প্রতিবাদে পথে। রাজ্যে বেড়ে চলা নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে কাকদ্বীপ থেকে শুরু হওয়া বামেদের সাইকেল-জাঠা শেষ হল কামদুনিতে। সমাপ্তি সমাবেশে হাজির ছিলেন কামদুনির দুই প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী ও টুম্পা কয়াল। সোমবার সুদীপ ঘোষের তোলা ছবি।
গ্রামে-শহরে জাঠার পরে ছিল সাইকেল-জাঠা। রাজ্য জুড়ে নারী নির্যাতনের বে়ড়ে চলা ঘটনার প্রতিবাদে কাকদ্বীপ থেকে কামদুনি সাইকেল মিছিল শেষ হল সোমবার। আর এ দিনই বামেদের গণসংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের (বিপিএমও) তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করে দেওয়া হল সিঙ্গুর থেকে শালবনি পদযাত্রার। এ বারের বিষয়, মূলত রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনার শ্মশান-যাত্রা এবং কর্মসংস্থানের দৈন্য দশাকে তুলে ধরা। বিধানসভা ভোটের আগে এখন এ ভাবেই নানা কর্মসূচি নিয়ে লাগাতার রাস্তায় থাকতে চাইছে বামেরা।
কাকদ্বীপ থেকে দু’শো সাইকেল আরোহী শনিবার যে মিছিল শুরু করেছিলেন, কুলপি-জয়নগর-বারুইপুর-ভাঙড়-ভোজের হাট হয়ে এ দিন তা শেষ হয়েছে কামদুনিতে। সাইকেল জাঠা শেষ হওয়ার সময়ে আরোহীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৫৪৭। কিছুটা পথ সাইকেল জাঠায় অংশ নিয়েছিলেন সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তীও। কামদুনিতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদের দুই মুখ মৌসুমী কয়াল ও টুম্পা কয়াল এ দিন এসেছিলেন সমাপ্তি সমাবেশে। মিনতি ঘোষ, সায়নদীপ মিত্র, মধুজা সেনরায়ের মতো বাম মহিলা, যুব ও ছাত্র সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
সাইকেল-জাঠা সমাপ্তির কাছাকাছি সময়েই কলকাতায় বিপিএমও-র আহ্বায়ক তথা সিটুর রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী এ দিন জানিয়েছেন, সিঙ্গুর থেকে ১৬ জানুয়ারি জাঠা শুরু হয়ে শালবনিতে তা শেষ হবে ২২ তারিখ। হুগলি জেলার পুরশুড়া, গোঘাট, আরামবাগ, তারকেশ্বর, পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর দিয়ে ওই জাঠা যাবে। শ্যামলবাবুর কথায়, ‘‘এই সব এলাকার রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি। মানুষের কোনও গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। বিগত সাড়ে চার বছরে বিরোধীরা কোনও মিছিল বা সভা করতে পারেনি। তৃণমূলের ক্ষমতা থাকলে তারা জাঠা আটকাক!’’ বামেদের জাঠার প্রথম কর্মসূচিতে জেলায় জেলায় হামলার জেরে শাসক দলের বিড়ম্বনাই বাড়ছে বুঝে ইদানীং ওই পথে না হাঁটতে দলকে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বামেরাও এখন লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে পরখ করতে চায়, শাসক দলের কর্মী বাহিনীর উপরে নেতৃত্বের সেই নিয়ন্ত্রণ আছে কি না!
শিল্পের হতশ্রী দশার প্রতিবাদে সিঙ্গুর থেকে পদযাত্রার সময়ে হলদিয়া ও বিষ্ণুপুর থেকেও দু’টি জাঠা বার হবে। সেগুলিও শালবনিতে গিয়ে মিলবে। তৃণমূল আমলে নতুন শিল্প যে আসছে না, সে কথাই বোঝানোর চেষ্টা করবেন বাম কর্মীরা। বস্তুত, বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্ত হলেও জাঠার সাফল্যই এখন বামেদের অক্সিজেন দিচ্ছে। এবং প্লেনামের আগে তার জন্য দলে স্বস্তি বোধ করছেন শ্যামলবাবু! জাঠাকে কেন্দ্র করেই প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে বাম কর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। শ্যামলবাবু জানিয়েছেন, ১৬-২২ জানুয়ারি রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা এলাকাতেই জাঠা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy