কোষাগারে টাকা নেই, অথচ সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা মেটাতে ৫০০ কোটি টাকা কোথা থেকে বরাদ্দ হল, সেই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার ওই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি এও জানতে চেয়েছে, ওই টাকা অন্য অর্থলগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের বিলি না করে, কেন কেবল সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদেরই বিলি করা হল। ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে, সারদা-কাণ্ডে গঠিত শ্যামল সেন কমিশনের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট ও সব নথি আগামী শুক্রবারের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে।
জনস্বার্থে দায়ের হওয়া একটি মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন রাজ্যের জিপি-র (গভর্নমেন্ট প্লিডার) উদ্দেশে বলে, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্যামল সেন কমিশনের অন্তর্বর্তীকালীন যে রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়েছে, তার সঙ্গে দু’বছর আগের রাজ্য বাজেটের একটি নথিও রয়েছে। সেই নথি অনুযায়ী রাজ্যের বাজেটে ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি বাজেটে সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা মেটাতে ৫০০ কোটি টাকা কোথা থেকে বরাদ্দ হল। জিপি জানান, পরিকল্পনা বহির্ভূত খাত থেকে ওই টাকা দেওয়া হয়েছে।
জনস্বার্থ মামলার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সেই সময় আদালতে জানান, সারদা গোষ্ঠী ছাড়া আরও ৭৩টি অর্থলগ্নি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। সেই সব সংস্থায় টাকা লগ্নি করেও সর্বস্বান্ত হয়েছেন বহু মানুষ। দেখে দেখে সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদেরই কেন রাজ্যের বরাদ্দ করা টাকা বিলি হয়েছে, সেই প্রশ্ন তোলেন বিকাশবাবু। তা জেনে ডিভিশন বেঞ্চও বিস্ময় প্রকাশ করে।
এ দিন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী জিপি-র কাছে জানতে চান, সারদা-র আমানতকারীদের টাকা মেটাতে শ্যামল সেন কমিশন কি মাপকাঠি ঠিক করেছিল, আদালত তা জানতে চায়।
রাজ্য সরকার শ্যামল সেন কমিশন গড়ে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও ওই কমিশন পুরো টাকা আমানতকারীদের মেটায়নি। কত আমানতকারীকে কত টাকা, কীভাবে কমিশন মিটিয়েছে, বাকি টাকা কোথায় ইত্যাদি প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করেন জনৈক সুবীর দে। এর আগের শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চ জিপি-কে নির্দেশ দেয়, কমিশনের সব নথি এ দিন পেশ করতে হবে। কিন্তু জিপি এ দিন সেই সব নথি আদালতে পেশ করতে পারেননি। জিপি এ দিন আদালতে জানান, কমিশন ২৯ হাজারের বেশি আমানতকারীকে টাকা মিটিয়েছে।
এ দিন জনস্বার্থ মামলার অন্য আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তী জানান, কমিশনের তার কাজ শেষ করে রাজ্যকে গত বছরের ৩০ অক্টোবর একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করে। সেই রিপোর্ট ও কমিশনের সব নথি আগামী শুক্রবার জিপি-কে আদালতে পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy