Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সারদা তদন্তে ইডি-র প্রশ্নের মুখে এ বার মনোরঞ্জনা, দেখতে ভিড়

দিল্লিবাসী এক মহিলাকে তিনি ২৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলে বিচারপতি শ্যামল সেন কমিশনে জানিয়েছিলেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। কমিশনের পক্ষ থেকে তিন-তিন বার ডেকে পাঠানো সত্ত্বেও ওই মহিলা হাজির হননি। সল্টলেক পুলিশও একাধিক বার ডেকে পাঠিয়েছিল তাঁকে। তিনি সাড়া দেননি তাতেও। কিন্তু এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র তলব পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সল্টলেকের দফতরে হাজির হলেন প্রাক্তন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পূর্বতন স্ত্রী মনোরঞ্জনা সিংহ।

সল্টলেকের ইডি অফিসের পথে মনোরঞ্জনা সিংহ। ছবি: শৌভিক দে।

সল্টলেকের ইডি অফিসের পথে মনোরঞ্জনা সিংহ। ছবি: শৌভিক দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৪ ০৩:২৬
Share: Save:

দিল্লিবাসী এক মহিলাকে তিনি ২৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলে বিচারপতি শ্যামল সেন কমিশনে জানিয়েছিলেন সারদা গোষ্ঠীর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। কমিশনের পক্ষ থেকে তিন-তিন বার ডেকে পাঠানো সত্ত্বেও ওই মহিলা হাজির হননি। সল্টলেক পুলিশও একাধিক বার ডেকে পাঠিয়েছিল তাঁকে। তিনি সাড়া দেননি তাতেও।

কিন্তু এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র তলব পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সল্টলেকের দফতরে হাজির হলেন প্রাক্তন এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পূর্বতন স্ত্রী মনোরঞ্জনা সিংহ।

এ দিন বেলা সওয়া ১২টায় দক্ষিণ কলকাতার একটি হোটেল থেকে মনোরঞ্জনা ভাড়া-গাড়িতে হাজির হন সল্টলেকে ইডি-র দফতরে। মাঝবয়সি মনোরঞ্জনার পরনে ছিল লাল পাড়ের সাদা দামি শাড়ি এবং লাল ব্লাউজ। গাড়ি থেকে নামার সময় রোদচশমা তোলা ছিল কপালের উপরে। তাঁকে দেখতে ইডি দফতরের নীচে ভিড় জমে যায়। তিনি দফতরে ঢোকার পরেও ভিড় কমেনি। বরং চিত্রতারকা দেখতে যেমন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভিড় জমে থাকে, তেমনই দাঁড়িয়ে থাকেন অনেকে। ঘণ্টা পাঁচেক জিজ্ঞাসাবাদের পরে পিছনের দরজা দিয়ে বার করে তাঁকে তুলে দেওয়া হয় ট্যাক্সিতে।

উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সংবাদমাধ্যমের ব্যবসায় কয়েক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন সুদীপ্ত। সেই লগ্নি খতিয়ে দেখতে গিয়ে দু’টি চুক্তিপত্র নজরে পড়ে তদন্তকারীদের। ইডি সেই সূত্রেই মনোরঞ্জনাকে নোটিস দেয়। ইডি সূত্রের খবর, সিবিআই-কে লেখা চিঠিতে সুদীপ্ত বিপর্যয়ের জন্য একাধিক ব্যক্তিকে দায়ী করেন। তার মধ্যে প্রাক্তন ওই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং মনোরঞ্জনার নামও ছিল। সেই চিঠিতে সারদাকর্তা জানান, মনোরঞ্জনা তাঁর একটি সংস্থা ‘পজিটিভ গ্রুপ’ বিক্রির জন্য সুদীপ্তের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গুয়াহাটিতে একটি বৈদ্যুতিন চ্যানেল তৈরির জন্যও মনোরঞ্জনার সঙ্গে সুদীপ্তের ৪২ কোটি টাকার চুক্তি হয়। মনোরঞ্জনার একটি কোম্পানির নামে ২৫ কোটি টাকা দেন সুদীপ্ত। তিনি কমিশনেও তা জানিয়েছিলেন।

ইডি-র দাবি, প্রাক্তন ওই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর একটি চ্যানেল হস্তান্তর নিয়ে সুদীপ্তের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। সেই বাবদ ওই প্রাক্তন মন্ত্রীকে ২৮ কোটি টাকা দেন সারদা-প্রধান। কিন্তু ওই প্রাক্তন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ, অসমের এক ব্যবসায়ীর হস্তক্ষেপে সেই চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। সুদীপ্তের দাবি, ওই প্রাক্তন মন্ত্রী অসমের ব্যবসায়ীকে কয়েকটি ‘পোস্ট ডেটেড চেক’-এ ২৮ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু সুদীপ্ত সেই টাকা ফেরত পাননি।

সিবিআইয়ের চিঠি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যের ভিত্তিতে এ দিন মনোরঞ্জনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলেছে বলে ইডি-র খবর।

জিজ্ঞাসাবাদের পরে মনোরঞ্জনা সল্টলেক পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সল্টলেকের গোয়েন্দা-প্রধান অর্ণব ঘোষ জানান, ২০১৩ সাল থেকে সল্টলেক পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একাধিক বার ডেকে পাঠালেও মনোরঞ্জনা সাড়া দেননি। এ দিন তিনি নিজেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আজ, বুধবার তিনি কমিশনারেটে এলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sarada ed monoranjana singh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE