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। এমনকী এখনও তিনি সব মন্ত্রীকে এই মাধ্যমে নিরন্তর যোগাযোগ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সদ্য গতকালও সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত শ’দেড়েক তরুণ যুবক-যুবতীদের নিজের বাসভবনে ডেকে পাঠান মোদী। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে কেউ গাল পাড়লেও আমি তাঁকে ব্লক করি না। বরং ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে বিরোধীদের তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়েই জবাব দেওয়া উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy